ধূসর: বেহাল যাত্রাপথ। যশোর রোডে। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
গাড়ির কাচ তুলে চলাফেরা করলে রক্ষে, না হলে এখন আতঙ্কের আর এক নাম ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। এক দিকে খোঁড়াখুড়ির জন্য রাস্তার উপরে স্তূপ করে রাখা মাটি। অন্য দিকে, মাটি বোঝাই গাড়ির অবাধ যাতায়াত। এই দুইয়ের জেরে কার্যত ধুলোয় ঢাকা পড়েছে জাতীয় সড়কের বিমানবন্দর থেকে বারাসত এলাকা।
একই অবস্থা যশোর রোড, বারাসত-কৃষ্ণনগর রোড, মধ্যমগ্রাম-বাদু রোড, বারাসত-ব্যারাকপুর রোড, টাকি রোডের। পরিস্থিতি এমন যে, ধুলোর চোটে বাস, অটো চলে যাওয়ার সময়ে নাকে-মুখে কাপড় চাপা দিয়েও রেহাই মিলছে না। এমনিতেই টাকি রোডের মতো রাস্তায় ঢিমেতালে কাজ চলছে দীর্ঘদিন। সে জন্য ধুলোর পুরু আস্তরণ জমছে আশপাশের দোকান ও বাড়িতে। সামনে পলিথিন ঝুলিয়েও মিলছে না রেহাই। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ট্যাঙ্কারের সাহায্যে জল ছড়ানো হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত ট্যাঙ্কার না থাকায় সর্বত্র জল ছেটানো যাচ্ছে না।
বছর চারেকের মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন সম্প্রীতি বিশ্বাস। বললেন, ‘‘ভাঙা রাস্তার জন্যই ছোট মেয়েটাকে স্কুলগাড়িতে পাঠাতে ভরসা হয় না। নিজেই দেওয়া-নেওয়া করি। কিন্তু ধুলোর জন্য হাঁপানির কষ্ট আরও বাড়ছে।’’ ওই এলাকার বেশ কিছু রাস্তার পাশ দিয়ে নর্দমা তৈরির কাজ চলছে। সে জন্যেও খুব ধুলো উড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এমন অবস্থা যে, মুখ না ঢেকে হাঁটাচলা করা যাচ্ছে না।
ধুলোর সমস্যায় সাধারণ মানুষের নাস্তানাবুদ হওয়ার পিছনে উন্নয়নের যুক্তি দিচ্ছে প্রশাসন। স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ মাটি বোঝাই গাড়ি নিয়ে। শাসন-খড়িবাড়ি, রোহন্ডা, চণ্ডীগড়, নীলগঞ্জ, আমডাঙা এলাকার কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে ট্রাকে বোঝাই করে পুলিশের সামনে দিয়েই চলে যাচ্ছে। সেই মাটি ট্রাক থেকে পড়ছে রাস্তায়। চাকায় চাকায় ঘষা লেগে তা থেকে ধুলো উড়ছে চারদিকে। কর্মসূত্রে মোটরবাইকে আমডাঙা যাতায়াত করেন প্রবীর সোম। তাঁর কথায়, ‘‘দিনে ধুলোর ঝড় আর ভোরে কুয়াশার সমস্যা। পড়ে থাকা মাটি কুয়াশায় ভিজে পিছল হয়ে যায় রাস্তা। প্রায়ই দুর্ঘটনা হচ্ছে।’’ এ প্রসঙ্গে মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের পুর এলাকায় রাস্তা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। শীঘ্রই যান্ত্রিক উপায়ে ধুলো টেনে রাস্তা পরিষ্কারের জন্য দু’টি যন্ত্র কেনা হচ্ছে।’’ যদিও রাস্তা পরিষ্কারের যন্ত্র কেনার কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই বারাসত পুরসভার। এমনটাই জানাচ্ছেন পুর প্রধান সুনীল মুখোপাধ্যায়।
কী বলছে প্রশাসন? উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশ জানিয়েছে, মাঝেমধ্যেই অভিযান চালিয়ে মাটির গাড়ি আটক করা হয়। জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘যে সব রাস্তায় ধুলো রয়েছে সেখানে জল ছড়াতে বলা হয়েছে। টাকি রোডে ধুলোর জন্য ট্যাঙ্কার দিয়ে জল ছেটানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy