প্রতীকী ছবি।
হরফের হেরফেরে হইহই হাসপাতালে!
লেখক বোঝাতে চেয়েছিলেন এক। কিন্তু লিখে ফেলেছেন আর এক!
আর হাসপাতালের সাময়িক বন্ডে (ডিসচার্জ অন রিস্ক বন্ড বা ডিআরবি) লেখা সেই শব্দ-বিভ্রাটে জোর তোলপাড় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
যাঁর লেখা নিয়ে এত কাণ্ড, সেই যুবক আমতা আমতা করছেন, ‘‘না, মানে, ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়েছি তো। তাই হয়তো ভুল লিখে ফেলেছি!’’
যা শুনে প্রবীণ চিকিৎসকেরাও বলছেন, ‘‘দীর্ঘ কর্মজীবনে ওঁর মতো জিনিয়াসও আমরা আর দু’টি দেখিনি। ধন্যি ছেলের বিদ্যেবুদ্ধি!’’
হয়েছেটা কী?
হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ১৬ এপ্রিল গ্যাসট্রোএন্টেরোলজি বিভাগে ভর্তি হন আদরি কোনাই। বীরভূমের ওই তরুণীর পিত্তনালিতে পাথর ও সিস্ট রয়েছে। এক্স-রে করাতে তাঁকে অন্য ভবনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
বিপত্তি সেখানেই। কারণ, হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী ওয়ার্ড থেকে রোগীকে বার করতে হলে সাময়িক বন্ড লিখে দিতে হয় বাড়ির লোককে। আদরির সঙ্গে এসেছেন বুদ্ধদেব কোনাই নামে এক আত্মীয়। তিনিই বন্ডে লিখে দিয়ে আদরিকে নিয়ে যান এক্স-রে বিভাগে।
কিছু ক্ষণ পরে সাময়িক বন্ডের সেই লেখা পড়ে নার্সের মূর্ছা যাওয়ার দশা! সেখানে বাংলায় গোটা গোটা করে সেই আত্মীয় লিখেছেন, তিনি ‘নিজ দায়িত্বে’ রোগিণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের (এই শব্দটুকু তিনি ইংরেজিতে লিখেছেন) জন্য তাঁকে নিয়ে যাচ্ছেন!
গোটা হাসপাতালে খোঁজ খোঁজ রব। শেষে এক্স-রে বিভাগেই রোগিণী এবং তাঁর সেই আত্মীয়ের দেখা মেলে। কোনও অঘটন অবশ্য ঘটেনি। বুদ্ধদেবের দেওয়া
ব্যাখ্যায় অবশ্য সন্তুষ্ট হননি হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ। প্রশ্ন উঠছে, ডিআরবি-র কাগজে এমন অদ্ভুত কথা লেখা হল। অথচ সঙ্গে সঙ্গে সেটা কারও চোখে পড়ল না কেন? প্রশ্ন উঠছে ওয়ার্ডের ব্যবস্থাপনার গাফিলতি নিয়েও।
এ দিকে, হাসপাতালের সেই কাগজের ছবি ইতিমধ্যে ‘ভাইরাল’ হয়ে ঘুরছে হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মী, এমনকি বিভিন্ন রোগীর আত্মীয়স্বজনের হোয়াটসঅ্যাপে। এটাকে হাসপাতালের অন্তর্বর্তী তথ্য ফাঁস বলেই ধরছেন কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সুপ্রিয় চৌধুরী জানান, এই নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই রোগিণী যাঁর অধীনে ছিলেন, গ্যাসট্রোএন্টেরোলজির সেই বিভাগীয় প্রধান অপূর্ব পাল শুধু বলছেন, ‘‘আমি স্তম্ভিত!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy