Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Suvendu Adhikari

মমতার উত্থানে সহায় এনডিএ, দাবি শুভেন্দুর

তাঁর দাবি, ছোট আঙারিয়া থেকে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম— এক একটি মাইলফলক তৃণমূল নেত্রী গড়তে পেরেছেন এ রাজ্যে তাঁর মতো নেতা ছিলেন বলে, আর দিল্লির এনডিএ সরকার পাশে ছিল বলে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৫৮
Share: Save:

বিরোধী নেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে যে সব আন্দোলনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফল্য বলে ধরা হয়, সে সবের কৃতিত্বও পুরনো দলনেত্রীকে দিতে নারাজ শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, ছোট আঙারিয়া থেকে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম— এক একটি মাইলফলক তৃণমূল নেত্রী গড়তে পেরেছেন এ রাজ্যে তাঁর মতো নেতা ছিলেন বলে, আর দিল্লির এনডিএ সরকার পাশে ছিল বলে।

সোমবার ছোট আঙারিয়া দিবসে গড়বেতার সভামঞ্চ থেকে অতীত উস্কে শুভেন্দু বলেন, ‘‘২০০১ সালের ৩ জানুয়ারি কেশপুরে বিজেপি-তৃণমূল যৌথ সভা ছিল। অনেকে আক্রান্ত হলেন, বাস ভাঙচুর হল। পরদিন ছোট আঙারিয়ার ঘটনা। সে দিন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীজি, ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার লালকৃষ্ণ আডবাণীজি এনডিএ-র প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিলেন। ঘটনার সিবিআই তদন্তও হয়। আর সিঙ্গুরের অনশন ভেঙেছিলেন রাজনাথ সিংহের হাতে সরবত খেয়ে। নন্দীগ্রাম আন্দোলনে আমি ছিলাম। সেই সময়ও লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজরা এসেছিলেন।’’ পুরনো সে সব আন্দোলনে নিজের ভূমিকা স্মরণ করিয়ে শুভেন্দুর সংযোজন, ‘‘তখন তো সব ঘরে ঢুকে গিয়েছিল। আমি অক্সিজেন দিয়ে আবার সব প্রতিষ্ঠা করেছিলাম।’’ এর পাল্টা হিসেবে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘বিশ্বাসঘাতক, মীরজাফরের মুখে এখন বড় বড় কথা। এই রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষ সে কথা জানেন বলেই তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। কিছু লোক দল ছেড়ে গিয়ে লজ্জাহীন ভাবে মিথ্যা বলছে।’’

২০০১ সালের ৪ জানুয়ারি রাতে ছোট আঙারিয়া গ্রামে তৃণমূল কর্মী বক্তার মণ্ডলের বাড়িতে ‘সিপিএম গণহত্যা’ চালায় বলে অভিযোগ। প্রতি বছরই দিনটি ছোট আঙারিয়া দিবস হিসেবে স্মরণ করে তৃণমূল। শুভেন্দু গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার পরে এ বার বিজেপিও এই দিনটিতে গড়বেতায় সভার আয়োজন করে। পাল্টা হিসেবে তৃণমূলও এ বার আর ছোট আঙারিয়া গ্রামে স্মরণানুষ্ঠান না করে গড়বেতার বোষ্টমমোড়ে বড় সভা করেছে। জোড়া সভা ঘিরে এ দিন গড়বেতা ছিল সরগরম। ভরা মাঠে দু’পক্ষই পরস্পরকে বাক্যবাণে বিঁধেছে।

রবিবার জঙ্গলমহলে প্রথম প্রকাশ্য সভা ছিল শুভেন্দুর। দিলীপ ঘোষের বাড়ির এলাকা গোপীবল্লভপুরের বেলিয়াবেড়ার ওই সভায় দিলীপ-শুভেন্দু দু’জনে থাকলেও ভিড় জমেনি। এ দিন অবশ্য গড়বেতায় বিজেপির সভায় মাঠ ছিল ভর্তি। তৃণমূলের সভাতেও বিস্তর ভিড় হয়। সভায় বারবারই এনডিএ-তৃণমূলের পুরনো সম্পর্ক মনে করিয়ে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। কখনও বলেছেন, ‘‘রাজ্যে গণতন্ত্র রক্ষার্থে বিজেপি বারবারই সাথ দিয়েছে তৃণমূলকে। না হলে ২০০৩ সালেই উঠে যেত দলটা।’’ আবার কখনও নাম না করে মমতার উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘সে দিন ভারতরত্ন অটলবিহারী বাজপেয়ী দরজাটা খুলে না দিলে মাননীয়া আপনার পার্টির ঘাসটাই অনেক আগে উপড়ে চলে যেত।’’

কৃষি আইনের পক্ষেও সওয়াল করেন শুভেন্দু। সভায় ছিলেন ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শমিত দাস প্রমুখ। মঞ্চের সামনে তৈরি অস্থায়ী শহিদ বেদিতে ছোট আঙারিয়ার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে মাল্যদান করেন শুভেন্দুরা। সভায় তৃণমূল ও সিপিএম ছেড়ে কয়েক জন বিজেপিতে যোগ দেন।

তৃণমূল নেতৃত্ব বোষ্টমমোড়ের সভায় বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। মঞ্চ থেকে জেলা সভাপতি অজিত মাইতির ঘোষণা, ‘‘একুশের নির্বাচনে বিজেপি ভ্যানিশ হয়ে যাবে। মানুষ ওদের বিরুদ্ধে ফুঁসছেন।’’ সভায় ছিলেন দীনেন রায়, আশিস চক্রবর্তী, নির্মল ঘোষরা। ছোট আঙারিয়ার ঘটনায় নিহতদের পরিজনদের হাতে সাহায্য তুলে দেওয়া হয়। তার আগে স্মারকস্তম্ভে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নেতৃবৃন্দ।

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy