Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
tant

Tant Worker: তসর বোনা হাতে বাস্তব তেলেভাজাই

৫০ বছর আগে দোমহোনার তসর যেত আরব, আফগানিস্তানের মতো দেশগুলিতে। তাঁরা শোনাতে শুরু করেন, কাবুলিওয়ালাদের পাগড়ির জন্য তসরের চাহিদা ছিল খুব।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

মেহেদি হেদায়েতুল্লা
করণদিঘি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২২ ০৫:৫১
Share: Save:

যে আঙুল এক সময় তসরের শাড়ি বুনত, এখন সেগুলি বেসনগুলে তেলেভাজা বানায়। যাঁদের পূর্বপুরুষদের শাড়ি ভিন্‌দেশে পাড়ি দিত, তাঁরাই এখন পেট চালাতে বাধ্য হয়েছেন আনাজ বিক্রি করতে।

উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির দোমহোনার তসর শিল্পীদের সোনালি অতীত এখন বয়স্কদের গলাতেই শুধু শোনা যায়। তরুণ প্রজন্ম ওই শিল্প থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। রাজ্য সরকার ক্লাস্টার তৈরি করে পুনরুজ্জীবনের চেষ্টা করেছিল। তাঁতশিল্পীদের মতে, তা-ও সফল হয়নি। তাঁত ছেড়ে পেটের চিন্তায় তাই অন্য পেশায় অনেকেই ভিন্ রাজ্যে চলে গিয়েছেন।

শিল্পীদের অভিযোগ, সমস্যা অনেক— সরকারি সাহায্য না পাওয়া, কাঁচামালের অভাব, সেই সঙ্গে চায়না সিল্কের বাজার দখল। তবে এত কিছুর পরেও হাতে চালানো তাঁতে শাড়ি-কাপড় বুনে উপযুক্ত দামে ক্রেতা পাওয়া যায় না। এমন নানা সমস্যায় করণদিঘির তসর শিল্প গত কয়েক দশক ধরে ধুঁকছে।

রহমত আলি বর্তমানে তসর বোনা ছেড়ে সংসার চালাতে তেলেভাজার দোকান দিয়েছেন। সকাল-সন্ধ্যায় ঠেলাগাড়িতে স্থানীয় দোমহোনা হাটের সামনে তাঁকে তেলেভাজা বিক্রি করতে দেখা যায়। সময় যত গড়িয়েছে, তসর বোনা ছেড়ে, রহমতের মতো অন্য পেশায় চলে যাওয়ার তালিকাটা কেবলই বড় হয়েছে করণদিঘিতে। রহমতের কথায়, ৫০ বছর আগে দোমহোনার তসর যেত আরব, আফগানিস্তানের মতো দেশগুলিতে। তাঁরা শোনাতে শুরু করেন, কাবুলিওয়ালাদের পাগড়ির জন্য তসরের চাহিদা ছিল খুব। বহু কাবুলিওয়ালা এসে অগ্রিম টাকা দিয়ে, প্রচুর সংখ্যায় তসরের থানের বরাত দিয়ে যেতেন। তসরের থান বুনে ভালই আয় করতেন তাঁতিরা। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কমে গিয়েছে কাবুলিওয়ালাদের যাতায়াত। তার পর ধীরে ধীরে নানা সমস্যায় রুগ্ন হয়ে পড়ে বাংলার এই ক্ষুদ্র কুটির শিল্প। স্থানীয় বিধায়ক গৌতম পাল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার তাঁত শিল্পকে বাঁচানোর জন্য নানা প্রকল্পের সূচনা করেছে।’’ তসর শিল্প ও শিল্পীদের বাঁচাতে তিনি দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

tant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE