খেলার মাঠে তখন টান টান উত্তেজনা। সাজঘরে বসে থাকার মতো যেন ধৈর্য ছিল না বিরাট কোহলির। মাঠে নামবেন বলে অস্থির হয়ে পড়েছিলেন তিনি। রবীন্দ্র জাডেজার শট বাউন্ডারির বাইরে চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী কোচ অভিষেক নায়ার এবং প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরকে জড়িয়ে ধরেন বিরাট। তার পর ছুটে চলে যান জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটির কাছে। তিনি, তাঁর জীবনসঙ্গিনী অনুষ্কা শর্মা। স্ত্রীর সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে সিঁড়িতে লাফ দিয়ে ছুটে যান অনুষ্কার কাছে। বিরাটকে দেখে অনুষ্কাও তাড়াতাড়ি সিঁড়ি দিয়ে নেমে পড়েন। ম্যাচ জেতার আনন্দে বিরাটকে জড়িয়ে ধরেন তিনি।
স্বামীর পাশাপাশি এ যেন তাঁরও স্বপ্নপূরণ। তার পর স্ত্রীর কোমরে হাত রেখে তাঁকে জড়িয়ে সিঁড়ি থেকে নেমে মাঠে নেমে পড়েন বিরাট। রবিবার দুবাই স্টেডিয়ামে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে জেতার পর এই দৃশ্যই ধরা পড়ল ছবিশিকারিদের ক্যামেরায়। সেই ভিডিয়োই ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমের পাতায় (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
‘পিঙ্কভিলা’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ইনস্টাগ্রামের পাতায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে, জাডেজার শটে ভারত ম্যাচ জেতার পর আনন্দে অনুষ্কার কাছে ছুটে চলে যান বিরাট। বিরাটকে দৌড়ে আসতে দেখে গ্যালারির সিঁড়ি থেকে দৌড়ে নেমে পড়েন অনুষ্কাও। দু’জনেরই চোখেমুখে হাসি লেগে ছিল। সিঁড়িতে দাঁড়িয়েই একে অপরকে বহু ক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকেন বিরাট এবং অনুষ্কা। তার পর একে অপরকে জড়িয়ে ধরেই সিঁড়ি থেকে নেমে মাঠের দিকে এগিয়ে যান তাঁরা।
শুধু তা-ই নয়, ট্রফি জেতার পর পদক এবং জ্যাকেট পেয়ে আবার অনুষ্কার কাছে যান বিরাট। স্বামীর এমন শিশুসুলভ আচরণ দেখে বিরাটের মাথায় হাত বুলিয়ে, আদর করে চুলে বিলি কেটে দেন অভিনেত্রী। ডাগ আউটের পাশে অনুষ্কার সঙ্গে হাসিমুখে গল্পও করেন বিরাট। ২০২৩ সালে এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালের হারের পর কোহলিকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন অনুষ্কা। এ বার কোহলির সাফল্য সমান ভাগে ভাগ করে নিলেন তিনি।

বিরাট কোহলির মাথায় আদর করছেন অনুষ্কা শর্মা। -ছবি: সংগৃহীত।
নিউ জ়িল্যান্ডের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলানোর পর মাঠে নেমে রোহিত শর্মার সঙ্গে উল্লাস শুরু করেন বিরাট। দু’টি স্টাম্প হাতে তুলে নেন রোহিত এবং কোহলি। তার পরেই শুরু হয় তাঁদের নাচ। উইকেট দু’টি কাজে লাগিয়ে ডান্ডিয়া নাচতে শুরু করেন তাঁরা।
কেরিয়ারের শেষ দিকে পৌঁছেছেন কোহলি। আর কত দিন ভারতের জার্সিতে তাঁকে দেখা যাবে তা নিয়ে জল্পনা চলছে। এই পরিস্থিতিতে দলের তরুণ প্রজন্মকে দেখে খুশি কোহলি। দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিন্ত তিনি।

উইকেট হাতে ডান্ডিয়া খেলছেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। ছবি: এক্স।
কোহলি বলেন, “যখন আপনি ছাড়তে চান, আপনি চেষ্টা করেন দলকে ভাল জায়গায় নিয়ে গিয়ে ছাড়তে। দলের ভবিষ্যৎ ভাল হাতে রয়েছে। আমাদের যা দল তাতে আগামী ৮ থেকে ১০ বছর ক্রিকেট শাসন করার জন্য আমরা তৈরি।” নিউ জ়িল্যান্ডের মতো কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জেতা সহজ ছিল না। কোহলি জানিয়েছেন, নিউ জ়িল্যান্ডই তাঁদের সবচেয়ে বেশি সমস্যা ফেলেছে। কিন্তু সেই সমস্যা কাটিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তাঁরা। দলের কারও নাম আলাদা করে নিতে চাননি কোহলি। বোলার ও ব্যাটারদের সমান কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি।