Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Kunal Ghosh

মুখপাত্র পদে কুণালের ইস্তফা গ্রহণের পর আরও এক ধাপ! রবিবার তাঁকে শোকজ় করতে চলেছে দল

কুণালের লাগাতার মন্তব্যে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে ক্ষুব্ধ, একান্ত আলোচনায় তা কেউই গোপন করছেন না। তাঁদের মতে, লোকসভা ভোটের আগে দলের পক্ষে এ সব আদৌ ‘স্বাস্থ্যকর’ হচ্ছে না।

TMC may give a show cause notice to Kunal Ghosh

কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪ ২০:৫১
Share: Save:

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদ থেকে শুক্রবার ইস্তফা দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। শনিবার মুখপাত্র পদে তাঁর ইস্তফা গৃহীতও হয়েছে। তার পর আরও এক ধাপ এগোচ্ছে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, রবিবার কুণালকে শোকজ় নোটিসও পাঠাতে চলেছে দল।

শনিবার সন্ধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনেই সবার প্রথম মুখপাত্র পদে কুণালের ইস্তফা গৃহীত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে কুণাল খানিকটা ‘বেপরোয়া’ হয়েই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে চলেছেন বা সংবাদমাধ্যমে কথা বলে চলেছেন বলে অনেকের মত। শনিবার সন্ধ্যাতে কুণাল এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) লেখেন, ‘‘আমি তৃণমূলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। খবর পেয়েছি, শুধু মুখপাত্র থেকে ইস্তফার অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে। দলের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফাটিও গ্রহণ করা হোক। আমি ওই পদে থাকব না। আমি শুধু কর্মী হিসেবে থাকব।’’ কুণাল সংবাদমাধ্যমে এ-ও বলেছেন, ‘‘আমার কোনও মান-অভিমান নেই। আমি জীবনে উত্থান-পতন, স্বর্গ-নরক দেখেছি। তাই আমি সব কিছুকে স্বচ্ছ ভাবে দেখতে চাই। সেটাই হয়ে যায় মুশকিল।’’

দলীয় সূত্রের খবর, কুণাল যে ভাবে ক্রমান্বয়ে দলের প্রবীণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে তোপ দাগছেন, তা ভাল ভাবে নেননি এবং নিচ্ছেন না শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘দলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনেকের ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা দলের মধ্যেই বলা উচিত। যে ভাবে উনি লাগাতার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বিষোদ্গার করছেন, তা আর যা-ই হোক, দলকে সাহায্য করছে না।’’ ওই প্রবীণ নেতার আরও বক্তব্য, ‘‘দল সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে ওঁর বক্তব্য সমর্থন করে না।’’

বস্তুত, কুণাল প্রকাশ্যে এই ভাবে সুদীপের বিরোধিতা করে পরোক্ষে তাঁর প্রার্থিপদ আরও ‘নিশ্চিত’ করে দিচ্ছেন বলেই দলের একাংশের বক্তব্য। দলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘‘সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এই গোটা পর্বে একটি কথাও বলেননি। কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। চুপচাপ গোটাটা হজম করছেন। সেটাই ওঁর পক্ষে চলে যাচ্ছে।’’

কুণাল যে ভাবে সুদীপ বন্দি অবস্থায় ভুবনেশ্বরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় তাঁর বিল ইত্যাদি নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলেছেন, দল তা-ও সুনজরে দেখছে না। কুণাল তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে ওই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। দাবি জানিয়েছেন সুদীপের পুনরায় গ্রেফতারিরও। কিন্তু দলের অন্দরে কুণালের বিরোধীরা আরও একটি বিষয় উল্লেখ করছেন। তাঁদের বক্তব্য, কুণাল যে ভাবে ওই পোস্টে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের ডিরেক্টর এবং সিবিআইকে ‘ট্যাগ’ করেছেন, তা ‘দলবিরোধী’।

গোটা ঘটনাপ্রবাহে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে ক্ষুব্ধ, তা শাসকদলের প্রথম সারির নেতারা একান্ত আলোচনায় গোপন করছেন না। দলের নেতারা মনে করছেন, এই ধরনের প্রবণতা অনেক সময়েই ‘সংক্রামক’ হয়। লোকসভা ভোটের আগে এ সব ছড়াতে শুরু করলে তা তৃণমূলের পক্ষে আদৌ ‘স্বাস্থ্যকর’ হবে না। তাই বিলম্ব না-করে মুখপাত্রের পদে তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করে নিয়েছে দল। ওই পদক্ষেপের মাধ্যমে কুণালকে প্রয়োজনীয় ‘বার্তা’ও দেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন দলের নেতারা। কিন্তু তাতেও বিষয়টি না থামায় এ বার তৃণমূল শোকজ়ের পথে হাঁটতে চলেছে।

প্রসঙ্গত, এর আগেও এক বার কুণালকে মুখপাত্র হিসেবে ‘সেন্সর’ করেছিল দল। কিন্তু তার পরে কুণালকে আবার মুখপাত্রের দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে এ বার কী হবে, সেটাই দেখার।

অন্য বিষয়গুলি:

Kunal Ghosh Tmc Leader Show cause Notice
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy