Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Siliguri Corridor

সুরক্ষা-প্রশ্নে শিলিগুড়ি করিডরে সায় রাজ্যের

প্রশাসনিক এবং কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, চিন, ভুটান, বাংলাদেশ এবং নেপালের সীমান্তের একশো কিলোমিটারের মধ্যে থাকায় শিলিগুড়ি করিডর অতি গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে এই এলাকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:০২
Share: Save:

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে দেশের যোগসূত্র ‘চিকেন’স নেক করিডর’ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে নবান্নের শীর্ষ মহল। প্রশাসনের খবর, রাজ্য সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চললেও ‘চিকেন’স নেক করিডর’-এ (যাকে শিলিগুড়ি করিডরও বলা হয়) বিপুল পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের অপেক্ষায় আটকে ছিল। ওই প্রকল্পের জাতীয় এবং কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে, ছাড়পত্র দেওয়ার আগে কেন্দ্রের এই শংসাপত্র দাবি করেছিল রাজ্য। ‘প্রশাসনিক জট’ কাটাতে সম্প্রতি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেরও দ্বারস্থ হয়েছিল সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রকও (মর্থ)। তবে সূত্রের দাবি, কেন্দ্রের সেই শংসাপত্রের অপেক্ষায় না থেকে সম্প্রতি ওই প্রকল্পের কাজে অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য। প্রশাসনের একাংশের মতে, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং চিনের সঙ্গে ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের এই অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রসঙ্গত, ওই প্রকল্পে তিস্তা নদীর উপরে করোনেশন ব্রিজের বিকল্প আরও একটি নতুন সেতু তৈরির পরিকল্পনাও আছে। জঙ্গলের এলাকার মধ্যে দিয়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি উড়ালপথ (এলিভেটেড করিডর) তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর সমান্তরালে সেবকের সেনা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত রাস্তাটি আরও চওড়া করার পরিকল্পনা আছে। তার সঙ্গে যুক্ত থাকবে জাতীয় সড়ক ১০ এবং ১৭। তাই সিকিমের নাথু লা-য় (ভারত-চিন সীমান্ত) সহজে পৌঁছনো যাবে।

প্রশাসনিক এবং কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, চিন, ভুটান, বাংলাদেশ এবং নেপালের সীমান্তের একশো কিলোমিটারের মধ্যে থাকায় শিলিগুড়ি করিডর অতি গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে এই এলাকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। তবে ওই এলাকার পরিকাঠামো আধুনিক নয়। চিনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন আছে। আবার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতেও পরিকাঠামোর দ্রুত উন্নয়ন জরুরি।

মর্থ সূত্রের দাবি, প্রকল্পটি একাধিক বনাঞ্চল, বন্যপ্রাণ এলাকার মধ্যে থাকায় বন, পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত ছাড়পত্রের প্রয়োজন ছিল। সেই ছাড়পত্র দিতেই প্রকল্পটির জাতীয় সুরক্ষা এবং কৌশলগত গুরুত্ব সংক্রান্ত কেন্দ্রের শংসাপত্র চেয়েছিল রাজ্য। সম্প্রতি মর্থ-এর সচিব ভি উমাশঙ্কর দেশের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশকুমার সিংহকে লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন, সাধারণত বনাঞ্চল এবং বন্যপ্রাণ থাকা এলাকায় পরিকাঠামোর কাজ করতে হলে বন, পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণ সংক্রান্ত সরকারি ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ‘বন (সংরক্ষণ ও সমবর্ধন) অধিনিয়ম’ এবং ‘বন (সংরক্ষণ) সংশোধনী আইন’ অনুযায়ী, দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত, নিয়ন্ত্রণ রেখা বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার থেকে আকাশপথে (এরিয়াল) প্রকল্প এলাকার দূরত্ব একশো কিলোমিটারের মধ্যে হলে কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ আলোচনায় তা ‘কৌশলগত এবং জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে অতি প্রয়োজনীয়’ হিসেবে গণ্য হবে। সে ক্ষেত্রে ওই অনুমতি লাগবে না। প্রতিরক্ষা সচিবকে উমাশঙ্করের অনুরোধ ছিল, এই সব দিক থেকে ‘চিকেন নেক করিডর’ প্রকল্পটিকে ‘কৌশলগত এবং জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে জরুরি’ বলে স্বীকৃতি দিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তবে তার আগেই রাজ্য ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের শংসাপত্রের প্রয়োজন নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

India-Bangladesh Border Border Security Force West Bengal government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy