বন্ধ উপেক্ষা করেই দীর্ঘ দু’মাস পরে রেশন বিলি হল পাহাড়ের দু’টি চা বাগানে। বণ্টনের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মীদের পাহারা দিলেন খোদ চা শ্রমিকরাই।
শনি এবং রবিবার পরপর দু’দিন শ্রমিকদের ২ টাকা কেজি দরে চাল ও আটা বিলি করা হয় রোহিনী লাগোয়া শিমূলবাড়ির একটি চা বাগান এবং কার্শিয়াঙের একটি চা বাগানে। দু’টি বাগানের প্রায় বারোশো বাসিন্দার মধ্যে চাল ও আটা বিলি করা হয়। মোর্চার খাসতালুকে দোকান খুলে রেশন বিলির এই ঘটনাকে বড় সাফল্য বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘সব বাগানেই তো খাদ্য সঙ্কট চলছে। আমরা চেষ্টা করছি অসহায় শ্রমিকদের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে। এ ক্ষেত্রেও শ্রমিকদের দাবিতেই আমরা রেশন বিলি করেছি। এমন কী শ্রমিকরাই সরকারি কর্মীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছিলেন।’’
১৫ জুন থেকে পাহাড়ে লাগাতার বন্ধ শুরু হয়। তারপর থেকেই রেশন ডিলারদের দোকানও বন্ধ করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। লাইসেন্স বাতিল করার হুমকি দিয়েও কোনও দোকান খোলানো যায়নি বলে দাবি খাদ্য দফতরের। পণ্য নিয়ে পাহাড়ে ওঠার পথে বেশ কয়েকবার ট্রাকে হামলা হয়েছে। তারপর থেকেই রেশন সামগ্রী পাঠানোও বন্ধ হয়ে যায়।
লাগাতার বন্ধ চলতে থাকায় বাগানগুলিতে তীব্র হচ্ছিল খাদ্যসঙ্কট। কারণ খোলা বাজার থেকে চড়া দামে জিনিস কেনা সম্ভব নয় অধিকাংশ চা শ্রমিকেরই। তার উপর কাজ বন্ধ থাকায় মজুরিও বন্ধ বাগানগুলিতে। আর বন্ধের সুযোগ নিয়ে পাহাড়ে দেদার কালোবাজারি চলছে বলেও অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে আশার আলো দেখালো শিমূলবাড়ি এবং কার্শিয়াঙের এই দু’টি চা বাগান।
প্রশাসন সূত্রের খবর একেবারে স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বলা হয়, শ্রমিকরা রাজি থাকলে সরকার রেশন বিলি করতে রাজি। খাদ্য সঙ্কটে ভুগতে থাকা শ্রমিকরা আপত্তি করা দূর অস্ত, উল্টে সরকারি কর্মীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেন তাঁরাই। খাদ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমরা চাইছি সব চা বাগানেই রেশন বিলি শুরু হোক। কয়েকটি বাগান থেকে ইতিমধ্যে প্রস্তাব এসেছে। এখানে কাজটা শুরু হল।’’ পাহাড়ে বিস্ফোরণের পর এমনিতেই চাপে রয়েছে মোর্চা নেতৃত্ব। লাগাতার বন্ধ নিয়ে দলের অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কাজেই বাগানে রেশন বিলি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তাঁরাও। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘বাইরে রয়েছি। কিছু বলতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy