দুই বাফারের এমন উঁচু-নীচু অবস্থানেই ঘটে বিপত্তি। (ইনসেটে) রেলরক্ষী শ্যামল মণ্ডল। —নিজস্ব চিত্র
স্টেশনে টহলদারির সময় এক আরপিএফ কনস্টেবলের তৎপরতায় বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচল হওড়া থেকে আমেদেবাদগামী এক্সপ্রেস।
বুধবার রাতে স্টেশনে টহলদারির দায়িত্ব ছিল ওই কনস্টেবলের। রাত ১ টার কিছু আগে ঘোষণা হয় হাওড়া থেকে আমেদাবাদ এক্সপ্রেস মেচেদা স্টেশনে আসছে। সেখানে ট্রেনটির দাঁড়ানোর কথা। ঘোষণার কিছুক্ষণ পরেই ট্রেন ঢুকতে দেখে সতর্ক হন আরপিএফের হেড কনস্টেবল শ্যামল মণ্ডল। কিন্তু ট্রেন ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকে কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পরেই যাওয়ার তাঁর নজরে পড়ে ট্রেনের সামনের দিকে পার্সেল ভ্যানের পরের কয়েকটি কামরার পা দানি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে ধাক্কা লাগার ফলে আগুনের ফুলকি ছুটছে। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড আওয়াজ।
মুহূর্তে কিছুটা হকচকিয়ে যান শ্যামল। তারপরেই কী ঘটতে চলেছে তা আঁচ করে সঙ্গে সঙ্গে ছুটতে শুরু করেন ইঞ্জিনের দিকে। ট্রেন থামলে চালককে জানান ট্রেনের সিঁড়ির সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের ধাক্কা লাগছে। বড় বিপদ ঘটতে পারে। চালক দেখেন ইঞ্জিন ও পার্সেল ভ্যানের মাঝে থাকা দু’দিকের বাফার উপর-নীচ হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি স্টেশন ম্যানেজারকে জানানো হয়। জানানো হয় রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। ঘড়িতে তখন ১টা। পরে খবর পেয়ে সাঁতরাগাছি থেকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দুর্ঘটনা সংক্রান্ত রিলিফ ট্রেন এসে পৌঁছয়। আসেন রেলের পদস্থ আধকারিকরা। মেচেদা স্টেশনে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ট্রেন থামিয়ে ইঞ্জিন-সহ লাগেজ ভ্যান আলাদা করে নতুন ইঞ্জিন লাগানোর পর ট্রেনটি গন্তব্যে রওনা হয়।
দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘ওই ট্রেনের পার্সেল ভ্যানের বাফার কামরার বাফারের চেয়ে উঁচু হওয়ায় দু’দিকের বাফার না মেলায় সমস্যা হয়েছিল। তবে সেটি ধরা পড়ার পর দু’ঘণ্টা ধরে তা মেরামতির চেষ্টা হয়। পরে ইঞ্জিন ও পার্সেল ভ্যানটি ছাড়াই নতুন ইঞ্জিন জুড়ে গন্তব্যে রওনা হয় ট্রেনটি।’’
২৪ কামরার ওই ট্রেনে এক হাজারেরও বেশি যাত্রী ছিলেন বলে রেল সূত্রে খবর। রাত ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ হাওড়া থেকে ট্রেনটি রওনা হয়। মেচেদা স্টেশনের আরপিএফ কনস্টেবলের তৎপরতায় দুর্ঘটনা এড়াতে পারায় তাঁকে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
কামরার পা দানি আর প্ল্যাটফর্মের সংঘর্ষে এমনই অবস্থা হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র
যদিও পুরস্কারের ঘোষণায় তেমন কোনও প্রতিক্রিয়া দেখা গেল না শ্যামলবাবুর। তাঁর কথায়, ‘‘ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢোকার সময় একটা অন্যরকম শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি ট্রেনের পা দানির সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের সংঘর্ষে আগুনের ফুলকি ছুটছে। ট্রেন থামলে চালককে ঘটনাটা জানাই। দুর্ঘটনা এড়াতে নিজের যা কর্তব্য সেটাই পালন করেছি।’’
তবে এই ঘটনায় ফের রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, হাওড়া থেকে ট্রেনটি ছাড়ার আগে কেন বাফারের ওই সমস্যা ধরা পড়ল না। হাওড়া থেকে মেচেদা স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ৫৮ কিলোমিটার। এতটা পথের মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটলে কী হত, উঠেছে সেই প্রশ্নও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy