ফাইল চিত্র।
রাজ্যের অভিযোগ, কেন্দ্র বঞ্চনা করছে। আর বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্য তাদের বঞ্চনা করছে। এই দু’রকম বঞ্চনা নিয়ে টানাপড়েনে মঙ্গলবার সরগরম রইল বিধানসভা।
অধিবেশনে এ দিন সিপিএম বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও স্বনিযুক্তি বিভাগের মন্ত্রী সাধন পান্ডেকে প্রশ্ন করেন, স্বামী বিবেকানন্দ স্বনির্ভর কর্মসংস্থান প্রকল্পে বেকার যুবক-যুবতীদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধায়কের ভূমিকা আছে কি? মন্ত্রী জানান, ব্লক স্তরে প্রকল্প রূপায়ণে যে কমিটি আছে, বিধায়কের তাঁর সদস্য হওয়ার কথা। তখন সুজিতবাবু মন্ত্রীকে বলেন, ‘‘আমি বিধায়ক ও আমার কেন্দ্রে বড়জোড়া ও গঙ্গাজলঘাঁটি— দু’টি ব্লক আছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই প্রকল্পের বৈঠকে ডাক পাইনি।’’ এই অভিযোগ শুনেই সাধনবাবু জানান, তিনি এই কাণ্ডের তদন্ত করবেন। পরে সিপিএম বিধায়ক তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বহু কমিটিতে বিরোধী বিধায়কদের রাখা হয় না। সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের বিধায়কদের ডাকা হয় না। এর প্রতিবাদ করছি। তবে মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে নীতিগত ভাবে বিরোধী বিধায়কদের অধিকার স্বীকার করে নেন।’’
তৃণমূল বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা এ দিন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে প্রশ্ন করেন, সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এ বছর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে কত টাকা অনুদান পেয়েছে? অমিতবাবু জানান, রাজ্য বন্যার্তদের জন্য ৬০৬৮ কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে চেয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র এক টাকাও দেয়নি। অমিতবাবু আরও বলেন, ‘‘কেন্দ্রের এই বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্য নিজের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর
থেকে ৭৮২.৬০ কোটি টাকা দিয়েছে।’’ তখন অশোকবাবু বলেন, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের এই বঞ্চনাকে বামেরাও অন্যায় বলে মনে করছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, রাজ্য যে টাকা বন্যার্তদের জন্য দিয়েছে, তা বিরোধীদের হাতে থাকা কোন কোন পুরসভা পেয়েছে। অশোকবাবুর বক্তব্য, রাজ্য সরকার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছে, সেই অভিযোগই উঠছে তাদের
বিরুদ্ধে। তারা নিজেদের পছন্দমতো পুরসভা এবং পঞ্চায়েতকে টাকা দিচ্ছে। বাকিদের দিচ্ছে না। বস্তুত, শিলিগুড়ির মেয়র অশোকবাবু তাঁর পুরসভার প্রতি রাজ্যের বঞ্চনা নিয়ে প্রায়ই সরব হন। এ দিন তাঁর প্রশ্নেরজবাবে অমিতবাবু জানান, ২৫৪টি ব্লক, ৫১টি পুরসভা, ১৬৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে তাঁরা টাকা দিয়েছেন। কিন্তু সেগুলির মধ্যে কোনগুলি বিরোধীদের হাতে, তা তিনি বলেননি। সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য পরে বলেন, ‘‘অশোকবাবুর প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে অন্য কিছু কথা অর্থমন্ত্রী বলেছেন। স্পিকারকে আবেদন করছি, ওই সব অপ্রাসঙ্গিক কথা বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy