Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Alapan Bandyopadhyay

আগের অবস্থান বদলে টুইট, আলাপনের কড়া শাস্তি দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী

শুভেন্দুর টুইটের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আগে তো শুভেন্দুকে নারদা আর সারদা মামলায় গ্রেফতার করা উচিত!’’ 

আলাপনপর্ব নিয়ে রাজ্যকে আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর।

আলাপনপর্ব নিয়ে রাজ্যকে আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২১ ১৫:৪৮
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া শাস্তির দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার তিনি একাধিক টুইট করে বলেছেন,‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের পর্যালোচনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এড়ানো কি মুখ্যসচিবের শোভা পায়? না, পায় না’। প্রসঙ্গত, গত শনিবারই ওই প্রসঙ্গে শুভেন্দু প্রকারান্তরে আলাপনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন তার মর্মার্থ— আলাপনের কিছু করার ছিল না। তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর কথা মতো চলতে হয়েছে। এ রাজ্যের সমস্ত আমলাদেরই একই অবস্থা। অর্থাৎ, আলাপন মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ‘বাধ্য হয়ে’-ই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। তবে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠদের দাবি, তিনি আদৌ অবস্থান বদলাননি। বিরোধী দলনেতা হিসাবে তিনি মনে করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত না থেকে আলাপন তাঁর সার্ভিস রুল ভেঙেছেন। তাই তাঁর কড়া শাস্তি হওয়া উচিত। উনি সেই দাবিই তুলেছেন।

ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবারই আলাপনকে শো কজ করা কেন্দ্রীয় সরকারের একটি চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে আলাপনের কাছ থেকে ওই বৈঠকে অনুপস্থিত থাকার ব্যাখ্যা এবং কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে। চিঠিটি আলাপনের কাছে এসেছে সোমবার। চিঠিতে বলা হয়েছে, আলাপন যেন তিন দিনের মধ্যে সশরীরে গিয়ে ওই বিষয়ে তাঁর লিখিত জবাব জমা দেন। ঘটনাচক্রে, তার পরেই আলাপনের কড়া শাস্তির দাবি করে শুভেন্দুর টুইটটি করা হয়েছে। তবে টুইটে আলাপনের পাশাপাশিই শুভেন্দু কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। মমতাকে যতবার তিনি ‘মুখ্যমন্ত্রী’ বলে উল্লেখ করেছেন, তত বারই তার পাশে বন্ধনীতে ‘বিধায়ক নন’ শব্দবন্ধ উল্লেখ করেছেন। যা থেকে পরিষ্কার যে, শুভেন্দু নন্দীগ্রামে মমতার পরাজয়ের কথা উল্লেখ করতে চেয়েছেন। মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন, সামান্য ভোটে হলেও মমতা সেখানে পরাজিত হয়েছেন। যা থেকে দু’পক্ষের সঙ্ঘাত আরও জোরাল হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ঘটনাচক্রে। শুভেন্দুও প্রধানমন্ত্রীর কলাইকুন্ডার বৈঠকে ছিলেন। এবং তাঁর থাকাই মমতার বৈঠকে না থাকার কারণ বলে টুইট করে জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শুভেন্দু টুইটে লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে অলীক কুনাট্য রঙ্গ চলছে। নিজের অহংবোধ এবং অনুশাসনহীন মুখ্যসচিবকে রক্ষা করতে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভাঙতে উদ্যত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (বিধায়ক নন)। উনি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর এবং সংবিধানের অসম্মান করছেন’। পরের টুইটে শুভেন্দুর প্রশ্ন, ‘অবসরপ্রাপ্ত মুখ্যসচিব কী এমন গোপন কথা জানেন যে তাঁর জন্য স্বর্গ-মর্ত্য ছুটে বেড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী (বিধায়ক নন)’। তৃতীয় একটি টুইটে ‘বিধিভঙ্গের’ জন্য আলাপনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। বস্তুত, আলাপনকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা নিয়োগ করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। তাঁর মতে, ‘করদাতাদের পয়সা লুঠ করা তৃণমূলের নেশা। অবসরপ্রাপ্ত মুখ্যসচিব বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী (বিধায়ক নন)-র উপদেষ্টা এবং তিনি আড়াই লক্ষ টাকা মাসিক বেতন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা ভোগ করবেন। করদাতাদের কষ্টার্জিত পয়সা নিশ্চিত ভাবেই এর থেকে অনেক ভাল উপায়ে খরচ করা যেত’।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার কলাইকুন্ডা-কান্ডের পর শনিবার শুভেন্দুর কণ্ঠে রাজ্যের আমলাদের নিয়ে ‘সহানুভূতি’র সুরই ছিল। রাজ্যের আমলারা ‘অসহায়’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আইএএস-আইপিএস অফিসাররা কোড অব কনডাক্ট জানেন। কিন্তু আপনি (মমতা) তা পালন করতে দেন না। এই অসহায় পরিস্থিতির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের আমলারা চলছেন।’’ শুভেন্দুর ওই টুইট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। আলাপনের কঠোর শাস্তি দাবি করে শুভেন্দুর টুইটের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আগে তো শুভেন্দুকে নারদা আর সারদা মামলায় গ্রেফতার করা উচিত!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE