হুগলি গ্রামীণের চণ্ডীতলা থানার সদ্যপ্রাক্তন আইসি জয়ন্ত পালকে এ বার সাসপেন্ড করল রাজ্য পুলিশ। সোমবার রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম নির্দেশিকা জারি করে জয়ন্তকে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করার কথা জানান। সোমবার থেকেই ওই পুলিশ আধিকারিকের সাসপেনশন কার্যকর হয়েছে।
এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)-র নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, জয়ন্তের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলবে। বিভাগীয় তদন্ত চলার সময় তিনি পদে থাকলে তা জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকারক হবে। সেই সব দিক মাথায় রেখে প্রাক্তন আইসিকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিয়ম অনুসারে সাসপেন্ড থাকার সময় মূল বেতনের অর্ধেক পাবেন ওই পুলিশ আধিকারিক। বদলির পরবর্তী নির্দেশিকা না-আসা পর্যন্ত হুগলি গ্রামীণ পুলিশের সদর দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতে হবে জয়ন্তকে।
বুধবার গভীর রাতে মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের পাশে গৌড়ীয় মঠের কাছে একটি নির্জন গলিতে গুলিবিদ্ধ হন জয়ন্ত। আইসির বাঁ হাতে গুলি লেগেছিল। পরে তাঁকে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জয়ন্তকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গেই থাকা এক যুবতী এবং আরও তিন জন। ঘটনাস্থলে সেই যুবতীর উপস্থিতি নিয়েই রহস্য দানা বাঁধে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, যুবতীর নাম-পরিচয় জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। যুবতী হাওড়ার সাঁকরাইল এলাকার বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে আলাপ হয়েছিল জয়ন্তের। এলাকার অনেকের দাবি, ওই পুলিশ অফিসার এবং তাঁর সঙ্গিনীকে প্রায়ই মঠের উল্টো দিকে একটি বহুতলের ফ্ল্যাটে আসতে দেখা যেত। ওই দাবির সত্যতা যাচাই করছে পুলিশ। এ ব্যাপারে তারা সরকারি ভাবে এখনও কিছু জানায়নি। অন্য দিকে, যুবতীর মায়ের দাবি, তাঁর মেয়ে জয়ন্তকে চেনেন না। যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন ওই যুবতী। আরও তিন জন ছিলেন তাঁর সঙ্গে।
আরও পড়ুন:
এই ঘটনার পরেই গত বৃহস্পতিবার জয়ন্তকে চণ্ডীতলা থানার আইসি-র দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পান ওই এলাকার সার্কল ইন্সপেক্টর (সিআই) সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, থানা থেকে বেরোলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে যাওয়াই নিয়ম। জয়ন্ত তা করেননি। কাউকে কিছু না-জানিয়েই কর্তব্যরত অবস্থায় চণ্ডীতলা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন ভিন্ জেলায়।