Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলন

নেতা বাছতে দলের পছন্দে ‘না’ ছাত্রদের

দু’বছর আগে পূর্ব বর্ধমানেও দলীয় নেতৃত্বের ঠিক করে দেওয়া প্যানেল ছাত্র সংগঠনের সম্মেলন-কক্ষে ভোটাভুটিতে পরাস্ত হয়েছিল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সন্দীপন চক্রবর্তী ও সুব্রত সিট
 কলকাতা ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫৩
Share: Save:

পূর্বের উপসর্গ দেখা দিল পশ্চিমেও!

সিপিএম জেলা নেতৃত্বের তৈরি করে দেওয়া প্যানেল এ বার ভোটাভুটিতে খারিজ হয়ে গেল এসএফআইয়ের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্মেলনে। এক বার নয়, পাঁচ-পাঁচ বার ভোট করেও সম্মেলনে পাশ করানো যায়নি নির্ধারিত ‘অফিসিয়াল প্যানেল’কে। শেষ পর্যন্ত জেলা সম্পাদক ও জেলা সভাপতি নির্বাচন না করেই জেলা কমিটি তৈরি করা হয়েছে। শীর্ষ দুই পদের ব্যাপারে ফয়সালা হবে সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে।

দু’বছর আগে পূর্ব বর্ধমানেও দলীয় নেতৃত্বের ঠিক করে দেওয়া প্যানেল ছাত্র সংগঠনের সম্মেলন-কক্ষে ভোটাভুটিতে পরাস্ত হয়েছিল। তবে তফাত বলতে, সে বার দলীয় নেতৃত্বের নির্ধারিত জেলা সম্পাদক ও সভাপতিকেই মেনে নিতে হয়েছিল ছাত্র সংগঠনকে। এ বার ছাত্র-ছাত্রীদের মনোভাব মাথায় রেখে সিপিএম নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত ‘চাপানো’ হয়নি।

দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে দু’দিন আগে শেষ হয়েছে এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলন। সেখানে জেলা সম্পাদক পদ থেকে দুর্গাপুর পূর্বের মৈনাক চট্টোপাধ্যায় এবং সভানেত্রী আসানসোলের অন্তরা ঘোষ বিদায় নিয়েছেন। পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিএম নেতৃত্বের প্রস্তাবিত প্যানেলে নতুন জেলা সম্পাদক হিসেবে কাঁকসার সুরজ পাল ও সভাপতি পদে জামুড়িয়ার চুরুলিয়া গ্রামের রাহুল মণ্ডলের নাম ছিল। কিন্তু ভোটাভুটিতে জেলা সম্পাদক হিসেবে দুর্গাপুর পশ্চিমের বেনাচিতিরই উৎসব ঘোষের নাম উঠে আসে বলে সংগঠন সূত্রে খবর। এমনকি, ‘অফিসিয়াল প্যানেলে’র সুরজ নিজেও ছাত্র-ছাত্রীদের পছন্দ মেনে উৎসবকে সমর্থন করেন বলে সূত্রের দাবি। পরিস্থিতি বুঝে রাহুলকে জেলা কমিটির আহ্বায়ক করে সম্মেলন শেষ করা হয়। সম্মেলনে তখন উপস্থিত এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য ও রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান।

সিপিএম সূত্রের খবর, দলীয় প্যানেলের নেপথ্যে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারেরা। আর উৎসবদের পিছনে আছেন বংশগোপাল চৌধুরী, পার্থ মুখোপাধ্যায়েরা। সিপিএমের অন্দরে দুর্গাপুর পশ্চিমের বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীদের সঙ্গে পূর্বের পঙ্কজবাবুদের বিরোধ অনেক দিনের। ছাত্র সংগঠনের নির্বাচনে তার প্রভাব পড়ে থাকতে বলেও দলের অনেকের ধারণা। সম্মেলনে ৫১ জনের নতুন জেলা কমিটি এবং সম্পাদক ও সভাপতি বাদে বাকি পদাধিকারী অবশ্য ঠিক হয়ে গিয়েছে। আগের জেলা কমিটি থেকে বাদ গিয়েছেন ২২ জন।

দলের যে অংশ সুরজ-রাহুলদের জেলা এসএফআইয়ের শীর্ষ পদে আনতে চাইছেন, তাঁদের যুক্তি— যাঁরা আর ছাত্র নন, তাঁদের রাখা যাবে না। আবার অন্য অংশের পাল্টা যুক্তি, পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরেও দু’বছর কমিটিতে থাকা যায়, যদি সংগঠন চায়। জেলা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত এই রীতি প্রযোজ্য। পশ্চিম বর্ধমানের জেলা ছাত্র সম্মেলনে কী ঘটেছে, সেই গোটা বিষয় জানিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে ছাত্র ফ্রন্টের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুজন চক্রবর্তীকে চিঠি পাঠিয়েছেন জেলার ছাত্র নেতাদের একাংশ।

এই মুহূর্তে দুই বর্ধমানে একটি কলেজেরও ছাত্র সংসদ বামেদের হাতে নেই। তবু কেন এত দ্বন্দ্ব? এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজনের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সংগঠনে গণতন্ত্র আছে। ছাত্র-ছাত্রীদের মতামতের গুরুত্ব আছে। তাঁরা তাঁদের মনোভাব জানিয়েছেন। সমস্যা কাটাতে আলোচনা করে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

SFI CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy