শ্রীনগরে পাইপে জমে যাওয়া বরফ গলানোর চেষ্টা। ছবি: পিটিআই।
ঠান্ডায় জমে যাওয়া ভূস্বর্গে হৃদয়ের উষ্ণতা অনুভব করলেন পর্যটকেরা। সোনমার্গ থেকে শ্রীনগরের দিকে ফেরার পথে পঞ্জাবের পর্যটকদের একটি দল শুক্রবার রাতে গান্ডেরবাল জেলার গুন্ডে রাস্তায় আটকে পড়েছিল। ধারেকাছে কোনও হোটেল তো ছিলই না, ছিল না স্থানীয় বাড়িগুলিতে এত জনকে রাখার মতো পরিকাঠামোও। এলাকার বাসিন্দারা জামিয়া মসজিদের দরজা খুলে দেন। মসজিদে হামাম থাকায় আগুনের ওমে শীতের কামড় থেকে রক্ষা পেয়েছেন ওই পর্যটকেরা। মসজিদে আশ্রিত পর্যটকদের ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে ভূস্বর্গে আতিথেয়তার কথা বার বার করে বলতে শোনা গিয়েছে তাঁদের। হুরিয়ত কনফারেন্স চেয়ারম্যান মিরওয়াইজ় উমর ফারুক, পিডিপি নেত্রী ইলতিজা মুফতি-সহ অনেকেই এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। দুর্গত পর্যটকদের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয়দের এগিয়ে আসার আরও বেশ কিছু ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে সামনে আসছে।
তুষারে বিপর্যস্ত জম্মু-কাশ্মীরের স্বাভাবিক জনজীবন। জম্মু-শ্রীনগর হাইওয়ে বন্ধ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক জায়গা। তারই মধ্যে দেখা মিলছে সাধ মিটিয়ে তুষারপাত উপভোগ করা পর্যটকদেরও। দেখা যাচ্ছে, থমকে থাকা গাড়িতে অপেক্ষা করতে করতে হাঁপিয়ে উঠে শেষে বেরিয়ে এসে শুরু হয়েছে ক্রিকেট খেলা। দক্ষিণ কাশ্মীরের উপরের দিকের কিছু এলাকায় দু’ফুটেরও বেশি তুষারের স্তর জমেছে। তবে উপত্যকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শুক্রবারের থেকে আজ কয়েক ডিগ্রি বেড়েছে।
শুক্রবার রাত থেকেই শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ের বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর মানুষ আটকে তুষারে। হাড়কাঁপানো শীতের রাত অনেকের কেটেছে গাড়ির ভিতরে। সব ঋতুতে কাশ্মীরের সঙ্গে দেশের বাকি এলাকাকে জুড়তে পারা একমাত্র জাতীয় সড়কটিতে যাতায়াত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। জম্মুর রামবন জেলার বানিহাল শহরের সঙ্গে দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগের কাজিগুন্দের মধ্যে প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার দীর্ঘ নবযুগ টানেলে আটকে প্রচুর ট্রাক ও গাড়ি। আটকে থাকা লোকজন সময় কাটাতে সুড়ঙ্গের ভিতরে ক্রিকেট খেলছেন। যেখানে যাতায়াত চালু রয়েছে, সেখানেও রাস্তা পিছল থাকায় সমস্যা হচ্ছে। বানিহাল-বারামুল্লা রেল লাইনে তুষার জমে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রীনগর বিমানবন্দরে বিমান ওঠা-নামা বন্ধ। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবাও ব্যাহত হয়েছে। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয় আজকের যাবতীয় পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
বাড়ির ফিরতি পথে কাজিগুন্দে আটকে থাকা হরিয়ানায় এক পর্যটক অবশ্য বলছিলেন, “ঠান্ডায় গাড়ির ইঞ্জিন চালু হতে চাইছে না। ঠেলতে হচ্ছে। তবে তাতে সমস্যা নেই। আমরা খুবই উপভোগ করছি।” পুলিশ ও প্রশাসন আটকে থাকা পর্যটকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। উষ্ণ পানীয় ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেওয়া হচ্ছে তাঁদের। প্রশাসনের অনুরোধে সেনার চিনার কোর গুলমার্গ জেলার এক জায়গায় আটকে থাকা ৬৮ জনকে উদ্ধার করেছে। তাঁদের মধ্যে আটটি শিশু ও ৩০ জন মহিলা রয়েছেন। শতাধিক পর্যটকের জন্য গরম খাবার, আশ্রয় এবং চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছে তারা। কুলগামে তুষারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া একটি গ্রামে সেনা গিয়ে এক অন্তঃসত্ত্বার আপৎকালীন চিকিৎসা করে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। আজ নিজের বিধানসভা কেন্দ্র গান্ডেরবালে পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy