রাজ্যের অন্যত্রও বিরোধী ভোটারদের একজোট করার ‘মডেলে’ আপত্তি নেই সিপিএম নেতৃত্বের। শিলিগুড়ি পুরসভাতে যে সূত্র অনুসরণ করে সাফল্য পেয়েছেন অশোক ভট্টাচার্য। সোমবার শিলিগুড়িতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এমনই ইঙ্গিত দিলেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কোনও মডেল নয়। আমরা একটা নীতি এবং আদর্শ সামনে রেখে চলি। শিলিগুড়ি সেটাই প্রয়োগ করে দেখাতে পেরেছে। শিলিগুড়ি লড়াই করে দেখাতে পেরেছে। এটা নিশ্চয়ই একটা দৃষ্টান্ত। রাজ্যের অন্যত্রও দল যদি এমন করে দেখাতে পারে, তবে হবে।’’
পাঁচ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে সদ্য সমাপ্ত ভোটে এক নির্দলের সমর্থন নিয়ে শিলিগুড়ি পুরবোর্ড বামেরা দখল করেছে। ভোটের আগেই দলের চিরাচরিত ‘লাইন’ ভেঙে অশোক ভট্টাচার্যকে শিলিগুড়ির মেয়র পদপ্রার্থী বলে ঘোষণা করেছিল সিপিএম। ভোটের শেষ মুহূর্তে তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ রুখতে বিরোধীরা সমঝোতা করে বুথ ‘পাহারা’তেও উদ্যোগী হয়। ফল প্রকাশের পরে এক নির্দল কাউন্সিলরকে চিঠি দিয়ে তাঁর সমর্থন চান বামেরা। এই ঘটনাও নজিরবিহীন। ভোটের পরেও তৃণমূল বিরোধী দলগুলির সমঝোতা দেখেছে শিলিগুড়ি। গত মাসেই পুরসভার বরো চেয়ারম্যান নির্বাচনের ভোটাভুটিতে দু’টি বরোতে বামেরা কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করে। দশ সদস্যের একটি বরোতে মাত্র দু’জন কাউন্সিলর নিয়েও বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী জেতে। বরোতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও বাম-কংগ্রেসের কাছে ভোটে হারে তৃণমূল। বোরো চেয়ারম্যানের ভোটাভুটির পরেই শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য দাবি করে বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যের যেখানেই সুযোগ পাব, এ ভাবেই তৃণমূলকে আটকাব।’’ কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী সমঝোতা যে সম্ভব নয়, বারেবারেই তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু অশোকবাবুর নেতৃত্বে শিলিগুড়িতে শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধী ভোটারদের যে ভাবে একজোট করা হয়েছিল, সেই পথ সর্বত্রই অনুসরণ করার কথা বলছেন সূর্যবাবুরা।
শিলিগুড়ি পুরসভা জয়ের পরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেও তৃণমূল বিরোধী বিভিন্ন শক্তিকে এক ছাতার তলায় আনার প্রক্রিয়া শুরুর দাবি উঠেছে বামেদের অন্দরেই। আগামী বিধানসভা ভোটে তার প্রতিফলন হবে কি না, জানতে চাওয়া হলে সূর্যকান্তবাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি পেরেছে। রাজ্যের অন্য কিছু জায়গাতেও করে দেখাতে পেরেছে। শিলিগুড়ি পুরনিগম বলে সকলেই উৎসাহিত হয়েছেন। অন্য কোথাও যদি প্রয়োগ করে দেখাতে পারে, তবে করে দেখানো হোক।’’ গত ২১ জুলাই সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের জোটকে ‘হযবরল’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। শিলিগুড়িতে বোরো চেয়ারম্যানের ভোটাভুটির দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব শিলিগুড়িতে থেকে হযবরল জোটের শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। এ দিন গৌতমবাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি পুরসভায় দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেস-সিপিএম জোট করে চালিয়েছে। তবে রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy