বিজেপি দফতরের সামনে ধর্নায় শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য বিজেপি দফতরের সামনে মঙ্গলবার বিকেলে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল কিছুটা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই। বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছিলেন শিখ সম্প্রদায়ের অনেকে। কিন্তু বুধবার সেই বিক্ষোভ সমাবেশ অনেকটাই সংগঠিত। মঙ্গলবার থেকে টানা চলছে বিক্ষোভ। প্রথম দিকে কেনা চা, খাবার দিয়েই চালাচ্ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু বুধবার সকাল থেকেই রান্নাবান্নার ব্যবস্থা হয়ে যায়। মঞ্চ বেঁধে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কুশপুতুল রেখে শুরু হয় বিক্ষোভ প্রদর্শন। বিকেলের দিকে সেই সমাবেশের আয়োজন যেমনটা হয়েছে তা দেখে অনুমান করা যেতে পারে বিক্ষোভ দীর্ঘতর হবে। বিক্ষোভকারীরা সেটা বলছেনও। ভবানীপুর থেকে আসা সুখিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘আমরা এখানে বসে থাকব, যতক্ষণ না শুভেন্দু অধিকারীকে বিজেপি বহিষ্কার করে। বিজেপির শীর্ষ নেতাদের ক্ষমাও চাইতে হবে।’’
উত্তর কলকাতার ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনের বিজেপি দফতর থেকে হেঁটেই যাওয়া যায় মহাত্মা গান্ধী রোডের গুরুদ্বারে। গত বছর ২৬ ডিসেম্বর সেখানে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। রাজ্য বিজেপির পক্ষে সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ছাড়াও ছিলেন শুভেন্দু। গুরুদ্বার থেকে বিজেপি দফতরের দূরত্ব একই থাকলেও সে দিনের ছবির সঙ্গে বুধবারের পরিস্থিতির দূরত্ব অনেক। মঙ্গলবার থেকে মুরলীধর সেন লেনে শাহ, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্লোগান উঠছে। চারিদিকে পোস্টার— ‘আমরা গর্বিত শিখ, আমরা খলিস্তানি নই।’
বিজেপি দফতরে ফটকের উল্টো দিকে রাস্তার উপরেই লাগানো হয়েছে বিশাল এলইডি স্ক্রিন। তাতে এক ভাবে চলছে পুলিশ আধিকারিক যশপ্রীত সিংহের সঙ্গে মঙ্গলবার ধামাখালিতে হওয়া বিজেপি নেতাদের বাগ্যুদ্ধের ভিডিয়ো। তার পাশেই মঞ্চ। সেখানে প্রথমে শুভেন্দুর কুশপুতুল দাঁড় করানো ছিল। সন্ধ্যার দিকে সেটিকে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
হিন্দু হোস্টেলের দিকে যাওয়ার পথে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তির কাছেই তৈরি হয়েছে অস্থায়ী পাকশালা। বুধবার দুপুরে ভাত, রুটি, ডাল, সব্জি হয়েছে। বিকেলে পুরি-সব্জিও। ঘণ্টায় ঘণ্টায় চা। মঙ্গলবার রাত থেকেই স্থানীয় গুরুদ্বার থেকে এসেছে পানীয় জলের গাড়ি। কলকাতা পুলিশও ক্যাম্প বানিয়েছে। রয়েছে বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা।
তবে এখনও পর্যন্ত বিজেপির তরফে এই বিক্ষোভকে আমল দেওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। এমনিতেই বিশেষ কিছু না ঘটলে এই দফতরে পদ্মশিবিরের নেতারা আসেন না। এখন দল পরিচালনা হয় সল্টলেকের সেক্টার ফাইভের দফতর থেকেই। সদ্য রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত শমীক ভট্টাচার্য মঙ্গলবার গিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিতে মালা দিতে। দলীয় দফতরেও ছিল সাংবাদিক বৈঠক ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। কিন্তু বুধবার দিনভর বিজেপির কোনও নেতাকেই দফতরের ধারেকাছে দেখা যায়নি। জনা কয়েক নিরাপত্তরক্ষীর দায়িত্বেই রয়েছে শুনশান বিজেপি দফতর। আর তার সামনে শিখ বিক্ষোভ ক্রমেই জমাট বাঁধছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy