Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
school

School: গ্যারাজের কাজ শিখে নিয়েছি, আর স্কুল যাব না, কাজ ফেলে ক্লাসে ফিরতে নারাজ দুই বন্ধু

জলপাইগুড়ি শহরের রায়কতপাড়ার মোড়ের একটি বাইক-স্কুটারের গ্যারাজে কাজ করছে দুই বন্ধু, গত ছ’মাস ধরে।

গ্যারাজে বাইক সারানোর কাজে ব্যস্ত সায়ন তন্ত্র।

গ্যারাজে বাইক সারানোর কাজে ব্যস্ত সায়ন তন্ত্র। নিজস্ব চিত্র।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:২৫
Share: Save:

দুই প্রাণের বন্ধু। একসঙ্গে ওঠা-বসা, খেলতে যাওয়া। দু’জনই দশম শ্রেণি। দু’জনেরই বাড়ি জলপাইগুড়ির সরকার পাড়ায়। করোনা আবহে স্কুল বন্ধ হওয়ার পরে দু’জনে একসঙ্গে কাজ শিখতে ঢোকে গ্যারাজে। আজ মঙ্গলবার স্কুল খুলছে এত দিন পরে। কিন্তু স্কুলে যাওয়া হবে না ওদের। এক বন্ধু লাজুক, অন্য জন সোজাসাপ্টা। এই দ্বিতীয় জনই পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, ‘‘গ্যারাজের কাজ অনেকটা শিখে নিয়েছি। আর স্কুল যাব না। তা ছাড়া, পড়তে বসলে আমার ঘুম পায়।’’ লাজুক বন্ধু বলছে, ‘‘স্কুলে গেলে তো কাজ হবে না। কাজের সময় কি নষ্ট করা যাবে!’’

জলপাইগুড়ি শহরের রায়কতপাড়ার মোড়ের একটি বাইক-স্কুটারের গ্যারাজে কাজ করছে দুই বন্ধু, গত ছ’মাস ধরে। দু’জনের কাছ এখন স্কুলের পড়ার থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই দোকানের কাজ। যে ছেলে সোজাসাপ্টা কথা বলে, তার নাম সায়ন তন্ত্র। সে জলপাইগুড়ি শহরের সোনাউল্লা স্কুলের ছাত্র। সায়ন বলছিল, বছর দুয়ের আগে তারা বাবা মারা গিয়েছে। বাড়িতে দাদা-দিদি আছে। তবে তার কাজ শেখাটা জরুরি। সোমবার রায়কতপাড়ার গ্যারাজে কাজের ফাঁকে সে বলে, “বাড়ির সামনে নিজের গ্যারাজ তৈরি করব।”

লাজুক ছেলেটি, এই শহরেরই আনন্দ মডেল স্কুলের রোহিত তন্ত্র বলছিল, ‘‘বাবার রোজগার বেশি নয়। আমি কাজ শিখলে বাড়িতে রোজগার বাড়বে।’’

অথচ এমন ছিল না দেড় বছর আগের স্বপ্ন। দুই বন্ধুই জানাল, তখন তারা ভাবত, স্কুল শেষ করে কলেজ। তার পরে চাকরি করবে। সায়নের এক সময় শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছে ছিল। রোহিত শুধু হাসল, কিছু বলল না। কিন্তু করোনা আবহে স্কুল বন্ধ হতেই তাদের শুরু হল অন্য লড়াই। অনলাইন ক্লাস করার মতো মোবাইল ফোন ছিল না রোহিতের। সায়নের ছিল ঠিকই, কিন্তু তার ‘‘মোবাইলে পড়তে ভাল লাগত না।’’

আজ, মঙ্গলবার স্কুল খুলবে এত দিন পরে। তার জন্য সব জায়গাতেই স্কুলঘর থেকে ঘন্টা, সাফাই হচ্ছে সব কিছু। তাদের স্কুল দু’টিতেও চলছে তোড়জোর। রোহিত ও সায়ন তখন গ্যারাজে মোছামুছি করছে গাড়ির যন্ত্রপাতি, বদলাচ্ছে ইঞ্জিনের তেল, শক্ত করে এঁটে দিচ্ছে চাকার স্ক্রু।

পাঠ্য বইয়ের পাতা আর ওল্টাবে না তারা।

অন্য বিষয়গুলি:

school Coronavirus in West Bengal Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy