মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সফরে গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের বিড়ম্বনা এড়াতে কোমর বাঁধল তৃণমূল কংগ্রেস। উত্তর ২৪ পরগনার চাকলা ও দেগঙ্গার সেই কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক জমায়েতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের জেলা নেতৃত্ব। দলের সাংসদ অর্জুন সিংহ এবং বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের বিরোধ চরমে পৌঁছনোর পরে দলনেত্রীর এই কর্মসূচি নিয়ে বাড়তি সতর্ক থাকার বার্তাই দিয়েছে জেলা তৃণমূল।
প্রাক্তন সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পরে এই জেলার সংগঠন নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তৃণমূল নেত্রী স্বয়ং। ভোটের আগে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা দলের নেতাদের নিয়ে একটি কোর কমিটিও গড়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জগদ্দলে একটি খুনের ঘটনা নিয়ে সাংসদ-বিধায়কের বিবাদ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে মমতার কর্মসূচির আগে চিন্তায় রয়েছেন জেলার নেতারা। মধ্যমগ্রামে শনিবার কোর কমিটির বৈঠকে নির্দিষ্ট করে সে বিষয়ে আলোচনা না করলেও গোটা বিষয়টি মাথায় রেখেই দলনেত্রীর কর্মিসভা সম্পর্কিত পরিকল্পনা করা হয়েছে। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের সমস্যা রয়েছে বসিরহাট, হাবড়া ও বনগাঁর স্থানীয় নেতাদের মধ্যেও। জেলার নেতাদের আশা, এই সফরেই জেলার এ সব সমস্যা সম্পর্কে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিতে পারেন মমতা।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর চাকলায় ‘লোকনাথ ধাম’ মন্দিরে যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। সেখানে কয়েকটি সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করার পরে তৃণমূলের কর্মিসভা করার কথা রয়েছে তাঁর। মমতার কর্মসূচি সংক্রান্ত দলের প্রস্তুতি বৈঠকে এ দিন উপস্থিত ছিলেন জেলার চার সাংসদ, বিধায়ক, পুর ও পঞ্চায়েতে নির্বাচিত দলীয় পদাধিকারীরা। জেলা দলের এক নেতার কথায়, ‘‘এই কর্মসূচি থেকেই কার্যত দলনেত্রীর নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়ে যাবে। তাই সকলকে সব বিরোধ ভুলে এখন থেকেই নির্বাচনের কাজে নেমে পড়তে হবে।’’
তৃণমূল কর্মী ভিকি যাদব খুনে অর্জুন সিংয়ের ভাইপো পাপ্পু সিং গ্রেফতার হতেই ব্যারাকপুরে তৃণমূলের দুই নেতার দ্বৈরথ আরও চরমে পৌঁছেছে। দুষ্কৃতী-যোগ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে পরস্পরকে বিঁধেছেন অর্জুন ও সোমনাথ। মধ্যমগ্রামে দলের জেলা কার্যালয়ের বৈঠকে এ দিন কিছু ক্ষণের জন্য এক ঘরেই ছিলেন দু’জনে। পরে অর্জুন বলেন, ‘‘দল এ সব (দ্বন্দ্ব) দেখলেই ভাল। সাংগঠনিক জেলার এখানে কোনও কাজ নেই। উপর থেকে যা দেখবে, সেটাই। সাংগঠনিক জেলা দায়িত্ব নিলে ৯ দিন ধরে এ সব চলবে কেন?’’
নিজের অবস্থানে অনড় বিধায়ক সোমনাথও বলেন, ‘‘মানুষ আর দলের কাছে পরিষ্কার, কে সাদা আর কে কালো। দল আমার মাথার উপরে আছে।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভোটে এ সবের প্রতিফলন হয় না।’’ বৈঠক শেষে তৃণমূলের ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস রায় বলেন, ‘‘অর্জুন বা সোমনাথ পরস্পরের সম্পর্কে যে কথা বলছেন, তা কি তাঁরা সভাপতিকে জিজ্ঞাসা করে বলছেন? এটা পুরনো বিষয় এবং এই নিয়ে তাঁদের সঙ্গে দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একাধিক বার কথা হয়েছে। আমার সঙ্গেও হয়েছে এবং আমার সঙ্গেও দলের যাঁদের যাদের কথা বলার প্রয়োজন, বলেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy