পুর এলাকার প্রায় সব রাস্তার দু’দিকই ঢাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পোস্টারে। এমন অভিযোগ দক্ষিণ দমদম পুরসভা এলাকায় নতুন নয়। বাসিন্দাদের কথায়, দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চলায় কার্যত দৃশ্যদূষণে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। আবার অভিযোগ, যেখানে এত হোর্ডিং রয়েছে, সেখানে তা থেকে আয়ের পরিমাণও তেমন হওয়া উচিত। যদিও বাস্তবে হোর্ডিং থেকে সেই আয় হয়নি বলেই জানা গিয়েছে পুরসভা সূত্রে। কারণ, অনুমোদিত হোর্ডিংয়ের পাশাপাশি অনুমোদনহীন হোর্ডিংয়ের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। তাই ওই খাত থেকে আয় পর্যাপ্ত নয় বলেই দাবি পুর কর্তাদের একাংশের। এ বার ওই খাতে আয় বাড়াতে জোর দিতে চাইছে পুরসভা।
বাসিন্দাদের কথায়, পুরসভার নাকের ডগায় দিনের পর দিন অনুমোদনহীন হোর্ডিং লাগানো রয়েছে কী ভাবে? সেই সব হোর্ডিং কেন সরানো হচ্ছে না? যদি ওই খাত থেকে আয় বৃদ্ধি করতেই হয়, তবে অবিলম্বে হোর্ডিং সংক্রান্ত নির্দিষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে। বাসিন্দাদের প্রস্তাব, যত্রতত্র যেমন খুশি আকারের হোর্ডিং না বসিয়ে নির্দিষ্ট কিছু স্থানে নির্দিষ্ট মাপের হোর্ডিং বসালে দৃশ্যদূষণ কিছুটা কম হতে পারে।
সমস্যার কথা স্বীকার করে দক্ষিণ দমদম পুরসভার এক চেয়ারম্যান পারিষদ পার্থ বর্মা জানান, হোর্ডিং ব্যবস্থাকে একটি শৃঙ্খলায় এনে আয় বৃদ্ধি চেষ্টা চালাচ্ছে পুরসভা। গত বছর থেকে এই খাতে আয় বেড়েছে। আগামী দিনে আয় আরও বৃদ্ধির জন্য বাজেটে প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, অনুমোদিত হোর্ডিংগুলিতে থাকবে কিউআর কোড। যে সব হোর্ডিংয়ে কিউআর কোড থাকবে না, সেগুলিকে অনুমোদনহীন হিসাবে সহজেই চিহ্নিত করা যাবে। এমনটাই পরিকল্পনা দক্ষিণ দমদম পুরসভার। অনুমোদনহীন হোর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুমোদন নিতে বলা হবে। নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষার পরেও যদি সেই সব হোর্ডিংয়ের অনুমোদন না নেওয়া হয়, তা হলে পুরসভা সেগুলি সরিয়ে দেবে। এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষ।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছরে হোর্ডিং থেকে থেকে আয় হয়েছে ৫৪ লক্ষ টাকা। চলতি বছরে পুরসভার বাজেটে ওই খাত থেকে প্রস্তাবিত আয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। ওই পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি রাজু সেনশর্মা জানান, ওই খাত থেকে আয় বৃদ্ধির প্রস্তাব সব পুরপ্রতিনিধিই দিয়েছেন। তাই এ বিষয়ে পুরসভা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)