প্রতীকী ছবি।
রাজ্য প্রশাসনের উপর ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নির্দেশে এ বার ভোট ঘোষণার আগে থেকেই বেআইনি মদের ‘করিডর’ বন্ধ করতে ত্রিমুখী কৌশল নিল রাজ্য সরকার।
একদিকে বিশেষ ফ্লাইং স্কোয়াড। তার সঙ্গে ৯টি জেলার সীমানায় বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। চেকপোস্টে ঠিকঠাক নজরদারি চলছে কিনা কলকাতায় বসে সেই ছবি দেখবেন আবগারি কর্তারা।
সর্বোপরি অ্যালকোহল বহনকারী গাড়িতে জিপিএস এবং ই-লক বাধ্যতামূলক করাই এখন আবগারি দফতরের ত্রিমুখী কৌশলের মূল অঙ্গ। প্রতিটি অ্যালকোহলবাহী গাড়ি কোথায় যাচ্ছে তা জিপিএস মারফত দেখা যাবে কলকাতা বসে। দুই, যেখান থেকে গাড়ি রওনা হচ্ছে, সেখানে অ্যালকোহল কন্টেনারে ই-লক করে দেওয়া হবে। তার পাসওয়ার্ড এমন ভাবে তৈরি থাকবে, যাতে একমাত্র গন্তব্যে পৌঁছনোর পরেই সেটি খোলা যাবে।
সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কমিশন-কর্তাদের একাধিক বৈঠকে আলাদা ভাবে গুরুত্ব পেয়েছে বেআইনি মদ আটকানোর বিষয়টি। বেআইনি মদ রোখার প্রশ্নে কোনও রকম ঢিলেমি রাখতে চাইছে না প্রশাসন। এক কর্তার কথায়, ‘‘২০১৯ সালে গত লোকসভা ভোটে কমিশনের বিশেষ নজরদারিতে ১০০ কোটিরও বেশি টাকার অবৈধ মদ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ভোটের তুলনায় এ বার আরও কড়া অবস্থানে রয়েছে কমিশন। স্বাভাবিক ভাবেই খুঁত থাকলে চলবে না।’’
রাজ্যের ১৪টি জেলার সঙ্গে ঝাড়খন্ড, ওড়িশা, বিহারের সীমানা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে নেপাল ভুটান এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তও। সেই সব জেলার মূল যে এলাকা দিয়ে অ্যালকোহল বহনকারী গাড়ি রাজ্যে প্রবেশ করে, সেই জায়গাগুলি চিহ্নিত করে নাকা-কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। ঝাড়খন্ডের সঙ্গে লম্বা সীমানা থাকায় পুরুলিয়া জেলায় তৈরি হচ্ছে সর্বাধিক ১২টি চেকপোস্ট।
জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে আবগারি দফতরও এই চেকপোস্টগুলিতে নজরদারি চালাবে। পৃথক ভাবে ফ্লাইং স্কোয়াড তৈরি করেছে আবগারি দফতর। তথ্য জানলেই বেআইনি মদের খোঁজে হানা দেবে সেই বাহিনী। অতীতের কোনও ভোটে পৃথক ভাবে এমন ফ্লাইং স্কোয়াড আবগারি দফতরে তৈরি হয়েছিল কি না, তা মনে করতে পারছেন না প্রবীণ আধিকারিকদের অনেকেই। নজরদারিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে চেকপোস্টগুলিতে ‘ওয়েবকাস্টিং’-এর সুবিধা রাখা হচ্ছে। এই সব কাজ বিঘ্নহীন রাখতে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক কর্তা বলেন, ‘‘গতিবিধি-তথ্যের উপর ভিত্তি করেই ৫০টি জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে নজরদারি এমন হতে হবে, যাতে অবৈধ বা বেআইনি মদ কোনও ভাবে হাতছাড়া না হয়।’’
সূত্রের দাবি, এরই সঙ্গে যে গাড়িগুলিতে অ্যালকোহল বহন করা হয়, সেই গাড়িগুলিতে জিপিএস এবং ই-লক প্রযুক্তি বাধ্যতামূলক ভাবে লাগাতেই হবে। যিনি বা যাঁরা সংশ্লিষ্ট গাড়ির দায়িত্বে থাকবেন, নিজস্ব খরচেই এই ব্যবস্থা করতে হবে তাঁদেরই। জিপিএস এবং ই-লকে নথিবদ্ধ তথ্য জানাতে হবে আবগারি দফতরকে। যে গাড়িতে এই প্রযুক্তি লাগানো থাকবে না, সেই গাড়িগুলিকে ধরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) সঙ্গে বৈঠক করবেন নির্বাচন কমিশনের শীর্ষকর্তারা। তার পরেই ভোট ঘোষণা হবে। এ রাজ্যের সিইও আরিজ আফতাব দিল্লি রওনা হওয়ার আগে প্রস্তুতির সব তথ্য হাতে রাখতে চাইছেন। ফলে তাঁর সফরের আগে এই সব কাজ শেষ করে ফেলার চাপ রয়েছে প্রশাসনের উপর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy