Twenty hours after major’s martyrdom in Jammu & Kashmir, daughter set to join army dgtl
Indian Army
জঙ্গিদের গুলিতে নিহত বাবার মতোই সেনায় যোগ দিতে চান মেয়ে, ফেরালেন ‘সুখের চাকরির’ প্রস্তাব
আগামী এপ্রিল মাসেই চেন্নাইয়ে সেনাবাহিনীর অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে যোগ দিতে চলেছেন ইনায়েত। সেখানেই আপাতত কয়েক মাস প্রশিক্ষণ চলবে তাঁর।
নিজস্ব প্রতিবেদন
চন্ডীগড়শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
বাবা ছিলেন ভারতীয় সেনার মেজর। সন্ত্রাসবাদী হামলায় মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। কিন্তু প্রয়াত বাবাকেই ‘রোল মডেল’ মনে করা কন্যা, সুখের চাকরির প্রস্তাব উপেক্ষা করে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিলেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০২২০
হরিয়ানার পাঁচকুলার বাসিন্দা ইনায়েত ভাটসের বয়স এখন ২৩। তাঁর বয়স যখন মাত্র আড়াই বছর, তখন তিনি তাঁর বাবাকে হারান।
০৩২০
ইনায়েতের বাবা নবনীত ভাটস ২০০৩ সালে কাশ্মীরে এক জঙ্গিদমন অভিযানে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন। সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল নবনীতের শরীর।
০৪২০
কাশ্মীরের একটি আবাসনে ডেরা বেঁধেছিল জঙ্গিরা। গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়ে আবাসনটিকে জঙ্গিমুক্ত করার পরিকল্পনা নেয় সেনা। সেনার বিশেষ অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নবনীত।
০৫২০
আবাসনটিকে জঙ্গিমুক্ত করা গেলেও ওই অভিযানে গিয়েই প্রাণ হারান নবনীত। ছোট বয়সেই বাবাকে হারানোয় তাঁর কোনও স্মৃতি মনে করতে পারেন না ইনায়েত।
০৬২০
বাবার কথা মনে করতে না পারলেও ২৩ বছরের তরুণী ছোট থেকেই শুনে এসেছেন তাঁর বাবার বীরত্বের কথা, সাহসের কথা। নবনীতের বীরত্ব এবং সাহসকে স্বীকৃতি দিতেই সরকারের তরফে তাঁকে মরণোত্তর সম্মান জানানো হয়।
০৭২০
ইনায়েত দিল্লির লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হন। এখন তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হিন্দু কলেজ থেকে ওই বিষয়েই স্নাতকোত্তর স্তরের পাঠ নিচ্ছেন।
০৮২০
ছোট থেকেই মেধাবী পড়ুয়া হিসাবে পরিচিতি ছিল ইনায়েতের। প্রয়াত জেনারেলের কন্যাকে লোভনীয় চাকরির প্রস্তাব দিয়ে রেখেছিল হরিয়ানা সরকার।
০৯২০
হরিয়ানা সরকার জানিয়েছিল, স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা শেষ করেই রাজ্যের সচিব পর্যায়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিক হিসাবে কাজে যোগ দিতে পারেন ইনায়েত। কিন্তু সেই চাকরি করতে সম্মত হননি ইনায়েত।
১০২০
ছোট থেকেই ইনায়েত সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। চাইতেন বাবার মতো হতে। তাঁর সেই স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হতে চলেছে।
১১২০
আগামী এপ্রিল মাসেই চেন্নাইয়ে সেনাবাহিনীর অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে যোগ দিতে চলেছেন ইনায়েত। সেখানেই আপাতত কয়েক মাস প্রশিক্ষণ চলবে তাঁর। তার পর বাবার মতোই সাহসে ভর করে আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় ঝাঁপিয়ে পড়তে চান ইনায়েত।
১২২০
ইনায়েতের এই ‘কঠোর’ সিদ্ধান্তে অবশ্য প্রথম মত ছিল না তাঁর মায়ের। তিনি চেয়েছিলেন, মেয়ে তাঁর কাছে থেকেই হরিয়ানা সরকারের দেওয়া চাকরি করুন।
১৩২০
প্রয়াত মেজরের স্ত্রী যখন তাঁর স্বামীকে হারান, তখন তাঁর বয়ম মাত্র ২৭। বিয়ের চার বছরের মধ্যেই স্বামীকে হারান ইনায়েতের মা শিবানী।
১৪২০
স্বামীকে চিরতরে হারানোর পর অনেক কষ্ট করে একমাত্র সন্তান ইনায়েতকে বড় করে তোলেন শিবানী। তবে কঠিন দিনগুলোয় তাঁদের পাশে ছিল ভারতীয় সেনা।
১৫২০
শিবানী এখন সেনা পরিচালিত একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তাঁদের জীবনে সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা বার বার স্মরণ করেন তিনি।
১৬২০
ইনায়েত শিবানীকে রাজ্যেই থেকে যাওয়ার কথা বললে, একমাত্র মেয়ে মায়ের উদ্দেশে প্রশ্ন করেছিল, “আমি ছেলে হলে তুমি কি এটা বলতে পারতে, মা?” মেয়ের এই প্রশ্নের কোনও জবাব ছিল না মায়ের কাছে।
১৭২০
শিবানী জানালেন, মেয়ে সেনায় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর অজানা আতঙ্ক তাঁকে গ্রাস করেছিল। কিন্তু পরে তিনি বুঝেছিলেন, প্রয়াত স্বামীর মতোই সাহসী হয়েছে তাঁর মেয়েও।
১৮২০
তাই মেয়ের ইচ্ছায় বাধা দিতে চাননি মা। বরং ইনায়েতের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, “এক জন শহিদের মেয়ে যে এমন সাহসী হবে এবং সেনায় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই তো স্বাভাবিক।”
১৯২০
ইনায়েতদের পরিবারে অবশ্য সেনায় যোগদান নতুন কোনও ঘটনা নয়। ইনায়েতের ঠাকুরদা এবং তাঁর বাবাও সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। ইনায়েতের দাদু সেনাবাহিনীর কর্নেল ছিলেন।
২০২০
আপাতত স্বপ্নের ডানায় ভর করেই জীবনের নয়া যুদ্ধক্ষেত্রে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইনায়েত। মেয়ের সিদ্ধান্তে গর্বিত মা জানাচ্ছেন, সুখের চাকরি ছেড়ে মেয়ে দেশসেবাকেই জীবনের ব্রত হিসাবে গ্রহণ করায় তিনি খুব খুশি।