দু’দিন আগেই মোদী বিরোধী লড়াইয়ে সিপিএমকে কাছে টানার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের ২৫তম রাজ্য সম্মেলনে সেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই ‘সংখ্যালঘু মৌলবাদ’কে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আনলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। কলকাতায় রাজ্য সম্মেলনে সোমবার রাজনৈতিক-সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করে সূর্যবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল সংখ্যালঘু মৌলবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। প্রতিক্রিয়ায় বিপরীতে বাড়ছে সংখ্যাগুরুর মৌলবাদ। ঐক্যবদ্ধ ভাবে এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’’
ত্রিপুরায় গেরুয়া ঝড়ে উড়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সম্মেলন করতে বসে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তির জোটের তত্ত্বকেই আঁকড়ে ধরেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। রাজ্য সম্মেলনের প্রারম্ভিক ভাষণে সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটে বিপুল টাকা উড়িয়েছে বিজেপি। সঙ্গে রয়েছে ওদের বিভেদের রাজনীতি। এর মোকাবিলা করতে হলে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ লড়াইই চাই।’’
বিজেপির মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ লড়াইই বাস্তবোচিত পথ— এই অবস্থান বঙ্গ সিপিএম আগেই ঘোষণা করেছে। ইয়েচুরিও বার বার এর পক্ষেই সওয়াল করেন। ত্রিপুরায় পরাজয়ের পর ওই তত্ত্বের বাস্তবতা আরও বেশি করে স্পষ্ট হল বলে মনে করছে সিপিএমের একটা বড় অংশ। দ্বিতীয়ার্ধে এ দিন সম্মেলনে যোগ দেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বিকেলে আলোচনা শুরুর পরে উত্তর ২৪ পরগনার তন্ময় ভট্টাচার্য, গৌতম ঘোষ-সহ সম্মেলনের বেশির ভাগ প্রতিনিধি ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষেই মত দেন। বর্ধমান পূর্বের অপূর্ব মুখোপাধ্যায় ওই মতের তীব্র বিরোধিতা করেন।
সম্মেলনে বঙ্গ সিপিএমের মূল নজর রয়েছে সংগঠনে। রবিবার দলের বিদায়ী রাজ্য কমিটির প্রথামাফিক বৈঠক হয়। সেখানে বলা হয়, ৭৫ বছর বয়স হয়ে গেলে রাজ্য কমিটিতে থাকা যাবে না। ব্যতিক্রম বিমান বসু। এই সূত্র মানলে দীপক সরকার, দীপক দাশগুপ্ত, শ্যামল চক্রবর্তী, মদন ঘোষদের রাজ্য কমিটি থেকে বাদ যাওয়ার কথা। কিন্তু এ নিয়ে টানাপড়েন কাটেনি। দলের একাংশের দাবি, যান্ত্রিক ভাবে অন্যান্য দিক না দেখে শুধু বয়সের নিরিখেই কাউকে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা হোক। এই সাংগঠনিক বিষয় আলোচনা হবে সম্মেলনের শেষ দিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy