—প্রতীকী ছবি।
বাংলায় সিপিএমের সাংগঠনিক অবস্থা আগের থেকে ভাল হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ব্লকের, বিবিধ ঘটনার উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের নেতারা। গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সিপিএমের এক দিনের পলিটব্যুরোর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক। সিপিএম সূত্রে খবর, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানিয়েছেন, সাংগঠনিক যে দৈন্যদশা ছিল, তা বেশ কিছু জায়গায় কাটানো গিয়েছে। আবার এ-ও ঠিক, বেশ কিছু জায়গায় তা অব্যাহত রয়েছে। যেখানে স্বাভাবিক সাংগঠনিক কাজ করা যাচ্ছে না সেখানে দু’টি কারণের কথা বলেছেন সিপিএম নেতারা। এক, সেই অংশের কর্মীদের মানসিকতা। দুই, পরিবেশ পরিস্থিতি।
সিপিএমের এই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে মূল আলোচ্য বিষয়, গোটা দেশের সংগঠন এবং পার্টির অভ্যন্তরে শুদ্ধিকরণ অভিযান। বছর আটেক আগে সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পার্টিকে গড়ে তোলা হবে গণ-লাইন সম্পন্ন বিপ্লবী পার্টি হিসেবে। সেই সময়েই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, একেবারে নিচু তলায় কী হচ্ছে তা কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়মিত ‘চেক আপ’ করবে। সেই শুদ্ধিকরণ অভিযানেও বাংলার নেতারা আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতির কথা শুনিয়েছেন বলে খবর।
এই শুদ্ধিকরণ অভিযানের অন্যতম প্রশ্ন ছিল, কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা কি ধর্মকর্ম মানেন? বিবাহ-সহ অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠানে কি প্রচুর খরচ করেন? তাঁরা কি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পরিত্যাগ করতে পেরেছেন? কমিউনিস্ট পার্টি করার জন্য মৌলিক যে কাজগুলি করার প্রয়োজন তা কি তাঁরা করেন? সিপিএম সূত্রে খবর, বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা স্পষ্টই জানিয়েছেন, এরিয়া কমিটি স্তর পর্যন্ত নেতৃত্ব ‘শুদ্ধিকরণ সংক্রান্ত প্রশ্নমালায়’ সততার সঙ্গে জবাব দিয়েছেন।
একটি অংশ বলেছে, তাঁরা বস্তুবাদী দর্শন মেনে চলেন। এরিয়া স্তরের বড় অংশের নেতারা বলছেন, সামাজিক ও পারিবারিক চাপের কারণে তাঁদের বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে যুক্ত থাকতে হয়। কেউ কেউ এমনও বলেছেন, হাজার-হাজার বছর ধরে চলে আসা প্রথাকে হঠাৎ করে এ ভাবে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতাদের বক্তব্য, একটা সময়ে তথ্য ও মনোভাব গোপন করার মানসিকতা ছিল। এখন সেটা অনেকটাই কাটানো গিয়েছে। এটাকে নিচুতলার নেতৃত্বের ‘সততা’ হিসেবেই দেখছেন সিপিএম নেতৃত্ব।
কিন্তু বাংলা থেকে নির্বাচিত সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক সদস্যই ঘরোয়া আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন, দলের অনেক শহুরে নেতাদের বৈভব প্রদর্শনের মানসিকতা দেখা যাচ্ছে। তার মধ্যে রাজ্য কমিটির নেতারাও রয়েছেন।
রবিবার শেষ হবে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। তবে বৈঠকের সময় কিছুটা কমানো হয়েছে। বেলা ১২টার মধ্যেই বৈঠক শেষ করে দেবেন সীতারাম ইয়েচুরিরা। তার পর দিল্লির গোল মার্কেটে প্যালেস্তাইনে ইজরায়েলি হানার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে সিপিএম। সেখানে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সদস্য। সেই কর্মসূচি শেষ করে বিভিন্ন রাজ্যের নেতারা তাঁদের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হবেন।
তবে সূত্রের খবর, আলোচ্য সূচিতে না থাকলেও লোকসভা ভোটে রাজ্যে রাজ্যে আসন সমঝোতার বিষয়ে দল কী ভাবে চলবে সে ব্যাপারে পলিটব্যুরোর নেতাদের সঙ্গে মৌখিক আলোচনা সেরে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের নেতারা। আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর সিপিএমের রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন বসবে হাওড়ায়। সিপিএম সূত্রে খবর, সেখানেই লোকসভার রণকৌশল চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy