পুরী যাওয়ার পথে ঘুরে নিন ভুবনেশ্বরের কাছে দেরাস জলাধার এবং চন্দ্রকার জঙ্গল। ছবি: সংগৃহীত।
কেউ গিয়েছেন ১২ বার, কেউ আবার ১৫ বার। কলকাতার কোনও কোনও বাঙালির পুরী যাওয়ার সংখ্যাটা এর চেয়ে বেশি হলেও, অবাক হওয়ার কিছু নেই।
কী আছে ওড়িশার সাগরপারে? পুরী ঘুরেই যাঁদের শান্তি, তাঁরা বলবেন, এখান কার সমুদ্রস্নানের মজা অন্য কোথাও কই? তার উপর দু’বেলা পেট ভরে ভাত-মাছ খাওয়া, উপরি পাওনা জগন্নাথ দর্শন। কয়েকটা দিন দিব্যি আরামে কাটিয়ে দেওয়া যায়।
দুর্গাপুজোর ছুটিতে মন কি সেই পুরীই ছুঁতে চাইছে? তা হলে দেরি না করে, চারচাকাকে সঙ্গী করেই বেরিয়ে পড়ুন। তবে শুধু পুরী নয়, সেখানে যাওয়ার পথে ভুবনেশ্বরে থেকে ঘুরে নিন, দুই অচেনা ঠিকানা। নন্দনকানন, উদয়গিরি, খণ্ডিগিরি ঘুরেছেন, কিন্তু ভুবনেশ্বর থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরেই দেরাস জলাধার কখনও দেখছেন কি?
গাড়ি নিয়েই যাচ্ছেন যখন তখন ভ্রমণের তালিকায় জুড়ে নিন চন্দ্রকা-ডাম্পারা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাঙ্কচুয়ারি এবং তারই মধ্যে পাহাড় ঘেরা দেরাস বাঁধ। জনবহুল ভুবনেশ্বরে সবুজের সান্নিধ্য চাইলে রাত্রিবাস করতে পারেন ওড়িশা সরকারের দেরাস নেচার ক্যাম্পে।
ঘন সবুজের মধ্যে সাজানো-গোছানো কটেজ। ভিতরেই রয়েছে নজরমিনার। সেখান থেকেই দেখা যায় ছবির মতো সুন্দর জলাধার। এই স্থানের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে ঢেউ খেলানো পাহাড়।
এমনিতে বছরভর এতে বিশেষ জল থাকে না। তবে বর্ষা এলেই বদলে যায় দেরাস। জলাধার তখনদ টইটম্বুর। পুজোর সময়ে গেলেও জলাধার এবং তার চার পাশের শ্যামলিমা বেশ উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
শুধু কি দেরাস! চন্দ্রকা-ডাম্পারা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাঙ্কচুয়ারির সৌন্দর্যও কম কিছু নয়। ১৯৩ বর্গকিলোমিটার জুড়ে তার বিস্তৃতি। এই জঙ্গল হাতি, চিতল, বার্কিং ডিয়ার, বাঁদর, ময়ূর-সহ অসংখ্য বন্যপ্রাণের আস্তানা। জঙ্গল ঘোরার জন্য সাফারির ব্যবস্থা রয়েছে। একটি গাড়িতে ৮ জন। ১ ঘণ্টা এবং ২ ঘণ্টার সাফারি হয়।
চন্দ্রকা-ডাম্পারা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাঙ্কচুয়ারির দফতর থেকে গাড়ি বুক করে নিতে পারবেন। আবার দেরাসের বুকে নৌ-বিহার করতে চাইলে তার টিকিটও এখানেই মিলবে।
গদিবা়ড়ি এই স্যাঙ্কচুয়ারির আর একটি প্রবেশপথ। জঙ্গল ভ্রমণ এবং বন্যপ্রাণ দেখার জন্য একাধিক ভিউ পয়েন্ট এবং নজরমিনার রয়েছে এখানে। স্যাঙ্কচুয়ারির একাংশে রয়েছে ভারতপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এই অংশে হাতির আনাগোনা বেশি।
যেতে কত ক্ষণ সময় লাগবে?
কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বরের দূরত্ব ৪৩০ কিলোমিটার। ১০ ঘণ্টায় পৌঁছনো যায়। ভুবনেশ্বর থেকে পুরীর দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার। যেতে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে।
কী ভাবে যাবেন?
হাওড়া থেকে কোলাঘাট, ডেবরা, বেলদা, জলেশ্বর হয়ে ভদ্রক। সেখান থেকে চণ্ডীখোল, কটক হয়ে ভুবনেশ্বর।
কোথায় থাকবেন?
ভুবনেশ্বরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকতে চাইলে ওড়িশা ইকো ট্যুরিজমের দেরাস নেচার ক্যাম্প এবং গদিবাড়ি নেচার ক্যাম্প বেছে নিতে পারেন। দেরাসে থাকলে জলাধারের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। না হলে ভুবনেশ্বরের যে কোনও হোটেলে থেকে চন্দ্রকা-ওয়াইল্ডলাইফ স্যাঙ্কচুয়ারি এবং দেরাস জলাধার ঘুরে নিতে পারেন।
আর কী দেখবেন?
কটকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মস্থান এবং বহু পুরনো বারাবতী কেল্লা ঘুরে নিতে পারেন। ভুবনেশ্বর থেকে দূরত্ব মোটামুটি ২৩ কিলোমিটার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy