জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেতে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী কোনও রাজনৈতিক দলকে যে সব শর্ত পূরণ করতে হয়, তৃণমূল তাতে ব্যর্থ বলে দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী। এই কারণে তৃণমূলের কাছ থেকে জাতীয় দলের তকমা কেড়ে নেওয়ার দাবি জানালেন তিনি। বৃহস্পতিবার এই মর্মে টুইট করেন বিরোধী দলনেতা। পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের বক্তব্য, ‘‘ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই বিরোধী দলনেতা এ সব বলছেন। তাঁর কথার কোনও যুক্তি নেই।’’
বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডের বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে। ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ে ভোটে লড়েছে বাংলার শাসকদল। ত্রিপুরায় একটি আসনেও খাতা খুলতে পারেনি জোড়াফুল শিবির। তবে প্রথম বার মেঘালয়ে লড়ে ৫টি আসনে জিতেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এই দুই রাজ্যে তৃণমূলের ফল তুলে ধরে জাতীয় দলের তকমা নিয়ে সরব হয়েছেন শুভেন্দু।
আরও পড়ুন:
টুইটারে জাতীয় দল হওয়ার নিয়মাবলী তুলে ধরে যুক্তি দেখিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। শুভেন্দুর দাবি অনুযায়ী, লোকসভার মোট আসনের ২ শতাংশ দখলে থাকলে জাতীয় দলের স্বীকৃতি মিলবে। তবে সেই আসনগুলি ছড়িয়ে থাকতে হবে অন্তত ৩ রাজ্যে। এই যুক্তি দিয়ে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, লোকসভায় তৃণমূলের সাংসদরা শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের। অন্য কোনও রাজ্যের নন। ফলে এই শর্ত এ ক্ষেত্রে পূরণ হয়নি। জাতীয় দলের স্বীকৃতি ধরে রাখতে গেলে ৪ বা তার বেশি রাজ্যে লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে কোনও দলের প্রার্থীদের অন্তত ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। এই নিয়ম অনুযায়ীও তৃণমূল শর্ত পূরণ করতে পারেনি বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু।
এই প্রসঙ্গেই ত্রিপুরা, গোয়া এবং মেঘালয়ে তৃণমূলের ভোট শতাংশের পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন বিরোধী দলনেতা। কমিশনের তথ্য মোতাবেক ত্রিপুরায় তৃণমূলের ভোট শতাংশ .৮৮, গোয়ায় এই পরিসংখ্যান ৫.২১ শতাংশ এবং মেঘালয়ে ১৩.৭৮ শতাংশ। ২০২১ সালের পর পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এই ৩ রাজ্যে লড়েছিল জোড়াফুল। শুভেন্দুর দাবি, জাতীয় দলের তকমা ধরে রাখতে হলে অন্তত ৪টি রাজ্যে আঞ্চলিক দলের স্বীকৃতি পেতে হবে। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ এবং মেঘালয়ে তৃণমূলের বিধায়ক রয়েছে। তাই এই শর্ত পূরণও হয়নি বলে দাবি তাঁর।
জাতীয় দলের মর্যাদা কেন প্রত্যাহার করা হবে না, তার কারণ দর্শাতে অতীতে তৃণমূলকে নোটিস দিয়েছিল কমিশন। জবাবি চিঠিতে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছিল, তারা জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়েছিল ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের পরে। কমিশনেরই পুরনো নিয়ম অনুযায়ী, ওই স্বীকৃতি আবার পর্যালোচনায় আসতে পারে ২০২৪ সালে। টুইটারে এই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু। তৃণমূল সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত আঞ্চলিক দল বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি।
I request the Hon'ble Chief Election Commissioner of India Shri @rajivkumarec Ji (IAS) & the @ECISVEEP to derecognise @AITCofficial as a National Party as they don't fulfill the criteria of being one.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) March 2, 2023
TMC is simply the most corrupt regional party. Thats it:- pic.twitter.com/DmPS6D3Gj4
আরও পড়ুন:
তবে নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় শর্তপূরণের পরই তৃণমূল জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়েছে বলে দাবি করেছেন দলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় শর্তপূরণের পরেই তৃণমূল সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি পেয়েছে। তৃণমূল সেই শর্তগুলি অব্যাহত রেখেছে। তাই আমাদের জাতীয় দলের তকমা বহাল থাকছে।’’ এই প্রসঙ্গে শুভেন্দুকে নিশানা করে বলেছেন, ‘‘লোডশেডিংয়ে জেতা বিরোধী দলনেতা প্রতিহিংসার রাজনীতি করছেন।ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এ ধরনের কথা বলেছেন। তার এই কথার যুক্তি আছে বলে মনে করি না।’’