শোকে কাতর পরিবার। — নিজস্ব চিত্র।
জানলার ফাঁক দিয়ে দেখা যায়, ঘরে ঝুলছে বছর তেইশের তরুণীর দেহ। দরজার ভিতর থেকে বন্ধ। দরজা ভেঙে পরিবারের লোকজন ভিতরে ঢুকে দেখেন, বছর ছয়েকের এক মেয়ের দেহও ঝুলছে দড়ির ফাঁসে। সাত মাসের আর এক মেয়ের দেহ পড়ে মাটিতে। তার মুখে কাপড়ের টুকরো গোঁজা।
রবিবারের এই ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, দুই মেয়েকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই তরুণী। তবে খুনের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। তরুণীর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, পর পর দুই কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়ায় অশান্তি চলছিল। তার জেরেই এই কাণ্ড।
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থানার তেঁতুলিয়ার খালধারে বছর ছয়েকের মেয়ে তৃষা ও সাত মাসের মেয়ে তিথিকে নিয়ে থাকতেন অপর্ণা বিশ্বাস। তাঁর স্বামী শম্ভু বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থনীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভু এ দিন সকালে কাজে বেরিয়েছিলেন। শ্বশুর-শাশুড়িও ছিলেন বাড়ির বাইরে। বেলা ১২টা নাগাদ শম্ভু ফিরে এসে দেখেন, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। জানলা দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে পান, ঘরের ভিতর কাপড়ের ফাঁসে ঝুলছে অপর্ণার দেহ। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখা যায়, দুই মেয়ের দেহও পাওয়া যায়।
অপর্ণার শ্বশুর ক্ষুদিরামের দাবি, ‘‘সংসারে এমন কোনও অশান্তি ছিল না, কেন মেয়েদের মেরে বৌমা আত্মঘাতী হলেন বুঝতে পারছি না।’’ শম্ভুর বোন কাজললতা মণ্ডলের দাবি, ‘‘দ্বিতীয় বার মেয়ে হওয়ার পর থেকেই কান্নাকাটি করতেন বৌদি। সেই থেকে মনমরা হয়ে থাকতেন। কারণে-অকারণে উত্তেজিত হয়ে পড়তেন।’’
পড়শি গোবিন্দ মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘পর পর মেয়ে হওয়ায় প্রায়ই শ্বশুর-শাশুড়ি এবং স্বামীর সঙ্গে অপর্ণার ঝামেলা লেগে থাকত। গত সপ্তাহে মেয়েদের নিয়ে অপর্ণা বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছিলের। রাস্তা থেকে তাঁদের ফিরিয়ে এনেছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।’’ অর্পণার পরিবারের লোকজনেরও অভিযোগ, কন্যাসন্তান হওয়ায় অত্যাচার চলত অপর্ণার উপরে। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy