Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

শীর্ষ আদালতে আবেদনে ভুল, ঝুলেই রইল ই-মনোনয়ন

মঙ্গলবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ই-মেলের মাধ্যমে সময়ে জমা দেওয়া মনোনয়নকে বৈধ বলে জানিয়ে তা গ্রহণ করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে আদেশ দেয়। ওই রায় আসার পরেই কমিশন ইঙ্গিত দিয়েছিল রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে যাবে তারা। সেই মতো এ দিন শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন জমা দেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ০৩:৩৪
Share: Save:

ই-মনোনয়ন নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে বুধবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে দায়ের হওয়া আবেদনে একাধিক ভুল থাকায় ওই মামলাটি রাত পর্যন্ত গৃহীত হয়নি। ফলে আজ, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে ওই মামলাটি উঠবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে পূর্ণ মাত্রায়।

লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার ও আইনজীবী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ১৪ মে-ই পঞ্চায়েত ভোট হওয়া সম্ভব কি না, তা এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে সুপ্রিম কোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বা অন্য কোনও নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ বহাল থাকবে। তাঁর কথায়, ‘‘এর পরে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন হচ্ছে। সর্বোচ্চ আদালত কী বলবে, সেটাও বিবেচনায় রাখতে হবে।’’

মঙ্গলবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ই-মেলের মাধ্যমে সময়ে জমা দেওয়া মনোনয়নকে বৈধ বলে জানিয়ে তা গ্রহণ করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে আদেশ দেয়। ওই রায় আসার পরেই কমিশন ইঙ্গিত দিয়েছিল রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে যাবে তারা। সেই মতো এ দিন শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন জমা দেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন।

সূত্রের খবর, কমিশনের আবেদনে বলা হয়েছে, ই-মনোনয়ন অবৈধ। কারণ রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন আইনে অনলাইনে মনোনয়ন দেওয়ার কোনও সংস্থান নেই। তা ছাড়া বেশ কিছু ক্ষেত্রে ই-মেলের মাধ্যমে যে মনোনয়ন পাঠানো হয়েছে, তা প্রার্থী নিজে পাঠাননি। অন্য কারও ই-মেল থেকে তা পাঠানো হয়েছে। একটি ই-মেল থেকে একাধিক মনোনয়নও এসেছে। পঞ্চায়েত আইনের ৪৬ নম্বর ধারায় বলা রয়েছে যে, প্রার্থী বা প্রার্থীর প্রস্তাবকারীকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়ন জমা দিতে হবে। তাই ই-মনোনয়ন আইনত গণ্য হতে পারে না। তা ছাড়া ডিভিশন বেঞ্চের রায় মানতে গেলে সময়ে ভোট প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হবে না বলেও যুক্তি দিয়েছে কমিশন। তাই ওই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করে কমিশন। ওই মামলায় সিপিএম, তৃণমূল, রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর-সহ মোট ছ’টি সংস্থাকে শরিক করা হয়েছে।

বুধবার রাত পর্যন্ত অবশ্য ওই আবেদন আদালতে গৃহীত হয়নি। কারণ আবেদন প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। সূত্রের খবর, আবেদনের সঙ্গে মূল ওকালতনামা ও একাধিক জায়গায় স্বাক্ষর না থাকায় সেই ত্রুটি সংশোধন করে ফের তা জমা দিতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার দফতর। রাত পর্যন্ত সেই ত্রুটি সংশোধনের কাজ চলায় এ দিন আদালতের সামনে বিষয়টির দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হন কমিশনের আইনজীবীরা। সূত্রের খবর, আজ, বৃহস্পতিবার সকালে দ্রুত শুনানির দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে আজ দুপুরের পরে বা শুক্রবার মামলাটির শুনানি হতে পারে। এর আগে এ দিন সকালে কমিশনের দায়ের করা মামলার শুনানিতে যাতে তাদের বক্তব্য শোনা হয় সে জন্য ক্যাভিয়েট দাখিল করেন বিজেপি ও সিপিএমের আইনজীবীরা।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য বুধবার বলেছেন, যে দিনই ভোট হোক, লড়াইয়ের জন্য তাঁরা প্রস্তুত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট এবং তারও পরে গণনায় জালিয়াতি— সব কিছুই হতে পারে।’’

হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছেন সূর্যবাবু। তাঁর মতে, ‘‘এই রায় শোনার পরে বহু মানুষ বলছেন, তাঁরা আগে জানলে ই-মনোনয়ন দিতেন। এর পরে যাতে ই-মনোনয়নের ব্যবস্থা চালু করার জন্য নির্বাচনী সংস্কার চেয়ে আন্দোলনের পথ খুলবে। এমনকী, ই-ভোটিং চালু করা উচিত কি না, সেই দাবিও উঠবে।’’ শাসক তৃণমূল অবশ্য ওই রায় সম্পর্কে প্রকাশ্যে কিছু বলেনি। তবে এ নিয়ে দল ‘অখুশি’।

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Elections 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy