Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Panchayat Polls 2023

পঞ্চায়েতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চেয়ে রিপোর্ট চাইল রাজ্য

জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিকদের কাছে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইল রাজ্য সরকার, সুনির্দিষ্ট রিপোর্ট আকারে। এর ফলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।

Representational image of Panchayat Polls.

পঞ্চায়েতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইল রাজ্য সরকার। প্রতীকী ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ০৬:৫৬
Share: Save:

দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত ভোট। ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা না হলেও, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক স্তরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, এই অবস্থায় জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিকদের কাছে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইল রাজ্য সরকার, সুনির্দিষ্ট রিপোর্ট আকারে। আর তা নিয়েই কৌতূহল তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরে। আধিকারিকদের অনেকের যুক্তি, পঞ্চায়েত-প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক পরিচয় জানার প্রয়োজন রাজনৈতিক নেতৃত্বের এবং সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের কাছেই সেই তথ্য থাকার কথা। তাই সেই দায়িত্ব প্রশাসনিক স্তরে কেন সামলাতে হবে, তা নিয়েই সংশ্লিষ্ট মহল প্রশ্ন তুলছে। যদিও প্রশাসনের শীর্ষ মহলের ব্যাখ্যা, এই পদক্ষেপ প্রশাসনিক প্রয়োজনেই।

পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “পঞ্চায়েতে প্রায় ৬৫ হাজার সদস্য রয়েছেন। কত জনের তথ্য থাকে? তথ্য রাখার স্বার্থেই জানতে চাওয়া হয়েছে হয়তো। আবার কে কেমন কাজ করছেন, তা-ও তো জানা দরকার।”

সম্প্রতি জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিকদের কাছে একটি বার্তা পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। তাতে বলা হয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে যে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এখন রয়েছেন, তাঁরা কোন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি (পার্টি অ্যাফিলিয়েশন), তা জানাতে হবে দফতরকে।

পৃথক ভাবে একটি বয়ানও পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। তাতে বলা হয়েছে, জেলা পরিষদের প্রথম বৈঠকে যে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তা জানাতে হবে। একই সঙ্গে অন্যান্য নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ১৪ মার্চ পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, দিতে হবে সেই তথ্যও। ওই দিন পর্যন্ত সভাধিপতিদের রাজনৈতিক পরিচয়ও জানাতে বলা হয়েছে রিপোর্টে। একই পদ্ধতিতে, মহকুমা ধরে ধরে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং অন্যান্য নির্বাচিত প্রতিনিধি সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে ধরে প্রধান এবং অন্য নির্বাচিত সদস্যরা কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, তা-ও জানতে চেয়েছে পঞ্চায়েত দফতর।

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, পদ্ধতি অনুযায়ী, পঞ্চায়েত ভোটে কোনও রাজনৈতিক দলের অনুমোদন থাকলে তবেই টিকিট পান প্রার্থী। তার ভিত্তিতেই ভোটে লড়াই করেন তাঁরা। যে দল জয়লাভ করে, তারা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে থেকে বিভিন্ন স্তরের পদাধিকারী স্থির করে। ফলে কারা ভোটে লড়েছেন এবং জিতেছেন, কারা সদস্য, প্রধান, সভাপতি, সভাধিপতি বা অন্যান্য পদাধিকারী হিসাবে কাজ করছেন, তা অজানা থাকে না রাজনৈতিক দলের কাছে। তার পরেও এই তথ্য চাওয়া ‘খুবই বিস্ময়ের’। যদিও প্রদীপের দাবি, “প্রশাসনিক ভাবে জানা যেতেই পারে।”

পর্যবেক্ষকদের একাংশের অনুমান, এর পিছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। প্রথম, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে কোথায় কতগুলি আসন শাসক দলের হাতে রয়েছে, কোনগুলি বিরোধীদের হাতে আছে, তা এক ঝলকে বোঝার চেষ্টা করতে পারে রাজ্য। দুই, কোন দলের পঞ্চায়েতে কেমন কাজ হচ্ছে, আরও কী করা প্রয়োজন তা বোঝা যেতে পারে। তিন, গত পাঁচ বছরের মধ্যে কোনও পদাধিকারী দল বদল করেছেন কি না, এই পদ্ধতিতে তা-ও বোঝা সম্ভব। কারণ, প্রশাসনিক কর্তারা জানাচ্ছেন, অনেক সময়ে দল বদল করলেও পদাধিকারী লিখিত ভাবে সেই তথ্য জানান না। ফলে সমস্যা বাড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Polls 2023 West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE