Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Lok Sabha Elections 2019

নির্বাচন কমিশনে বৈঠক বিজেপির, পুলিশ-প্রশাসনের অন্তত ৩০ কর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন সংক্রান্ত এই সব নানা অভিযোগ পেয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের প্রতিক্রিয়া কী? বিজেপি নেতারা এ প্রশ্নের বিশদ জবাব দিতে চাননি।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৯:৫৬
Share: Save:

বাংলায় সুষ্ঠু ভাবে ভোট করানোর দাবিতে আঁটঘাট বাঁধতে শুরু করল বিজেপিলোকসভা নির্বাচনের মাস চারেক আগেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বৈঠক করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির তিন নেতা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঠিক কী কী ধরনের অনিয়মের আশঙ্কা তাঁরা করছেন, বিজেপি নেতারা সে কথা বিশদে জানিয়ে এসেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে। পশ্চিমবঙ্গে ভোট এ বার ‘অন্য রকম’ ভাবে হবে— কমিশনের তরফে বিজেপি-কে এই রকম আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলেও খবর।

পশ্চিমবঙ্গের তিন বিজেপি নেতা সোমবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনে গিয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা ছাড়াও আরও তিন উপ-নির্বাচন কমিশনার বৈঠকে ছিলেন। বিজেপির তরফে ছিলেন মুকুল রায়, সায়ন্তন বসু এবং প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক কালের সবক’টি নির্বাচনে পুলিশ-প্রশাসনকে বেনজির ভাবে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে শাসক দল— এমনই অভিযোগ বিজেপির তরফ থেকে তোলা হয়েছে বলে খবর। ‘‘ভোটের সময়ে প্রশাসন এবং পুলিশের পদস্থ কর্তারা কী ভাবে তৃণমূলের হয়ে কাজ করেন, কী ভাবে ভোটের আগেই পোস্টাল ব্যালট লুঠ হয়ে যায়, কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হলেও, কী ভাবে বাহিনীকে মোতায়েন করা হয় না বা স্পর্শকাতর এলাকা থেকে দূরে রাখা হয়, কী ভাবে বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ কায়েম করে রাখা হয়— সব কিছু আমরা বিশদে জানিয়েছি নির্বাচন কমিশনকে।’’ বললেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু।

আরও পড়ুন: এ বার কৃষক মৃত্যুতে ২ লাখ, চাষেও সাহায্য, নতুন প্রকল্প ঘোষণা মমতার​

প্রশাসন এবং পুলিশের কোন কর্তারা তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন, তার একটি তালিকা আগেই বিজেপি জমা দিয়েছিল নির্বাচন কমিশনে। সোমবার ফের সেই সব কর্তাদের বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার তো বটেই, বেশ কয়েকজন মহকুমাশাসক ও এসডিপিও, এমনকি, বেশ কয়েকটি থানার আইসি বা ওসির নামও সে তালিকায় রয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওই সব সরকারি কর্তাদের কোনও রকম ভাবে যুক্ত থাকতে দিলে চলবে না বলে বিজেপি এ দিন দাবি জানিয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের ওই কর্তাদের নামের তালিকা নতুন করে তৈরি করে ফের জমা দেওয়া হচ্ছে বলেও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর কথায়, ‘‘বিষ্ণুপুরের এসডিপিও খোলাখুলি তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের জেলা সভাপতিকে তিনি হুমকি দেন যে, তাঁর বাড়িতে হামলা হতে পারে। যে দিন ওই পুলিশ অফিসার এই হুমকি দেন, তার পরের দিনই আমাদের জেলা সভাপতির বাড়ি আক্রান্ত হয়। এ রকম অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি।’’

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন সংক্রান্ত এই সব নানা অভিযোগ পেয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের প্রতিক্রিয়া কী? বিজেপি নেতারা এ প্রশ্নের বিশদ জবাব দিতে চাননি। তবে সায়ন্তন বসু বলেছেন, ‘‘মুখ্য নির্বাচন কমিশনার আমাদের সব অভিযোগের কথাই মন দিয়ে শুনেছেন। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন— চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, বাংলায় ভোট এ বার অন্য রকম ভাবে হবে।’’

আরও পড়ুন: মালদহ থেকে সরে যাচ্ছে জাল নোটের করিডর, গোয়েন্দাদের নজর নতুন রুটে​

অন্য রকম ভাবে ভোট হওয়ার অর্থ কী? বিজেপি নেতারা বলছেন— বাংলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয় না, এ বার অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে, অন্য রকম মানে সেটাই। বিজেপি নেতাদের কথায়— ঠিক কী কী অভিনব উপায়ে বাংলায় ভোট লুঠের ব্যবস্থা হয়, তা বিশদে কমিশনকে জানানো হয়েছে। সে সব ‘অনিয়ম’ যাতে এ বারের ভোটে কিছুতেই ঘটতে না পারে, নির্বাচন কমিশন তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE