Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
BNP- Jamaat-e-Islami

ফাটল আরও চওড়া বিএনপি-জামায়াতের

বৃহস্পতিবারের এই আলোচনায় ঐক্য নষ্ট হতে পারে আশঙ্কা করে প্রথমে তাতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বৃহত্তম দল বিএনপি।

বাংলাদেশে বিএনপি- জামায়েতের ফাটল আরও বাড়ল।

বাংলাদেশে বিএনপি- জামায়েতের ফাটল আরও বাড়ল। —প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:১৩
Share: Save:

ঐক্য রক্ষার কথা বলা হলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে মতভেদ ও ফাটলকে বহু গুণ বাড়িয়ে দিল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ডাকা জুলাই আন্দোলনের ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা।

বৃহস্পতিবারের এই আলোচনায় ঐক্য নষ্ট হতে পারে আশঙ্কা করে প্রথমে তাতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই মুহূর্তে বাংলাদেশের বৃহত্তম দল বিএনপি। কিন্তু পরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদকে পাঠানো হয়। তিনি উঠতে বসতে ঐক্যের কথা বললেও বৈঠকে প্রতিটি বিষয়ে ভিন্নমত হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন বৈঠক সেরে বেরিয়ে বলেন, “আমরা প্রশ্ন করেছি, সাড়ে ৫ মাস পরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের সত্যিকারের কোনও প্রয়োজন ছিল কি? এর রাজনৈতিক গুরুত্ব, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং আইনি গুরুত্ব কী? ফ্যাসিবাদ-বিরোধী যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে সেখানে কোনও ফাটল যাতে সৃষ্টি না হয়, তা দেখতে হবে।” এই বিষয়ে জামায়াত প্রতিনিধিদের নেতা মিঞা গোলাম পরোয়ার বলেন, “প্রশ্ন হল, জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের জন্য কেন ছাত্রদের তাগাদা খেয়ে পাঁচ মাস পরে আমাদের আলোচনায় বসতে হবে। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় কেন অগ্রাধিকার পাবে না?”
অর্থাৎ, ঘোষণাপত্রের যৌক্তিকতা নিয়ে বিএনপি যখন প্রশ্ন তুলছে, জামায়াত তাকেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলছে।

ইউনূসের দফতর থেকে যথাযথ ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি অভিযোগ করে বৈঠকে আসেননি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও এলডিপির প্রতিনিধিরা। সরকারের তরফে এ দিনের বৈঠকের ক’দিন আগে ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া দলগুলির কাছে পাঠানোর কথা থাকলেও অনেক দলের প্রতিনিধিই জানিয়েছেন, তাঁরা তা হাতে পাননি। তবে প্রায় সব দলই দাবি করেছে, কোটা-বিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে গণআন্দোলনের সূত্রপাত— এই ভাষ্য তারা মানে না।

বিএনপি দাবি করেছে— শুধু জুলাই-অগস্ট নয়, আওয়ামী লীগের ১৬ বছরে তাদের যত নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন বা গুম হয়েছেন, সবার নাম শহিদের তালিকায় তুলতে হবে। বিএনপি সরকার-বিরোধী যে সব আন্দোলন করেছে, সেগুলির উল্লেখও হাসিনা-উচ্ছেদের সময়পঞ্জিতে রাখতে হবে। জামায়াতে ইসলামী দাবি করে, একাত্তরে গণহত্যার দায়ে তাদের যে সব নেতাকে যুদ্ধাপরাধ আদালতে বিচার করে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, তাদের নামও জুলাই-শহিদের তালিকায় নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনও দলই যে জামায়াতের এই দাবি মানবে না, তা স্পষ্ট। সুযোগ পেয়ে হেফাজতপন্থীরা দাবি জানিয়েছে, ২০১৩ সালে ঢাকার শাপলা চত্বরে হাসিনা সরকারের পুলিশ তাদের অবস্থান ওঠাতে গুলি চালায়। তাতে অগণিত হেফাজতি সমর্থক মারা যান। এদের নামও জুলাইয়ের শহিদের তালিকায় যোগ করতে হবে। উল্লেখ্য, এমন কোনও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার কথাই মানেনি তৎকালীন সরকার।

বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঐক্য অক্ষুণ্ণ রেখে একটা ঘোষণাপত্র রচনা করা হবে। এবং তা নিয়ে তাড়াহুড়ো করা হবে না। কিন্তু ঐক্য কি রইল?

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Unrest Muhammad Yunus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy