ব্রাত্য বসুর হাত থেকে ঘাসফুলের পতাকা নিলেন প্রবীণ অভিনেতা দীপঙ্কর দে, ভরত কল এবং লাভলি মৈত্র। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের সঙ্গে আরও বাড়ল টলিউড-যোগ। শুক্রবার ঘাসফুলের পতাকা হাতে নিলেন প্রবীণ অভিনেতা দীপঙ্কর দে, ভরত কল এবং লাভলি মৈত্র। তৃণমূলে যোগ দিলেন সঙ্গীতশিল্পী উস্তাদ রাশিদ খানের কন্যা শাওনা খানও। তৃণমূল ভবনে রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর হাত থেকে দলীয় পতাকা নেন তাঁরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সকলে। ওই যোগদানের মঞ্চ থেকেই কৃষক আন্দোলন থেকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদান নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ করেছেন ব্রাত্য।
তৃণমূলের পতাকা নেওয়ার পর দীপঙ্কর বলেন, ‘‘আমি বহু দিন ধরেই তৃণমূলের সঙ্গে আছি। শারীরিক কারণে সব জায়গায় যেতে পারিনি এত দিন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি ‘দায়বদ্ধতা ও কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করে বর্ষীয়ান অভিনেতা বলেন, ‘‘উনি আমাকে বঙ্গভূষণ ও বঙ্গবিভূষণ দু’টি সম্মানে সম্মানিত করেছিলেন। এটা আমার জীবনে বড় ব্যাপার। আমি যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে, তখন উনি দু’বার অরূপ বিশ্বাসকে আমার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন। আমার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ সরকার বহন করেছে। অতএব আমি বেইমানি করতে পারব না। তৃণমূলের সঙ্গেই থাকব।’’
শাওনা সঙ্গীতশিল্পীর পাশাপাশি সমাজকর্মীও। বহু সামাজিক কাজকর্মে তাঁর অবদান রয়েছে বলেই শোনা যায়। লাভলি মৈত্র ‘মোহর’ এবং ‘জলনুপূর’ ধারাবাহিকে অভিনয়ের সুবাদে টেলিপাড়ায় জনপ্রিয় মুখ। ‘খাদ’, ‘জুলফিকর’, ‘বাদশাহি আংটি’-র মতো বহু সিনেমায় অভিনয় করেছেন ভরত। এখনও সিনেমা-ধারাবাহিকে তাঁকে দেখা যায়। ব্রাত্যর দাবি, ‘‘শুধু এই চার জন নয়, আরও অনেকে যোগদান করছেন। কিন্তু জায়গার সঙ্কুলান না হওয়ায় এঁদের প্রতীকী যোগদান করানো হল।’’
রাজ্যে টেট-এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি বিজেপি-তে যোগ দেওয়া কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর পরিবারের কয়েক জন সদস্য চাকরি পেয়েছিলেন। ২০১৪ সালের ওই নিয়োগ নিয়ে প্রশ্নও উঠেছিল। সেই বিশ্বজিৎ সম্প্রতি বলেছেন, ওই সময় তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরই চাকরি হয়েছিল। ঘটনাচত্রে, তখন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ব্রাত্য। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘টেট পরীক্ষা নিয়েছে রাজ্য প্রাথমিক পর্ষদ। নিয়োগ দিত জেলা প্রাথমিক পর্ষদ। বর্ধমানের একটি কেন্দ্রের এক বিধায়কের পরিবারের সবাই চাকরি পেয়েছিলেন। আপনারা তাঁকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন। আমি ওঁকে বলেছিলাম, এগুলো কী হচ্ছে? উনি চুপ করে ছিলেন।’’
এই যোগদানের মঞ্চেও নানা ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন ব্রাত্য। বৃহস্পতিবারই কৃষক আন্দোলন সমর্থন করে টুইট করেছেন সুইডেনের পরিবেশকর্মী গ্রেটা খুনবার্গ, আমেরিকার পপ তারকা রিহানার মতো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশিষ্টরা। উল্টো দিকে সরকারের পক্ষ নিয়ে বলিউড তারকারাও টুইট করেছেন। কিন্তু সেই টুইটের ভাষা প্রায় হুবহু এক। কঙ্কনা সেন শর্মা আবার এই সব বলিউড তারকা, খেলোয়াড়দের উদ্দেশে টুইটে বলেছেন, ভয় পেয়ে একই ধরনের টুইট করেছেন তাঁরা। এই নিয়েই ব্রাত্য বসু প্রশ্ন তোলেন, ‘‘এঁদের কি ভয় দেখানো হচ্ছে? শিরদাঁড়া দিয়ে কি হিমেল স্রোত বইয়ে দেওয়া হচ্চে। মাথার কাছে বন্দুক রেখে টুইট করানো হচ্ছে না তো?’’
‘দুয়ারে সরকার’ নিয়ে বিরোধীদের অপপ্রচারের জবাবও দিয়েছেন ব্রাত্য। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের দুই প্রকল্প ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘পাড়ায় সমাধানে’ অভূতপূর্ব সাড়া পড়েছে। বিশ্বব্যাঙ্ক, ইউনিসেফ এর প্রশংসা করেছে। আর বিরোধীরা বলছেন, যমের দুয়ারে সরকার! আমরা মানুষের দুয়ারে যাচ্ছি। তা হলে সাধারণ মানুষকে কি বিজেপি নেতারা যম বলছেন? এই অপমানের জবাব দেবেন বাংলার মানুষ।’’ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানকারী নেতারা দিল্লির নেতাদের হাত থেকে পতাকা নিচ্ছেন। এ নিয়ে বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল উস্কে দিতে চেয়েছেন ব্রাত্য। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি-তে কি রাজ্য নেতাদের কোনও গুরুত্ব নেই? রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত থেকে পতাকা নিলে কী সমস্যা হত? এটা তো বাংলার নেতাদের অপমান!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy