Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

প্রাথমিকে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, জোর ধাক্কা রাজ্য সরকারের

প্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, জয়দীপ মজুমদার, সুদীপ্ত দাশগুপ্তেরা জানান, ২০০৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। পরীক্ষা নেওয়া হয় ২০০৯ সালে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৩
Share: Save:

প্রাথমিকে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। এ রাজ্যের এক বছরের পিটিটিআই (প্রাইমারি টিচার ট্রেনিং) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কয়েকশো প্রার্থীকে তিন মাসের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকপদে নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সঞ্জয় কল ও বিচারপতি দীপক গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়ে বলেছে, যে-সব প্রার্থী ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন, শুধু তাঁরাই চাকরি পাবেন।

প্রার্থীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, জয়দীপ মজুমদার, সুদীপ্ত দাশগুপ্তেরা জানান, ২০০৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। পরীক্ষা নেওয়া হয় ২০০৯ সালে। তাঁদের মক্কেলরা সেই পরীক্ষায় বসেন। পরীক্ষার সময় প্রার্থীদের এক বছরের পিটিটিআই প্রশিক্ষণ ছিল। কিন্তু প্রশিক্ষণের জন্য ধার্য ২২ নম্বর তাঁদের দেওয়া হয়নি। তাই তাঁদের নাম ছিল না মেধা-তালিকায়। রাজ্য সরকার সেই সময় জানিয়েছিল, এক বছরের প্রশিক্ষণের যে-শংসাপত্র ওই প্রার্থীদের রয়েছে, তার বৈধতা নেই।

ওই প্রার্থীরা ২০১০ সালে হাইকোর্টে মামলা করেন। বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারও জানিয়ে দেন, শংসাপত্র বৈধ নয়। প্রার্থীরা বিচারপতি অমিত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন। ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ দেয়, প্রশিক্ষণের জন্য ধার্য ২২ নম্বর দিতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য ২০১২ সালে সুপ্রিম কোর্টে যায়। কিন্তু ২০১৫ সালে মামলা তুলেও নেয়।

আরও পড়ুন: প্ল্যাটফর্মের পরিবর্তে মাঝের লাইনে ট্রেন, যাত্রী দুর্ভোগ, দাশনগরে বিঘ্ন ট্রেন চলাচল

চাকরি না-পেয়ে ওই প্রার্থীরা মামলা করেন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের আদালতে। তিনি নির্দেশ দেন, প্রার্থীদের ২২ নম্বর দিয়ে নতুন মেধা-তালিকা প্রকাশ করতে হবে। রাজ্য সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ২০১৬ সালে বিচারপতি সৌমিত্র পালের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করে। বিচারপতি বসাকের নির্দেশ খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। ওই বছরেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রার্থীরা। রাজ্য শুনানিতে জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ। শূন্য পদও নেই। তাই মামলাকারীদের চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। তা ছাড়া হাইকোর্টই জানিয়েছে, এক বছরের প্রশিক্ষণের শংসাপত্রের বৈধতা নেই।

আরও পড়ুন: স্কুল-ফি বৃদ্ধি নিয়ে অবরোধ, প্রশ্নের মুখে মমতার কমিটি

বিকাশবাবু জানান, সুপ্রিম কোর্ট এ দিন নির্দেশ দিয়েছে, যাঁরা ২০১০-এর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন, তাঁদের ওই ২২ নম্বর দিয়ে তিন মাসের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষকের পদে নিয়োগ করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশ সম্পর্কে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে দেখি, আদালত কী নির্দেশ দিয়েছে। না-জেনে কোনও মন্তব্য করব না।’’

ওয়েস্ট বেঙ্গল পিটিটিআই-এর স্টুডেন্ট ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই বলেন, ‘‘এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। আমাদের দাবি, যাঁরা সেই সময় মামলা করেননি, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেই বঞ্চিত প্রার্থীদেরও নিয়োগ করতে হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE