ফাইল চিত্র।
ভবানীপুরে নির্বাচন ঘোষণার পরে বিজেপির মধ্যে বিভ্রান্তি ক্রমে স্পষ্ট হচ্ছে। তারা কী করবে, ভোটে যাবে, না আইনি পথে নির্বাচন ঠেকানোর চেষ্টা করবে, সেটা নিয়ে দোলাচলতা রবিবার আরও বাড়ে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এক বার বলেন, তাঁরা আইনি পরামর্শের কথা ভাবছেন। তার পরেই বলেন, তাঁরা ভবানীপুরে উপনির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘আইনকে ঢাল করে বিজেপি ময়দান ছেড়ে চলে যাবে না।’’
এই পরিস্থিতিতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, দল বললে নন্দীগ্রামের মতো ভবানীপুরেও তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে প্রস্তুত।
তৃণমূল অবশ্য এ দিনই আনুষ্ঠানিক ভাবে ভবানীপুর, শমসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। ভবানীপুরে তাদের প্রার্থী প্রত্যাশিত ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর শমসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরে তাদের প্রার্থী আমিরুল ইসলাম এবং জাকির হোসেন। বিধানসভা ভোটেও তাঁরাই ওই দুই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু তখন অন্য দুই প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় ওই দুই কেন্দ্রে বিধানসভা ভোট হয়নি। বিজেপি অবশ্য এখনও ভবানীপুরের প্রার্থী ঠিক করতে পারেনি। দলীয় সূত্রের খবর, আগামিকাল, মঙ্গলবার তারা এ নিয়ে বৈঠকে বসবে। রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ, ভবানীপুর-সহ তিন কেন্দ্রে বিজেপি সুবিধেজনক অবস্থায় নেই।
এ দিকে, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক (দক্ষিণ) এ দিন তাঁর কার্যালয়ে সর্বদল বৈঠক করেন। সেখানে সব দলকে বলে দেওয়া হয়, উপনির্বাচনের মনোয়ন থেকে ফল প্রকাশ পর্যন্ত— পুরো পর্বে কোভিড বিধি কঠোর ভাবে মানতে হবে। দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও এ দিন দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, কোভিড বিধি মানার ক্ষেত্রে কোনও শিথিলতা থাকলে ভোটের প্রচারে কমিশন বাধা দিতে পারে। সুতরাং, কোভিড বিধি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।
এ দিকে ভোট করার বিরোধিতা করতে গিয়ে দিলীপবাবু এ দিনও ফের বলেছেন, ‘‘লোকাল ট্রেন চলছে না। বাজার-হাট বন্ধ। লকডাউন আছে। রাতে কারফিউ আছে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন কী করে মেনে নিচ্ছে যে, ভোটের উপযোগী পরিবেশ আছে? পুরসভার নির্বাচন হচ্ছে না। আমরা সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন বলেছিল, করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নেই। অথচ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন বলছে, নির্বাচন হোক!’’ এই প্রেক্ষিতে দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘মনে হচ্ছে, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হয়ে গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়ে মুখ্যমন্ত্রী করে দেওয়া।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতির আরও প্রশ্ন, ‘‘বাকি চার কেন্দ্রে যে কমিশন উপনির্বাচন ঘোষণা করল না, সেখানকার জনগণের কী অপরাধ? তাঁরা কেন নিজেদের প্রতিনিধি বাছার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন?’’
উপনির্বাচন ঠেকাতে মামলা করার ব্যাপারে বিজেপি কি কারও সঙ্গে ইতিমধ্যেই পরামর্শ করেছে? দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘এখনও সে সব কিছু হয়নি। আমার মনে হয়, মামলা করার অবকাশ আছে। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করব। তাঁরা যেমন বলবেন, তেমন হবে।’’
তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষের অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি জনবিচ্ছিন্ন। তাই এ সব বলছে। এখানে এখন কোভিড পরিস্থিতি ভাল। তাই যে ক’টা কেন্দ্রে ভোট হওয়ার কথা, সব ক’টাতেই আমরা ভোট চাইছি। নির্বাচন কমিশন সব দলের কথা শুনে তার পরে এই সময়ে ভবানীপুরে উপনির্বাচন ঘোষণা করেছে। এতে বিজেপি নেতাদের এত গায়ের জ্বালা কেন? কমিশন কাউকে দয়া করছে না। মুখ্যমন্ত্রীকে ছ’মাসের মধ্যে জিতে আসার সুযোগ দেওয়া নিয়ম। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করতেই ২১৩টি আসনে মানুষ তৃণমূলকে জিতিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy