দলের হুগলি জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশের মঞ্চ থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের বার্তা দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
এ দিন উত্তরপাড়া স্টেশন লাগোয়া সিএ মাঠে দলীয় মঞ্চ থেকে তিনি বললেন, ‘‘তৃণমূল বা বিজেপি নয়, বাংলার মানুষের কাছে আমরাই একমাত্র বিকল্প। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহযোগী দলগুলিকে নিয়ে বামেরা একাই লড়বে। তবে বামেরা যেখানে দুর্বল সেখানে আমরা সেই প্রার্থীকে সমর্থন করব যাঁরা বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়তে পারবে।”
এ দিন নিজের এক ঘণ্টার বেশি বক্তব্যে তৃণমূল ও বিজেপিকে একসুরে আক্রমণ করেন সূর্যবাবু। রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ তুলে তার জন্য তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলকেই দায়ী করেন। তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ‘‘২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর কত জন যুবক এ রাজ্যে চাকরি পেয়েছেন? অথচ সিঙ্গুরে একটা কারখানা ৯০ শতাংশ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী সেটি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিলেন।’’
তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যতই ডাকুন টাটারা রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার পরে আর কোনও শিল্পপতি এখানে আসবেন না। উনি এখন বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন করছেন। আমি ওটাকে বলি বিশ্বব্যাঙ্গ সম্মেলন।” মুকুল রায়ের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের তো ১৭২ জন সহ-সভাপতি! তার মধ্যে দলের ডান হাত মুকুলকে বিজেপি ভাঙিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছে। এক সময় তো ওই বিজেপি-র নেতারাই কলকাতায় দাঁড়িয়ে ভাগ মুকুল ভাগ করত। বিজেপির আবার সবটাই ঠিক করে আরএসএস। ভারতে একমাত্র আমাদের দলেই নেতারা সাধারণ মানুষের দ্বারা নির্বাচিত হন।’’
হুগলির আলু চাষ রাজ্যে বিখ্যাত। কিন্তু এ বার আলু চাষিরা সেভাবে দাম পাননি বলে ক্ষোভ রয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক দাবি করেন, ‘‘আমরা একটাও কিসান মান্ডি তৈরি করিনি এটা বাস্তব। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এমন কিষান মান্ডি তৈরি করেছেন সেগুলি খাঁ-খাঁ করছে। চাষি আলুর দাম পাচ্ছেন না। শিল্পের পরিস্থিতি বেহাল। একে একে সব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’’ বিজেপিকে আক্রমণ করে তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তাঁরা দু’কোটি মানুষকে চাকরি দিয়েছেন। আসলে জিএসটি হওয়ার পরে দু’কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ শান্তশ্রী চট্টোপাধ্যায়, দলের হুগলি জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরী প্রমুখ। এ বার সিপিএমের ২৩ তম হুগলি জেলা সম্মেলন হবে উত্তরপাড়া গণভবনে। আজ, সোমবার থেকে শুরু হয়ে সেটি চলবে বুধবার পর্যন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy