Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Prashant Kishor

পিকের ঠেলায় এক মঞ্চে

একই মঞ্চে পাশাপাশি বসে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পার্থপ্রতিম রায়, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, মিহির গোস্বামী।

একসঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

একসঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৫২
Share: Save:

গত কয়েক মাসে এ দৃশ্য অতিবিরলই বলা যায়। একই মঞ্চে পাশাপাশি বসে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পার্থপ্রতিম রায়, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, মিহির গোস্বামী। কোচবিহার জেলার ওই চার তৃণমূল নেতার সম্পর্ক কারও অজানা নয়। শনিবার রাতে ২ নির্দল ও ২ বাম কাউন্সিলারকে দলে নেওয়ার মঞ্চে সবাই বসলেন একই সঙ্গে। কাউন্সিলরদের হাতে পতাকাও তুলে দিলেন সবাই মিলে। যা নিয়ে কানাঘুষো শুরু হয়ে যায় তৃণমূলের নীচুতলায়। দলীয় সূত্রের খবর, জেলায় সমীক্ষার পর দলনেত্রীর কাছে রিপোর্ট জমা করেছে পিকের টিম। তার জেরেই সবাই এক মঞ্চে বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও এই বিষয়ে কেউই তেমনভাবে কিছু বলতে রাজি নন।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে কোচবিহারে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব তীব্র হয়ে ওঠে। মূল তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের লড়াইয়ে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় জেলা। সেই সময় রবীন্দ্রনাথ ঘোষ তৃণমূল সভাপতি ছিলেন। পার্থপ্রতিম যুব তৃণমূলের সভাপতি। লোকসভা নির্বাচনে পার্থপ্রতিমকে টিকিট দেওয়া হয়নি। তা নিয়েও দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। দলীয় সূত্রে খবর, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বিনয়কৃষ্ণ, মিহির গোস্বামীরও বিরোধ দীর্ঘদিনের। একসময় পার্থ রবীন্দ্রনাথের অনুগামী ছিলেন। তাকে সাংসদ করার জন্য সওয়াল করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সাংসদ হওয়ার পরে দু’জনের দূরত্ব বাড়ে।

মূলত সংগঠনের কর্তৃতব কায়েম নিয়েই রবীন্দ্রনাথ এবং তার বিরোধীদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।

লোকসভা নির্বাচনে হারের পরে রবীন্দ্রনাথকে সরিয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি করা হয় বিনয়কে। পার্থকে কার্যকরী সভাপতি করা হয়। তাতেও দ্বন্দ্ব মেটেনি।

তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি তথা অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “দলের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। সবাই মিলে প্রচারের কাজ চলছে। তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের কাজ দেখে চারজন কাউন্সিলর এবং ২ জন প্রাক্তন কাউন্সিলর একসঙ্গে যোগ দিয়েছেন।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্য়করী সভাপতিও পার্থপ্রতিম রায়ও দাবি করেন, দলে কোনও বিরোধ নেই। তিনি বলেন, “সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করছি। কাউন্সিলরদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও দলে দলে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। আসলে বিজেপি ও বামের কাজ নিয়ে কেউই খুশি নন।” ওই বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘনিষ্ঠ দলের বর্ষিয়ান নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ, কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ, দলের তরুণ মুখ অভিজিৎ দে ভৌমিক। জলিল বলেন, “কোথাও কোনও বিরোধ নেই। পুরসভায় তৃণমূল জয়ী হবে। এটা তাঁর ইঙ্গিত।”

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই গোষ্ঠী-কোন্দলে জেরবার কোচবিহারের তৃণমূল। লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছে তৃণমূল হেরে যাওয়ার পরে তা নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন নেত্রী। সম্প্রতি টিম পিকে পুরসভা ভোট নিয়ে সমীক্ষা শুরু করে। তাতে জেলার শীর্ষ নেতাদের প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকের বিরোধ সামনে আসে। নীচুতলার অনেক কর্মীই টিম পিকে’কে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয়, শীর্ষ-নেতৃত্বের মধ্যে দূরত্ব না কমলে পুরসভাও হাতছাড়া হবে। সেই রিপোর্ট জমা পড়ে দলনেত্রীর কাছে। তার পরেই শুরু হয় কড়া দাওয়াই। তার জেরেই সবাইকেই একমঞ্চে বসতে হচ্ছে। দলের এক জেলা নেতার কথায়, “চাপে পড়ে সবাই একমঞ্চে বসছে ঠিকই। কিন্তু ভেতরে ভেতরে বিরোধ চলছেই। আরও কড়া দাওয়াই না পড়লে মূল সমস্যা মিটবে না।”

বিজেপি’র কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “কোনও ওষুধেই আর কাজ হবে না। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে নেই।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy