Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

পিংলা কাণ্ডে শিশুমৃত্যু রাজ্যের লজ্জা: কমিশন

পিংলায় বিস্ফোরণে আট শিশুশ্রমিকের মৃত্যু রাজ্যের লজ্জা, বললেন রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান অশোকেন্দু সেনগুপ্ত। শিশুশ্রম, শিশু পাচারে মুর্শিদাবাদ রাজ্যে শীর্ষে, বললেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। কিন্তু শিশুশ্রম রোখার বিধিনিষেধ কেন কার্যকর হচ্ছে না, সে বিষয়ে কিছুই বললেন না তাঁরা। শ্রম, সমাজকল্যাণ বা পুলিশের আধিকারিকদের গাফিলতির কথা না তুলে বরং পরিবারকে শাস্তি দেওয়ার প্রসঙ্গ তুললেন জেলাশাসক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
অরঙ্গাবাদ শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৫ ০৩:২৫
Share: Save:

পিংলায় বিস্ফোরণে আট শিশুশ্রমিকের মৃত্যু রাজ্যের লজ্জা, বললেন রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান অশোকেন্দু সেনগুপ্ত। শিশুশ্রম, শিশু পাচারে মুর্শিদাবাদ রাজ্যে শীর্ষে, বললেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। কিন্তু শিশুশ্রম রোখার বিধিনিষেধ কেন কার্যকর হচ্ছে না, সে বিষয়ে কিছুই বললেন না তাঁরা। শ্রম, সমাজকল্যাণ বা পুলিশের আধিকারিকদের গাফিলতির কথা না তুলে বরং পরিবারকে শাস্তি দেওয়ার প্রসঙ্গ তুললেন জেলাশাসক।

পিংলার বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত নতুন চাঁদরার ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই শিশু। বাড়তি মজুরির লোভে তারা বাজি তৈরির কাজে গিয়েছিল। গত ৬মে রাতে পিংলায় ওই বাজি বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনাকে সামনে রেখে শনিবার সুতির নতুন চাঁদরা থেকে মাইল দেড়েক দূরে অরঙ্গাবাদ ডিএন কলেজ মাঠে জেলা প্রশাসন এক ‘সচেতনতা শিবির’ করে। নতুন চাঁদরা গ্রামের একজনও অবশ্য সেই শিবিরে ছিলেন না। অরঙ্গাবাদের স্কুলপড়ুয়া, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আনা হয় সভায়। প্রচন্ড গরমে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকায় নাজেহাল অবস্থা হয় তাঁদের।

নির্দিষ্ট সময়ের সওয়া ঘন্টা পরে পৌঁছন চেয়ারম্যান অশোকেন্দুবাবু। তারও পরে জেলাশাসক আসেন। অশোকেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমরা সুতির নতুন চাঁদরার শিশুদের সুরক্ষা দিতে পারিনি। ব্যর্থতার দায় আমাদের।’’ জেলাশাসক অবশ্য শিশুশ্রমের জন্য প্রধানত তাদের পরিবারকেই দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘‘অন্য কোনও দেশে এমন হলে অনেক মা-বাবাকেই জেলে থাকতে হত।’’ সন্তানদের স্কুলে না পাঠালে মা বাবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হতে পারে, বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের পরে অশোকেন্দুবাবু নতুন চাঁদরায় মৃত জহিরুদ্দিনের বাড়ি যান। কোনও সরকারি কর্তা অবশ্য তাঁর সঙ্গে গ্রামে যাননি।

এ ভাবে শিবির করে কী লাভ, সে প্রশ্ন তোলেন শ্রোতারাই। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী রেবেকা পারভিন বলেন, ‘‘এভাবে দু’টো ভাষণ দিয়ে শিশুশ্রম বন্ধ হবে না। গ্রামে যেতে হবে।’’ গলদঘর্ম এক শিক্ষক বলেন, ‘‘সুতিতে যে শিশুশ্রম আছে কে জানে না? যে কোনও বিড়ি কারখানায় গেলেই তো দেখবেন শিশুরা কীভাবে কাজ করছে।’’ এ দিন সভামঞ্চে দাঁড়িয়েই মোক্ষম প্রশ্নটি তোলেন তাঞ্জিলা আখতার নামে এক ছাত্রী। তার অভিযোগ, ‘‘সুতিতে অবৈধ পাথর খাদান ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। আবার তা গজিয়ে উঠেছে। সেখানে শিশু শ্রমিকরা কাজ করছে। এই ক্রাশারগুলো বন্ধ করুন।’’ তার কথার কোনও উত্তর না দিয়েই সভা ছাড়লেন জেলাশাসক-সহ সরকারি কর্তারা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE