Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Abhishek Banerjee on Sheikh Shahjahan

আদালত হাত-পা বেঁধে না দিলে শেখ শাহজাহানকে ধরে আনার ক্ষমতা রাখে রাজ্যের পুলিশ: অভিষেক

শাহজাহানের গ্রেফতারিতে পুলিশি অনীহার অভিযোগ তুলে বিরোধীরা যে রাজনৈতিক আখ্যান তৈরির চেষ্টা করছে, অভিষেক তার উল্টোদিকের কথাটা বললেন। রাজনৈতিক বার্তাও দিতে চাইলেন।

শেখ শাহজাহান এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।

শেখ শাহজাহান এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:২৯
Share: Save:

সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারির ক্ষেত্রে অন্তরায় আদালত। কোর্টই পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে। না হলে রাজ্য সরকারের পুলিশই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে। আনন্দবাজার অনলাইনকে বুধবার এমনটাই বলেছেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। ইডি তাঁকে ধরতে পারেনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গিয়ে রাজ্য পুলিশের ওই এফআইআরের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেয়েছে। ফলে পুলিশের হাত-পা বেঁধে দিয়েছে আদালতই।’’

শাহজাহানকে গ্রেফতারের বিষয়ে অভিষেক সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের উল্লেখও করেন। তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ বলেন, ‘‘সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনকে কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করে এনেছিল এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধেও দল ব্যবস্থা নিয়েছে। তা হলে শাহজাহানকে গ্রেফতার না করার কী আছে!’’ অভিষেক আরও বলেন, ‘‘সন্দেশখালির দুই তৃণমূল নেতা শিবু হাজরা এবং উত্তম সর্দারকেও গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশ। তা হলে শাহজাহানকে পারবে না কেন!’’

রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার গত শনিবার দাবি করেছিলেন, আদালতের কারণেই পুলিশ শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারছে না। কারণ, ইডির সওয়ালের ভিত্তিতে আদালত রাজ্য পুলিশের এফআইআরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।

অনেকের মতে, শাহজাহানের গ্রেফতারিতে ‘পুলিশি অনীহা’র অভিযোগ তুলে বিরোধীরা যে রাজনৈতিক আখ্যান তৈরির চেষ্টা করছে, অভিষেক তার উল্টো দিকের কথাটা বললেন। রাজীব রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তা। তিনি প্রশাসনের কথা বলেছিলেন। কিন্তু অভিষেক শাসকদলের শীর্ষ সারির নেতা। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, এই মন্তব্যের মাধ্যমে অভিষেক বার্তা দিতে চাইলেন, শাহজাহানের প্রতি তৃণমূলের কোনও ‘দরদ’ নেই। তাঁকে দল ‘আড়াল’ও করতে চাইছে না। তাঁকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা রা‌খে মমতার পুলিশই।

গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়েছিল ইডি। সেই সময়েই স্থানীয়দের হাতে মার খেয়ে পালিয়ে আসতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার আধিকারিকদের। সেই থেকে শাহজাহান ‘বেপাত্তা’। তৃণমূলের বক্তব্য, এক দিকে ইডি শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে পারছে না। আবার রাজ্যের এফআইআরের উপরেও স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে। তা হলে তিনি গ্রেফতার হবেন কী ভাবে!

সন্দেশখালি নিয়ে অভিষেক গত দেড় সপ্তাহ ধরেই সক্রিয়। রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামীদের ডেকে বৈঠক করা, দলীয় নেতাদের সেখানে পাঠানোর কাজ করেছিলেন তিনিই। অনেকের বক্তব্য, লিজ়ের জমির টাকা তৃণমূল ফিরিয়ে দেওয়ার যে ঘোষণা করেছে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে তা দিচ্ছে, তার নেপথ্যেও অভিষেকের পরিকল্পনা রয়েছে।

অভিষেক বরাবরই বলে এসেছেন, দুর্নীতির ব্যাপারে দল ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে চলছে। জ্যোতিপ্রিয়কে কেন মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হচ্ছে না, সপ্তাহ দেড়েক আগে আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই প্রশ্নে বলেছিলেন, ‘‘আজ আছে মানে, কালও থাকবেন, এমন তো নয়। দেখুন না কী হয়।’’ এর পর গত সপ্তাহেই জ্যোতিপ্রিয়ের দফতর অন্যদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয়। শাহজাহানের প্রশ্নেও অভিষেক স্পষ্ট করতে চাইলেন, দল ও প্রশাসন এই সব ব্যাপারে কড়া অবস্থান নিয়ে চলছে এবং চলবে। তবে এই ক্ষেত্রে মূল জট পেকে রয়েছে আদালতে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy