কর্মসূচির সূচনা করল একটি বেসরকারি হাসপাতাল গোষ্ঠী। —প্রতীকী চিত্র।
হুটার বাজিয়ে যত দ্রুত সম্ভব সঙ্কটজনক রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়াই তাঁদের একমাত্র দায়িত্ব নয়। বরং, সেই রোগীর উপসর্গ পর্যবেক্ষণ করে তাঁকে প্রাথমিক শুশ্রূষা দেওয়ার পাশাপাশি, সঠিক চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার কাজও ভাল ভাবে করতে পারেন এক জন অ্যাম্বুল্যান্স চালক। এর জন্য তাঁদের প্রয়োজন ঠিকঠাক প্রশিক্ষণ। বুধবার শহর ও শহরতলিতে সেই কর্মসূচির সূচনা করল একটি বেসরকারি হাসপাতাল গোষ্ঠী।
মণিপাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এক জন রোগীর গোটা চিকিৎসা প্রক্রিয়ার মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা শুধু দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে নারাজ তাঁরা। বরং কিছু প্রশিক্ষণ থাকলে এক জন অ্যাম্বুল্যান্স চালকের তৎপরতায় অনেক রোগীর প্রাণ বাঁচতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই লক্ষ্যে তাই দেশ জুড়ে ‘হেল্থ ড্রাইভ’ প্রশিক্ষণ শুরু করেছে ওই হাসপাতাল গোষ্ঠী। তারই অংশ হিসাবে এ দিন এক অনুষ্ঠানে শহর ও শহরতলি থেকে আসা প্রায় ১০০ জন অ্যাম্বুল্যান্স চালককে নিয়ে শুরু হল প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। সেখানে উপস্থিত চিকিৎসক ইন্দ্রনীল দাস বলেন, ‘‘রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছনোর পাশাপাশি এক জন অ্যাম্বুল্যান্স চালক আর কী কী করতে পারেন, সেটা তাঁদেরও জানা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ।’’ আগামী দিনে রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও এই কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
এই প্রশিক্ষণে শেখানো হবে ‘বেসিক লাইফ সাপোর্ট’-এর দিকগুলি। সিপিআর দেওয়ার পদ্ধতি থেকে শুরু করে পথ দুর্ঘটনায় আহতের রক্তক্ষরণ কী ভাবে বন্ধ করা যাবে, কোনও হাড় ভেঙে গেলে কী ভাবে তাঁকে নিয়ে আসতে হবে— সবই শেখানো হবে ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে। কোন উপসর্গ দেখে স্ট্রোকে আক্রান্ত বলে বোঝা যাবে, তা-ও দিন সাত-দশের প্রশিক্ষণে শিখতে পারবেন অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা। চিকিৎসকেরা আরও জানাচ্ছেন, দেশে প্রতি দু’জন হৃদ্রোগে আক্রান্তের এক জন হাসপাতালে আসেন ৪০০ মিনিটেরও বেশি সময় পরে। তত ক্ষণে প্রাণসংশয়ের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর নেপথ্যে অনেক সময়েই দেখা যায়, যেখানে হৃদ্রোগের চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে, এমন হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে অন্যত্র ঘুরে অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। তাই কোন সমস্যায় নিকটবর্তী কোন হাসপাতালে সময়ে পৌঁছলে সঠিক চিকিৎসা মিলতে পারে, সেটাও শেখানো হবে চালকদের।
ওই হাসপাতাল গোষ্ঠীর অস্থি-শল্য বিভাগের অধিকর্তা বিকাশ কপূর বলেন, ‘‘হৃদ্রোগ, স্ট্রোক থেকে শুরু করে পথ দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও চিকিৎসা শুরুর একটি গোল্ডেন আওয়ার রয়েছে। এই প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে সেই সমস্ত বিষয়ই স্পষ্ট করা হবে চালকদের সামনে।’’ অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও তাঁদের পরিবারের জন্য স্বাস্থ্য বিমা, সন্তানদের কেরিয়ার কাউন্সেলিংয়ের মতো ব্যবস্থা করার কথাও জানিয়েছেন আয়োজকেরা। এই ধরনের কর্মসূচিতে খুশি ধীরজ ঝা, বিশ্বজিৎ ঘোষ-সহ অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরা। লেক গার্ডেন্স এলাকার অ্যাম্বুল্যান্স চালক বিশ্বজিতের কথায়, ‘‘রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছনোর বাইরেও যে আমরা কিছু করতে পারি, তা বুঝিয়ে দেওয়ার এই পদক্ষেপ আগে কেউ করেননি। এটা খুবই জরুরি। এতে রাস্তায় কাউকে অসুস্থ দেখলে আমরা সেই মতো ব্যবস্থা নিতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy