বিয়ের খরচের জন্য হন্যে হয়ে বারবার ব্যাঙ্কে গিয়েছেন। তাঁর অ্যাকাউন্ট স্টেট ব্যাঙ্কে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, বিয়ের জন্য আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত তুলতে পারেন কোনও গ্রাহক। কিন্তু কখনও শুনেছেন, ব্যাঙ্কে টাকা নেই। কখনও বলা হয়েছে, বিয়ের জন্য ওই টাকা দেওয়ার নির্দেশিকা আসেনি। কিন্তু ৯ ডিসেম্বরই বিয়ে। আমন্ত্রণ পত্র পর্যন্ত ছাপানো হয়ে গিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চন সরকার তাই ভেবেছিলেন, বিয়েটা পিছিয়েই দেবেন।
তখনই তাঁর এক বন্ধু পরামর্শ দেন, খোদ এসবিআইয়ের চেয়ারম্যানকেই ই-মেল করে সব কথা জানানো হোক। ইন্টারনেট থেকে চেয়ারম্যান অরুন্ধতী ভট্টাচার্যের ই-মেল ঠিকানা পেয়ে যান তাঁরা। ২৪ নভেম্বর সরাসরি তাঁকে ই-মেলও করেন তাঁরা। তার পর দিনই এসবিআইয়ের আঞ্চলিক অধিকর্তা তাঁকে ফোন করেছিলেন। সেই ফোনটা কাঞ্চনবাবু অবশ্য ধরতে পারেননি। তবে সেই দিনই পরে এসবিআইয়ের ওই স্থানীয় শাখার ম্যানেজার তাঁকে ফোন করে ব্যাঙ্কে যেতে বলেন। তখনই তাঁকে মঙ্গলবার আবার ব্যাঙ্কে আসতে বলা হয়। সেই মতো ২৯ নভেম্বর ব্যাঙ্ক থেকে তিনি আড়াই লক্ষ টাকা পেয়ে গিয়েছেন।
কাঞ্চনবাবুর বক্তব্য, ‘‘সরাসরি চেয়ারম্যানকে ই-মেল করাতেই কাজ হল।’’ তাঁর কথায়, এ বার বিয়েটা অন্তত হবে।
কা়ঞ্চন সরকারের ই মেল।
এসবিআইয়ের ওই শাখার ম্যানেজার অবশ্য বলেন, ‘‘কাঞ্চনবাবুকে সত্যি কথাই বলেছিলাম। আমাদের কাছে তাঁকে দেওয়ার মতো আড়াই লাখ টাকা ছিল না। সরকারি নির্দেশিকায়ও অনেক দিন পরে এসেছে। তবে উপর থেকে নির্দেশ পাওয়ার পরপরই তাঁর টাকা আমরা মিটিয়ে দিয়েছি।’’
কিন্তু, ওই একই ব্যাঙ্কের একই শাখায় আরও সাত জন বিয়ের জন্য ওই টাকা চেয়ে আবেদন করে কিছুই পাননি। তাঁদের একজন মহিলা পুলিশকর্মী। তিনি বলেন, ‘‘খোদ বড়কর্তার কানে খবর তুলে দিয়ে তবেই এক জন টাকা
পেলেন। তা না করলে কি টাকা পাওয়া যাবে না?’’ ওই ব্যাঙ্ক সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, যাঁদের টাকা আটকে রয়েছে, তাঁরা সব কাগজ জমা দেননি। সে কথা অবশ্য ওই গ্রাহকেরা মানতে রাজি নন।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে একই সমস্যায় পড়েছেন গ্রাহকেরা। বিয়ে সামনে, কিন্তু সব কাগড জমা দিয়েও টাকা পাচ্ছেন না। শামুকতলার সৌরভ রায়ের গত সপ্তাহে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্কে আবেদন জানিয়ে তিনি পেয়েছেন মাত্র ত্রিশ হাজার। তাঁর কথায়, ‘‘আড়াই লাখ
পাওয়ার কথা ছিল। কোনওমতে নমো নমো করে বিয়ে হয়েছে। কার ভাল লাগে এটা?’’
এসবিআই সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, সব শাখাতেই আঞ্চলিক অধিকর্তা সহ কার কার কাছে অভিযোগ জানাতে হবে, তাঁদের নাম ও ফোন নম্বর থাকার কথা। কারও ক্ষোভ থাকলে, সরাসরি সেই নম্বরে ফোন করে জানাতে পারেন।
তাঁদেরও সমস্যা মেটাতে নিশ্চয়ই চেষ্টা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy