২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে যাওয়ার সময়ে। ফাইল চিত্র
প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ গুরুদাস দাশগুপ্তের প্রয়াণে শোকাহত পশ্চিম মেদিনীপুরও। এ জেলায় তিনি বারবার ছুটে এসেছেন। দুর্যোগে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিজের হাতে ত্রাণ বিলি করেছেন।
সংসদীয় রাজনীতিতে গুরুদাসবাবুর প্রবেশ ১৯৮৫ সালে। ওই বছরই রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। গীতা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরে ২০০০ সালে পাঁশকুড়া লোকসভার উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হন তিনি। তবে সে বার তৃণমূল প্রার্থী, কলকাতা বন্দরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিক্রম সরকারের কাছে পরাজিত হন। কেশপুরে তখন তৃণমূলের মহম্মদ রফিক- বাহিনীর দাপট। পাঁশকুড়া- লাইনের সূচনা তখনই। অবশ্য ওই লাইন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বছর ঘুরতেই কেশপুর পুনর্দখল করে সিপিএম। ২০০৪ সালে সেই পাঁশকুড়া থেকে জিতেই লোকসভার সাংসদ হন গুরুদাসবাবু। ২০০৯ সালে জেতেন ঘাটাল (পূর্বতন পাঁশকুড়া) লোকসভা কেন্দ্র থেকে। লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে তিনি পাঁচবারের সাংসদ ছিলেন। ২০১৪ সালে ঘাটাল কেন্দ্রে তাঁকেই প্রার্থী করতে চেয়েছিল দল। তবে স্বাস্থ্যের কারণে তিনি দাঁড়াতে চাননি। ওই আসনে প্রার্থী হন সন্তোষ রাণা। তবে তাঁকে হারতে হয় তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবের কাছে। সন্তোষবাবু দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রাক্তন সম্পাদক। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘গুরুদাসদার প্রয়াণে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। এমনও হয়েছে, দুর্যোগ নিয়ে হয়তো আমরা ততটা সতর্ক নই। উনি ফোন করেছেন, বলেছেন খোঁজ নাও। নিজেও দুর্গত এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন। মেডিক্যাল ক্যাম্প করিয়েছেন।’’ তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘গুরুদাসদা বক্তৃতায় কখনও অসাংবিধানিক শব্দ ব্যবহার করেননি। শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে লড়াই করেছেন। এলাকার উন্নয়নেও সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিতেন উনি।"
গুরুদাসবাবুর প্রয়াণে শোকাহত বিরোধীরাও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, ‘‘শ্রমিক নেতা হিসেবে ওঁকে সবাই মনে রাখবেন। সুবক্তা ছিলেন। শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে লড়াই করেছেন।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৌমেন খানের কথায়, ‘‘ওঁকে মানুষ মনে রাখবেন ওঁর কাজের জন্যই।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘উনি বলিষ্ঠ নেতা ছিলেন।’’
২০০০ সালে পাঁশকুড়া (অধুনা ঘাটাল) লোকসভার উপ-নির্বাচনে কেশপুরে গুরুদাসবাবুকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের মহম্মদ রফিক ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। এ বার লোকসভা ভোটের পরে সেই রফিক কেশপুরে ফের তৃণমূলের সক্রিয় দায়িত্বে। রফিক বলছেন, ‘‘উনি ভাল মানুষ ছিলেন। ওঁকে শ্রদ্ধা করি।’’ সেদিনের সেই গোলমালের প্রসঙ্গে তৃণমূলের এই নেতার জবাব, ‘‘ওই দিনের কথা মনে রয়েছে। সরুইয়ের বুথের সামনে ওঁর সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়েছিল। আমি কিছু রাজনৈতিক কথা বলেছিলাম। ওটা রাজনীতির ব্যাপার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy