ফাইল চিত্র।
অফলাইনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই অধিকাংশ পরীক্ষার্থী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুলে ক্লাস চালু করার দাবিতে সরব হয়েছে। তাদের এবং অনেক অভিভাবকের প্রশ্ন, করোনা সংক্রমণে ভাটার টান শুরু হয়েছে। পরিস্থিতির আর একটু উন্নতি হলে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল খুলতে বাধা কোথায়? পরীক্ষার প্রস্তুতি এবং প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের জন্য কিছু দিনের জন্য স্কুল খোলা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে পরীক্ষার্থীরা। কারণ, মাঝখানে কিছু দিনের জন্য স্কুল চালু হলেও প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস হয়েছে যৎসামান্যই।
ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের বক্তব্য, প্র্যাক্টিক্যালের ব্যাপক পাঠ্যক্রম বাকি আছে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের অধিকাংশেরই টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। অতএব করোনা বিধি মেনে শুধু দশম ও দ্বাদশের পড়ুয়াদের জন্য অন্তত স্কুল খোলা হোক। কারণ, সামনেই তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছে, দুই পরীক্ষাই হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রমে। প্রশ্ন কেমন হবে, তা জানা যেমন জরুরি, দরকার তার অনুশীলনও। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্কুলের কিছু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী জানিয়েছে, তারা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের টেস্ট পেপার এখনও পায়নি। তাই তা দেখে অনুশীলনও হচ্ছে না। টেস্ট পেপার পেলে তারা সেগুলোর সমাধান করে স্কুলে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেখিয়ে নিতে চায়।
উচ্চ মাধ্যমিকের কিছু পরীক্ষার্থী জানিয়েছে, তারা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের বেশির ভাগ বিষয়েরই মডেল প্রশ্ন পেয়েছে। তার উত্তর ঠিক লেখা হচ্ছে কি না, নিশ্চিত হওয়ার জন্যও তা স্কুলের শিক্ষকদের দেখিয়ে নেওয়া জরুরি। তাই দ্রুত স্কুল খুলে দিলে পরীক্ষার্থীদের উপকার হয়।
শিক্ষা দফতর এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি বেসরকারি চ্যানেলে স্মার্ট লাইভ ক্লাসরুম শুরু করেছে। পড়াশোনা চলছে দূরভাষেও। প্রশ্ন উঠছে, এতে সব পড়ুয়া উপকৃত হচ্ছে কি? মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার মনে করেন, গ্রামে যে-সব পড়ুয়ার বাড়িতে কেব্ল টিভি নেই, তারা লাইভ ক্লাসরুমের সুযোগ পাচ্ছে না। অভিযোগ, এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য-বিভাজন তৈরি হচ্ছে। অনিমেষবাবু বলেন, “টেলিভিশনে পড়ানোর আগেকার উদ্যোগ কতটা সফল, সেটা প্রশ্নাতীত নয়। আমরা মনে করি, কয়েক দিনের মধ্যেই ক্লাসে পঠনপাঠন শুরু করা যাবে। শিক্ষা দফতরের উচিত, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ও পঠনপাঠন কী ভাবে হবে, সেই বিষয়ে শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে বসে পরিকল্পনা করা। এতে পড়ুয়ারাই উপকৃত হবে।’’
করোনা বিধি মেনে দ্রুত পঞ্চম থেকে দ্বাদশের স্বাভাবিক পঠনপাঠন শুরু করার দাবিতে মঙ্গলবার বিকাশ ভবনে কমিশনার অব স্কুল এডুকেশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস। সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দনকুমার মাইতি বলেন, “অফলাইনে ক্লাস শুরু করা অত্যন্ত জরুরি। ক্লাস হচ্ছে না বলে উচ্চ মাধ্যমিকের অনেক পড়ুয়া রুটিরুজির জন্য ভিন্ রাজ্যে চলে গিয়েছে। ফিরে এসে পরীক্ষা দিয়ে আবার তারা কাজে চলে যাবে বলে জানিয়েছে। অফলাইন ক্লাস শুরু হলে তারাও আবার স্কুলে ফিরে এসে পড়াশোনা করতে পারে।”
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য-সুরক্ষার বিষয়টি ভুললে চলবে না। ৩১ জানুয়ারির পরে স্কুল খুললে হয়তো শুধু দশম ও দ্বাদশের পড়ুয়াদের জন্যই খুলবে। তার আগে প্রধানত দু’টি বিষয় দেখা হবে। প্রথমত, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের টিকার হার কেমন এবং কত পড়ুয়ার টিকা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, রাজ্য করোনার গ্রাফ কেমন। করোনার রেখচিত্র নিম্নমুখী হলে, সেটা ঠিক কতটা নামল, তা দেখা হবে। প্রধানত এই দু’টি বিষয় পর্যালোচনা করে তবেই স্কুল খোলার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy