মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ডি লিট তুলে দিচ্ছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নিজস্ব চিত্র।
আরও একবার সাম্মানিক ডি লিট পেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সেন্ট জ়েভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে ডি লিট দেওয়া হয়। গত নভেম্বরেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁকে এই সম্মান দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবে সম্মত হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আয়োজিত পুরস্কারপ্রদান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সোমবার ডি লিট তুলে দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
এর আগে সরস্বতী পুজোর দিন রাজভবনে রাজ্যপালের হাতেখড়ি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর ডি লিট প্রাপ্তির দিনে উপস্থিত রইলেন রাজ্যপালও। রাজভবন সূত্রে অবশ্য আগেই রাজ্যপালের এই কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছিল। তবে সম্প্রতি রাজ্য-রাজভবন সৌহার্দ্যের আবহে রাজ্যপালের এই উপস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কলকাতায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য জন ফেলিক্স রাজ।
সেন্ট জ়েভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, উচ্চশিক্ষায় বিশেষ অবদানের কারণেই মুখ্যমন্ত্রীকে ডি লিট দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সোমবার তার চতুর্থ সমাবর্তন উৎসবে দীক্ষান্ত ভাষণও দেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তৃতা করতে উঠে মমতা জানান, এই সম্মানপ্রাপ্তিতে তিনি কৃতজ্ঞ। নিজের ডি লিট সম্মান জনগণকেই উৎসর্গ করেন তিনি। তিনি বলেন, “আমি আমার এই পুরস্কার সাধারণ মানুষকে উৎসর্গ করলাম। আজ আমি যা, সব তাদের জন্যই। পৃথিবীর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় কলকাতা, জ়েভিয়ার্স বা যাদবপুর কোনও অংশেই কম নয়। তাদের থেকে অনেক ভাল।” তাঁর কথায় উঠে আসে দেশে শান্তি, গণতন্ত্র এবং সম্মান রক্ষার কথাও। তাঁর আমলে কত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে, তার খতিয়ান দিয়ে মমতা জানান, সেন্ট জ়েভিয়ার্সের সার্বিক উন্নতির জন্য সর্বদা সহায়তা করতে প্রস্তুত তাঁর সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মাদার টেরিজার নামে সাম্মানিক চেয়ার তৈরির কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ডি লিট সম্মানে ভূষিত করার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক, পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীদের ধন্যবাদ জানান।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন রাজ্যপালও। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই ডি লিট সম্মান অর্জন করেছেন।” রাজ্যপাল জানান, যে সকল রাজনীতিবিদ রাজনীতির সঙ্গে সাহিত্যকীর্তিতেও অনন্য স্বাক্ষর রেখেছেন, তাঁর মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি অটলবিহারী বাজপেয়ী, সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন, উইনস্টন চার্চিল, এপিজে আব্দুল কালাম-সহ অন্য রাজনীতিবিদের নাম উল্লেখ করেন তিনি।
সম্ভ্রান্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবেই রাজ্যে এবং সারা দেশে পরিচিতি রয়েছে সেন্ট জ়েভিয়ার্সের। এর আগে রাজ্যের আরও এক প্রাচীন এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে ডি লিট দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রীকে ডি লিট দেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর হাতে ডি লিট তুলে দেন তৎকালীন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। মুখ্যমন্ত্রীকে ডি লিট দেওয়া নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালের সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই সময় বিতর্ক হয়েছিল। কেন মুখ্যমন্ত্রীকে ডি লিট দেওয়া হবে, কী তার উদ্দেশ্য, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। এমনকি, হাই কোর্টে তা নিয়ে মামলাও হয়েছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি লিট ছাড়াও আরও এক কলেজের তরফে সাম্মানিক ডক্টরেট পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভুবনেশ্বরের ‘কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি’ মমতাকে সাম্মানিক ডক্টরেট দেয়। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে দু’বার ডিলিট পেয়ে নজির তৈরি করলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy