পথে বসে: গোলপার্কের মোড়ে সাউথ সিটি কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। শনিবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ
একই দাবি, শহরের একাংশ অবরুদ্ধ করে একই রকম বেপরোয়া বিক্ষোভ।
হাজিরা না থাকলেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে হেরম্বচন্দ্র কলেজের মতোই শনিবার অবস্থান-বিক্ষোভ করল ওই ক্যাম্পাসের প্রাতঃবিভাগ শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজের পড়ুয়াদের একাংশ। ছিলেন হেরম্বচন্দ্র কলেজের পড়ুয়ারাও। ফলে এ দিন বিকেলেও এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে রইল দক্ষিণ কলকাতার গোলপার্ক মোড়। এর ফলে সাদার্ন অ্যাভিনিউ, গড়িয়াহাট রোড (দক্ষিণ), বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, রাজা এস সি মল্লিক রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তায় যানজট হয়। সন্ধ্যা ছ’টায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁদের আলোচনায় ডাকায় অবরোধ তোলেন পড়ুয়ারা। তবে কলেজের গেটে বিক্ষোভ চলে রাত পর্যন্ত।
‘চয়েজ বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ (সিবিসিএস) চালুর পর বিভিন্ন কলেজে পড়ুয়া বিক্ষোভ চলছে। শিবনাথ শাস্ত্রী কলেজের বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের দাবি, বি কম-এর প্রথম সেমেস্টারে ৪৫০ জন পড়ুয়ার মধ্যে ৩০০ জনেরই হাজিরা ৬০ শতাংশের কম। তাঁরা নিয়মিত ক্লাসে গেলেও শিক্ষকেরা সাদা কাগজে তাঁদের রোল নম্বর লিখে নিতেন। পরে তা হাজিরা খাতায় তোলা হয়নি। এ দিন কলেজ খুলতেই অধ্যক্ষা রুনা বিশ্বাসের ঘর ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ওই পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা হাজির থাকলেও কর্তৃপক্ষ তাঁদের হাজিরা নথিভুক্ত করতে উদাসীন ছিলেন। রুনাদেবী কলেজ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পড়ুয়ারা কলেজ-গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান। অধ্যক্ষার কথায়, ‘‘প্রতি দু’মাস অন্তর পেরেন্ট-টিচার মিটিং করি। তবু হাজিরার এই অবস্থা কেন?’’
বিকেলে দিবা বিভাগের (হেরম্বচন্দ্র কলেজ) অধ্যক্ষ নবনীতা চক্রবর্তী ক্যাম্পাসে এলেই নতুন করে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। পুলিশের ঘেরাটোপে কলেজ থেকে বেরোন নবনীতাদেবী। তিনি গাড়িতে ওঠার সময় পড়ুয়ারা তাঁর গা়ড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। নবনীতাদেবী গাড়িতে বেরিয়ে গেলে বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা বসে পড়েন গোলপার্ক মোড়ে। পুলিশের অনুরোধেও তাঁরা অবরোধ তোলেননি। সন্ধ্যা পৌনে ৬টা নাগাদ ছাত্রদের এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী আলোচনায় ডাকছেন। অবরোধ তুলুন।’’ রবীন্দ্র সরোবর থানার গাড়িতে পুলিশ পড়ুয়াদের এক প্রতিনিধি দলকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর নাকতলার বাড়িতে রওনা হয়। পরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ৬০ শতাংশের নিয়ম মানতেই হবে। হেরম্বচন্দ্র কলেজে ৫৫% হাজিরায় পরীক্ষা দিতে দিলে তা মানা হবে না।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছি। এই সব বিক্ষোভে টিএমসিপি-র ভূমিকা নেই। হাজিরা নেওয়ার পদ্ধতিতে কোথাও কোথাও গন্ডগোল রয়েছে।’’ আর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর নবনীতা বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশে কলেজ যে অবস্থান নিয়েছে, তা থেকে সরে আসার প্রশ্নই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy