দার্জিলিঙের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে উস্কানিমূলক খবর, মন্তব্য বা ছবি ছড়ানো ঠেকাতে একটি ফেসবুক পেজ বন্ধ করতে চেয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এই নিয়ে একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট শুক্রবার ওই ফেসবুক পেজ বন্ধের সুপারিশ বা নির্দেশের উপরে আট সপ্তাহের স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
পেজ বন্ধের ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ পদ্ধতি মানেনি বলে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন ফেসবুক-কর্তৃপক্ষ। এ দিন সেই মামলার শুনানিতে এই অভিযোগকে মান্যতা দিয়েছে উচ্চ আদালত। ফেসবুক-কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরার আর্জি শুনে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী মন্তব্য করেছেন, পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। এই বিষয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রেরও হলফনামা তলব করেছেন তিনি।
হাইকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, আইনগত পদ্ধতি মেনে কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কাছে কোনও সুপারিশ করা হলে তথ্যপ্রযুক্তি আইন মেনে মন্ত্রক সেই সুপারিশ বিবেচনা করতে পারে বলেও বিচারপতি এ দিন তাঁর লিখিত নির্দেশনামায় জানিয়ে দিয়েছেন। রাজ্য প্রশাসনের খবর, সম্প্রতি গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের সময় একটি ফেসবুক পেজে প্ররোচনামূলক খবর ও ছবি ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল। প্রশাসনিক কর্তারা মনে করেছিলেন, গোলমাল ছ়়ড়ানো বন্ধ করতে পেজটি বন্ধ করা প্রয়োজন। সেই সূত্রেই ব্যাঙ্কশাল আদালতের চিফ মেট্রেপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি জানান লালবাজারের সাইবার থানার ওসি। নিম্ন আদালত সেই আবেদন গ্রহণ করে এবং কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে বলে, ফেসবুককে এই ‘পেজ’ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হোক। তা নিয়েই আপত্তি তুলেছেন ফেসবুক-কর্তৃপক্ষ। তার ভিত্তিতেই হাইকোর্ট এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, এই বিষয়ে কেন্দ্রের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের কাছে চিফ মেট্রেপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পাঠানো সুপারিশের উপরে আট সপ্তাহ স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
আরও পড়ুন: জাদুঘরে আপনার অপেক্ষায় বুদ্ধের দাঁত
সরকারি কৌঁসুলিদের একাংশ মনে করছেন, পদ্ধতিগত ত্রুটির প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের একটি গাফিলতির কথা সামনে এসেছে। তা হল, তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে নোডাল অফিসার নিয়োগ না-করা। এই ধরনের সমস্যা হলে নোডাল অফিসারের মাধ্যমেই কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ পাঠানোর কথা। কিন্তু এখন সেই অফিসার না-থাকায় নিম্ন আদালতের মাধ্যমে সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল। ফেসবুক-কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি।
পিপি শাশ্বতগোপালবাবু জানান, ছ’সপ্তাহ পরে আবার এই মামলার শুনানি হবে। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার হলফনামা পেশ করার পরে তা নিয়ে ফেসবুক-কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য থাকলে তাঁরা দু’সপ্তাহের মধ্যে তার উত্তর দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy