Advertisement
১৫ অক্টোবর ২০২৪
Mamata Banerjee

Rampurhat Clash: ক্ষত না শুকোলেও প্রলেপ পড়েছে, বগটুইয়ের মিহিলালেরা এখন আস্থা রাখছেন মমতার আশ্বাসে

হস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে পৌঁছে সেই স্বজনহারা মানুষগুলোর দুঃখটাকেই যেন ছুঁতে চাইলেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজেদের কথা বলতে গিয়ে ভেঙে পড়েন বগটুই গ্রামের স্বজনহারা এক বাসিন্দা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজেদের কথা বলতে গিয়ে ভেঙে পড়েন বগটুই গ্রামের স্বজনহারা এক বাসিন্দা। তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

দয়াল সেনগুপ্ত এবং তন্ময় দত্ত
বগটুই (রামপুরহাট) শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২২ ০৫:২৫
Share: Save:

ক’দিন আগেও যে বাড়িগুলি ছিল প্রাণ-চঞ্চল, আজ তা-ই যেন ধ্বংসস্তূপ। পুড়ে কালো হয়ে গিয়েছে গোটা বাড়ি। সেখানেই পুড়িয়ে মারা হয়েছে পরিজনেদের। ঘটনার তিন দিন পরে তাই গ্রামে ফিরে চোখের জল বাঁধ মানছিল না মিহিলাল শেখ, বানিরুল সেখ, মফিজা বিবিদের। চোখের জলের সঙ্গে মিশেছে আক্ষেপ আর ক্রোধ। আক্ষেপ, চোখের সামনে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব দেখেও প্রাণভয়ে কিছু করতে পারেননি। বাঁচাতে পারেননি প্রিয়জনেদের।

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে পৌঁছে সেই স্বজনহারা মানুষগুলোর দুঃখটাকেই যেন ছুঁতে চাইলেন। আশ্বাস দিলেন, পাশে থাকার, দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার। জানালেন, নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। পরিবারের এক জনকে চাকরি। প্রথম বছরে দশ হাজার টাকার বেতন। পরের বছর থেকে পাকা চাকরি। পুড়ে যাওয়া প্রত্যেক বাড়ি তৈরি করতে দু’লক্ষ টাকার চেকও তুলে দিলেন মিহিলালদের হাতে।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে বগটুইয়ের স্বজনহারারা। ‘‘ক্ষত না-শোকালেও প্রলেপ পড়েছে’’— বলছেন মিহিলাল শেখ। যিনি সোমবার রাতের ঘটনায় নিজের স্ত্রী শেলি বিবি এবং সাত বছরের মেয়ে তুলিকে হারিয়েছেন। মমতা চলে যাওয়ার পরে মিহিলাল বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আস্থা রাখছি। উনি নিশ্চয়ই সুবিচার করবেন।’’ কান্নাকাটি থামিয়ে কিছুটা শান্ত বানিরুল শেখও। তিনি হারিয়েছেন তাঁর স্ত্রী এবং মেয়ে-জামাইকে। মাদ্রাসার শিক্ষক সেই জামাই, সাজিদুর রহমান শবে বরাতের ছুটি পেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে এসেছিলেন। সোমবার রাতের হামলায় প্রাণ হারাতে হয়েছে ওই দম্পতিকেও। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা শুনে বানিরুলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার তো সব গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, দোষীরা শাস্তি পাবে, এটুকুই ভরসা।’’ যাঁর বাড়ি থেকে সাতটি দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেই সোনা শেখের মেয়ে মফিজা বিবির কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে আমি সন্তুষ্ট।’’

তবে, কিছুটা অন্য সুর সাজিনা খাতুনের। অন্তঃসত্ত্বা এই যুবতীর ঠাকুরমা মারা গিয়েছেন সে রাতের হামলায়। তাঁর মা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। সাজিনার শ্বশুরবাড়ি পাশের গ্রামেই। সাজিনা বললেন, ‘‘চাকরি আর টাকা নিয়ে কী করব? কয়েক লক্ষ টাকার সম্পত্তি পুড়েছে। এত জন মারা গিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী কি সেটা ফিরিয়ে দিতে পারবেন? আমরা দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

মুখ্যমন্ত্রী গ্রাম থেকে চলে যাওয়ার কিছু পরেই অবশ্য মিহিলাল, সাজিনাদের গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Rampurhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE