পিতা ও কন্যা। মেয়ে শাওনার সঙ্গে উস্তাদ রাশিদ খান। নিজস্ব চিত্র
উস্তাদ রাশিদ খানের মেয়ে শাওনা শুক্রবার যোগ দিলেন তৃণমূলে। আবার সম্প্রতি রাশিদ নিজে বঙ্গ ভোটের জন্য তৈরি বিজেপি-র গানের সিডি প্রকাশ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন মুম্বইয়ে। খান পরিবারে কি রাজনীতির বিপরীতমুখী স্রোত বইছে? তবে কন্যা সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিলেও এই মুহূর্তে পিতা রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন না। শুক্রবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে রাশিদ বললেন, ‘‘মেয়ে বড় হয়েছে। ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজনীতিতে যোগ দেবে। মানুষের সেবা করবে। আমি বাধা দিইনি। কিন্তু আমি তো শিল্পী। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। কখনওই ভাবিনি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কথা। ভাববও না। আমার কাজ অন্য। ছেলে-মেয়ের ব্যাপার আলাদা।’’
মুখে যা-ই বলুন, ‘বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা’র জন্য সম্প্রতি আলোচিত হয়েছিলেন রাশিদ। পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে মুম্বইয়ে একটি গানের অ্যালবাম প্রকাশ করে বিজেপি। অ্যালবামের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন বিজেপি সাংসদ তথা অভিনেত্রী হেমা মালিনী। সঙ্গে ছিলেন রাশিদ-সহ বহু বিশিষ্টজন।
সে প্রসঙ্গে রাশিদের বক্তব্য, ‘‘তখন আমার মামা প্রয়াত উস্তাদ গুলাম মুস্তাফার কাজে মুম্বইয়ে গিয়েছিলাম। তখন আমাকে একটা গানের সিডি উদ্বোধন করতে বলা হয়। গিয়েছিলাম। আমি গানবাজনা করি। নিরপেক্ষ মানুষ। যেখানে গানবাজনা হয়, সেখানে থাকতেই হবে। প্রত্যেক শিল্পীর সঙ্গেই একটা যোগাযোগ থাকে।’’ যোগ করলেন, ‘‘দেশের সঙ্গীত এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সকলের সঙ্গেই আমাকে চলতে হবে। আমি তো কারও গানের সিডি প্রকাশের অনুষ্ঠানে যেতেই পারি। যাঁরা কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা কি মানুষ নন? সকলের সঙ্গেই আমাদের সম্পর্ক রাখা উচিত। আমার কাছে এই যোগাযোগটা হল মানুষের সঙ্গে মানুষের। এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার।’’
উদাহরণ দিয়ে রাশিদের বক্তব্য, ‘‘যে আমাকে অনুষ্ঠানে ডাকে, আমি যাই। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি— যে ডাকবে যাব। আর তৃণমূলের অনুষ্ঠানে তো যাই-ই। আমি তো নেতা নই। আমি শিল্পী বলেই এটা করি।’’ মেয়ে ভোটে দাঁড়ালে কি তিনি প্রচারে যাবেন? রাশিদের উত্তর, ‘‘সেটা এখন থেকে বলা অসম্ভব। আমি তো সকলের জন্যই। আমার কথা হল, ওর যদি রাজনীতি করতে ভাল লাগে, ও যদি মানুষের উপকারে লাগে, তা হলে সেটা ওকে করতে দিতে হবে। আর ও তো সবে যোগ দিল। ওকে এখন অনেক পরিশ্রম করতে হবে।’’
কলকাতার সাংস্কৃতিক জগতের ব্যক্তিত্বদের একাংশের সঙ্গে বিজেপি যে যোগাযোগ রেখে চলেছে, তার প্রমাণ মিলেছিল যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শহরে এসে দেখা করেছিলেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর সঙ্গে। এর পর সরোদবাদক পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। যদিও অমিত শাহ ও মোহন ভাগবত মূলত সঙ্গীত শুনতেই এসেছিলেন বলে দুই শিল্পী দাবি করেছিলেন। তবে এর মধ্যে ভিন্ন ‘তাৎপর্য’ খুঁজে পেয়েছিলেন শহরের অনেকে। কারণ, গত লোকসভা ভোটের আগে ‘সম্পর্ক ফর সমর্থন’ কর্মসূচিতে মাধুরী দীক্ষিত, সলমন খান, কপিল দেবের মতো ব্যক্তিত্বের বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। বঙ্গ ভোটের সিডি প্রকাশ অনুষ্ঠানে রাশিদকে ডাকার মধ্যেও সেই ‘ইঙ্গিত’ দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। যদিও রাশিদ নিজে বলছেন, ‘‘মেয়ের ব্যাপার আলাদা। আমার বিষয় আলাদা। আমি সারা ভারতের জন্য। সারা জীবন গানবাজনা নিয়েই থাকতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy