ফেল রাজ্য বিজেপি! সময়ে সন্তোষের দেওয়া ‘হোমওয়ার্ক’ শেষ করায় ব্যর্থ টিম সুকান্ত গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
জানুয়ারি মাস শেষ। হোমওয়ার্ক শেষ করতে পারলেন না রাজ্য বিজেপি-র নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল, জানুয়ারির ১০ তারিখের মধ্যে সব জেলা কমিটি গঠন এবং ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব মণ্ডলের সভাপতির নাম ঘোষণা করে ফেলতে হবে। কিন্তু বছরের প্রথম হোমওয়ার্কই সময়ে শেষ করতে না পারার গ্লানি রয়ে গেল কলকাতার মুরলীধর সেন লেনের কর্তাদের। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় দলের মধ্যে বিদ্রোহের কারণে যেমন এখনও সম্পূর্ণ হয়নি জেলা কমিটি গঠনের কাজ, তেমনই অর্ধেকের বেশি মণ্ডলের সভাপতি বাছাই পর্বও শেষ হয়নি বলে খবর।
কিন্তু কেন এমন হল? এ নিয়ে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘এটা একান্ত ভাবেই আমাদের সাংগঠনিক বিষয়। কাজ চলছে। যথা সময়েই সংবাদমাধ্যমকে জানানো হবে।’’ সংসদে অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ায় কথা বলতে পারেননি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
ডিসেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহে বিজেপি-র নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা হয়। বেশ কয়েকজন পুরনো নেতার নাম বাদ যায় সেখানে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় বিদ্রোহ পর্ব। ২২ ডিসেম্বর কমিটি ঘোষণার পরেই ২৭ ডিসেম্বর কলকাতায় আসেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ। জাতীয় গ্রন্থাগারে রাজ্য নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে তিনি নির্দেশ দেন, ৯ জানুয়ারির আগে জেলা কমিটি তৈরি করে ফেলতে হবে। আর জানুয়ারি মাসের মধ্যে তৈরি করতে হবে মণ্ডল কমিটি। তবে খেয়াল রাখতে হবে, কোনও মণ্ডল সভাপতির বয়স যেন ৪৫ বছরের বেশি না হয়।
বিজেপি সূত্রে খবর, এই বয়সের কড়াকড়িতেই কিছুটা সমস্যায় রাজ্য নেতারা। রাজ্য কমিটি ও কিছু জেলা কমিটি থেকে পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুনদের সংযোজনের ফলে দলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এর ফলে বেশি ক্ষোভের জায়গা বনগাঁ, কলকাতা উত্তর শহরতলি-সহ কয়েকটি জেলার কমিটি ঘোষণা স্থগিত রয়েছে। চার পুরসভার নির্বাচন পর্ব চলায় বিজেপি-র সংশ্লিষ্ট চার সাংগঠনিক জেলা শিলিগুড়ি, আসানসোল, হুগলি ও বিধাননগরের কমিটি ঘোষণাও বাকি রয়েছে।
তবে সবচেয়ে বড় চিন্তা মণ্ডল সভাপতি বাছাই নিয়ে। সন্তোষের নির্দেশ অনুযায়ী কোনও মণ্ডল সভাপতির বয়স ৪৫ বছরের বেশি হতে পারবে না। এটা করতে গেলেই নতুন কাউকে সভাপতি করতে হবে। বাদ দিতে হবে এমন অনেক পুরনো নেতাকে, যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে এই পদের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। সেই সব মণ্ডল সভাপতি পদের দাবিদারদের উপেক্ষা করাটাও এখন সহজ হচ্ছে না। কারণ, ইতিমধ্যেই সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ছাড়াও সায়ন্তন বসু, রীতেশ তিওয়ারি, জয়প্রকাশ মজুমদারদের মতো নেতারা রাজ্যের সর্বত্র বিদ্রোহীদের এককাট্টা করার উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই পরিস্থিতিতে জেলার নীচে মণ্ডল স্তরেও যাতে বিদ্রোহের আঁচ না পড়ে তার জন্য রাজ্য বিজেপি সতর্ক হয়ে পথ চলতে চাইছে বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে। হাজারের বেশি মণ্ডল থাকলেও এখনও পর্যন্ত শ’তিনেকের সভাপতি বাছাই শেষ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এ নিয়ে রাজ্য স্তরের কোনও নেতাই মুখ খুলতে চাইছেন না।
সন্তোষের দেওয়া সময় পার হয়ে গেলেও বিজেপি এখনও কোনও মোর্চার রাজ্য কমিটিও ঘোষণা করতে পারেনি। সবচেয়ে কঠিন যুব মোর্চার কমিটি তৈরি। কারণ, সন্তোষের নির্দেশ অনুয়ায়ী, যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্যদের বয়স হতে হবে ৩২ বছরের মধ্যে। আর মণ্ডল কমিটিতে সেই বয়স হতে হবে সর্বোচ্চ ৩০ বছর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy