Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

সন্তান নেই, তাই কিনেছি, কবুল শিক্ষক দম্পতির

একটি শিশুকে তাঁরা কিনেছেন। কবুল করেছেন মুর্শিদাবাদের এক শিক্ষক দম্পতি। উচ্চ আদালতে তাঁরা জানিয়েছেন, সন্তানহীনতার তীব্র অন্তর্দাহ তাঁদের তিষ্ঠোতে দিচ্ছিল না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ০৩:২২
Share: Save:

একটি শিশুকে তাঁরা কিনেছেন।

কবুল করেছেন মুর্শিদাবাদের এক শিক্ষক দম্পতি। উচ্চ আদালতে তাঁরা জানিয়েছেন, সন্তানহীনতার তীব্র অন্তর্দাহ তাঁদের তিষ্ঠোতে দিচ্ছিল না। সেই জ্বালা জুড়োতেই তাঁরা তিন বছর আগে চুরি যাওয়া এক দিনের একটি সদ্যোজাত শিশুকে কিনেছিলেন।

আদালতে ওই দম্পতির আবেদন, যে-শিশুটিকে তাঁরা তিন বছর ধরে লালনপালন করেছেন, তাকে যেন তাঁদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া না-হয়। ওই সন্তানকে নিয়ে নিলে তাঁদের আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনও গতি থাকবে না। আজ, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে ওই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।

বেহালার শ্রীকৃষ্ণ নার্সিংহোম থেকে কোথায় শিশু পাচার হয়েছে বা কারা শিশু কিনেছেন, সেই খোঁজ করতে গিয়েই ওই দম্পতির খোঁজ পান তদন্তকারীরা। ৪ মে শিশুটিকে আদালতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ওই শিক্ষক দম্পতিকে নির্দেশ দেয় সিআইডি। সেই নির্দেশ পেয়েই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি।

রাজ্যের শিশু অধিকার ও সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী জানান, ওই দম্পতি শিক্ষিত হয়েও টাকা দিয়ে শিশু কিনে অপরাধ করেছেন। এক দিনের শিশুকে এ ভাবে দত্তক নেওয়া যায় না। তাঁদের দায়ের করা মামলার রায়ের উপরে অনেক কিছুই নির্ভর করছে।

দম্পতির আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, সন্তানহীনতার জ্বালায় তাঁর মক্কেলরা এই অন্যায় করেছেন। তবে তাঁদের কাছে এই তিন বছর শিশুটির কোনওই অযত্ন হয়নি। আপন সন্তানজ্ঞানেই তাকে বড় করছেন ওই দম্পতি। মা-বাবা বলতে শিশুটিও তাঁদেরই বোঝে। তাকে যাতে পালক বাবা-মায়ের কাছে রাখা হয় এবং আইনি পথে দত্তক নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, আদালতের কাছে সেই আবেদনই জানানো হবে।

আরও পড়ুন:আতর-সুর্মা-জর্দা ফেরাতে এ বার ব্র্যান্ড চিৎপুর

পালিকা মা জানাচ্ছেন, স্বাভাবিক সময়ের আগে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুটির দৃষ্টি স্বাভাবিক ছিল না, ওজনও ছিল অনেক কম। তাই দরকার ছিল অতি-সতর্ক দেখভালের। ‘‘চিকিৎসকদের পরামর্শে টানা এক মাস বুকে চেপে উত্তাপ দিয়েছি ওকে। তার কি কোনও দাম নেই,’’ প্রশ্ন তুলছেন ওই মহিলা। শিক্ষক দম্পতি আদালতে জানান, শিশুটিও যেন বুঝতে পারছে, তাকে নিয়ে কিছু একটা ঘটছে। সে-ও ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে। মা-বাবাকে ছাড়া সে কাউকেই চেনে না। এখন তাকে আলাদা করে দিলে শিশু আর পালক বাবা-মা, দু’পক্ষেরই বাঁচা মুশকিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Childless couple infant trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE