(বাঁ দিকে) সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
রাজ্য বিজেপির বর্ধিত কার্যনির্বাহী বৈঠকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যে এখনও চর্চা অব্যাহত বিজেপির ভিতরে ও বাইরে। বিতর্কের মুখেও নিজের মত বহাল রেখেছেন শুভেন্দু। এ বার প্রথম দিনের তুলনায় এই নিয়ে কিছুটা সুর নরম করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
বৈঠকে শুভেন্দু বলেছিলেন, যাঁরা তাঁদের সঙ্গে আছেন, তাঁরাও এর পর থেকে সেই অংশেরই সঙ্গে থাকবেন। এই কথার সূত্রে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’ স্লোগানের উল্টো সুর বিরোধী দলনেতার গলায় উঠে আসায় বিতর্ক বেধেছিল। এমনকি, দলীয় কাঠামোয় সংখ্যালঘু মোর্চা রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। বৈঠকের দিন শুভেন্দুর মতকে ‘ব্যক্তিগত’ বলে খারিজ করে দিয়েছিলেন সুকান্ত। যার প্রেক্ষিতে শুভেন্দু আবার পরে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এবং রাজ্য সভাপতি হিসেবে প্রকাশ্যে বলতে না পারলেও সুকান্তের ‘মনের কথা’ একই! এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার সুকান্ত বলেছেন, “মনের কথা বলার জায়গা সংবাদমাধ্যম নয়। আমার মনের কথা বলার অনেক জায়গা আছে! আমি সেখানে বলব।” পাল্টা শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ বিজেপির পরিষদীয় দলের এক সদস্য বলেন, “শুভেন্দুদা তো সংবাদমাধ্যমে বলতে যাননি! দলীয় বৈঠকে বলেছেন। সেই বৈঠকে সংবাদমাধ্যমকে রাখার সিদ্ধান্ত দলের।”
দলে শুভেন্দুর বক্তব্য নিয়ে যতই ভিন্ন মত থাকুক না কেন, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি সরাসরি তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করেছে। সূত্রের খবর, এই বক্তব্য নিয়ে প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে সঙ্ঘেরও। শুভেন্দুর মন্তব্যের পরে সঙ্ঘের এক নেতার কথায়, “সঙ্ঘ মনে করে ভারতের প্রত্যেক নাগরিক ভারতবাসী। তাঁদের প্রত্যেকের উন্নয়ন সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু যাঁরা ঝাড়গ্রামে প্রণত টুডুকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিলেন, হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের রাস্তা আটকে ভোটারদের ভোট দিতে যেতে দিলেন না, মুখ ঢেকে ছাপ্পা করলেন, ভোট লুট করলেন, তাঁরা কি ভারতীয়?” অন্য এক নেতার কথায়, “উনি (শুভেন্দু) তো আমাদের মনের কথা বলেছেন। কিন্তু উনি যে পদে আছেন, সেই পদে থেকে না বলে অন্য কাউকে দিয়েও বলাতে পারতেন। এটা বলার জন্য অন্য অনেক মঞ্চ রয়েছে।” নির্বাচনের মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন স্বামী প্রদীপ্তানন্দ (কার্তিক) মহারাজ। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে বাধা দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কার্তিক মহারাজ বলেন, “ওঁর (বিরোধী নেতা) জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তব্যে কোনও ভুল নেই। আমি নিজের চোখেই দেখেছি, নির্বাচনে কী পরিমাণ সন্ত্রাস হয়েছে। ধর্মাচরণ করার অপরাধে মার খেতে হয়েছে, বাড়ি ছাড়া হতে হয়েছে। সম্পত্তি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরে এই কথা তো যথোপযুক্ত। প্রধানমন্ত্রী কোনও দলের নন। উনি দেশের প্রত্যেকটা মানুষের। তাই ওঁর জায়গা থেকে উনিও ঠিক।”
সংখ্যালঘু মোর্চার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি চার্লস নন্দী অবশ্য বলেন, “প্রধানমন্ত্রী হায়দরাবাদে সংখ্যালঘু মোর্চার বৈঠক থেকে স্পষ্ট বলেছিলেন, সংখ্যালঘু মহল্লায় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের বার্তা নিয়ে পৌঁছতে হবে ভোট পাওয়ার আশা ছাড়াই। তা ছাড়াও, আমরা হরিহরপাড়া ও জঙ্গিপুরে দু’টি সম্পূর্ণ সংখ্যালঘু পঞ্চায়েতে জিতেছি।’’ পাল্টা শুভেন্দুকে নিজের নেতা দাবি করে বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, “‘এখানে দু’টো দল থাকবে। একটা সনাতনী একটা রোহিঙ্গা! যে যা-ই বলুক, ঘুরে ফিরে এই দিকে ফিরে আসবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy