গ্রাহামস গ্রাউন্ড থেকে পার্ক হোটেল কত দূর? কালিম্পংয়ে যে কাউকে প্রশ্ন করুন, জবাব মিলবে— সাড়ে ছ’কিলোমিটার। গাড়িতে যেতে খুব বেশি হলে মিনিট চল্লিশ।
মঙ্গলবার সেই পুরো পথটা গাড়িতে পাড়িই দেওয়া গেল না। চার কিলোমিটার আসতে লাগল তিন ঘণ্টা। তার পরে আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে অনেক কালিম্পংবাসীই বুঝলেন, রাতের মধ্যে বাড়ি ফিরতে হলে বাকিটা পয়দল ছাড়া গতি নেই।
ভরা পর্যটন মরসুমের কালিম্পং মঙ্গলবার এ ভাবেই থমকে রইল বিকেল থেকে রাত অবধি। পর্যটকেরা হাঁটলেন, বিরক্ত হলেন। একে অন্যকে তাড়া দিয়ে বললেন, ‘‘পা চালা। নয়তো হোটেলে ফিরতে পারব না।’’
কিন্তু তার পরেই সারিবদ্ধ গাড়ির দিকে তাকিয়ে করুণা হলে তাঁদের। শুধু তো কালিম্পং নয়, এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কার্শিয়াং, মিরিক, দার্জিলিং থেকে এসেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। গাড়ির মধ্যে তাঁরা কয়েক ঘণ্টা ধরে ঠায় বসে। এর থেকে দূরে সরে দাঁড়িয়েছিলেন কোচবিহারের এক পুলিশকর্মী। এই অনুষ্ঠানের জন্য এসেছেন কালিম্পংয়ে। বললেন, ‘‘সাড়ে তিন হাজার গাড়ি এসেছে সব পাহাড় থেকে। মেলার মাঠেই এখন বারোশো গাড়ি আটকে আছে।’’ জানালেন, কালিম্পংয়ের গাড়ি বিশেষ না চললে কী হবে, পেট্রল পাম্পগুলোয় আর তেল নেই।
ঘড়িতে তখন বাজে প্রায় রাত আটটা।
এটা যদি ছবির এক দিক হয়, অন্য দিকটা তবে সোমবার থেকে শহরের গাড়ি চলাচলের উপরে প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ। আজ বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের দিনেও একই নিয়ন্ত্রণ চলবে। এর ফলে কালিম্পংকে কেন্দ্র করে যে পর্যটকেরা অন্যত্র ঘুরতে যেতে চান, তাঁদের মাথায় হাত। ডম্বরচকে দাঁড়িয়ে সারিবদ্ধ গাড়ির মধ্যে একটি দমকলের ইঞ্জিনকে আটকে থাকতে দেখে এমনই এক জন তাঁর সঙ্গীকে বললেন, ‘‘চল, কাল দার্জিলিংয়ের দিকে চলে যাই।’’ পাশ থেকে এক স্থানীয় বাসিন্দা ফুট কাটলেন, ‘‘আগে গাড়ি পান, তার পর তো যাবেন!’’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিনও পর্যটনের উপরে জোর দেন। বলেন, ‘‘এ বারেও দেখুন একটাও ঘর ফাঁকা নেই। পাহাড় এখন ভর্তি। মনে রাখবেন, এই পর্যটকেরাই কিন্তু আপনাদের লক্ষ্মী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy